পূর্ব বর্ধমানে জাঁকজমকপূর্ণ সরস্বতী পুজোর আয়োজন
Sangbad Prabhati, 2 February 2025
অতনু হাজরা, পূর্ব বর্ধমান : সরস্বতী বন্দনায় মাতলো স্কুল ও কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা। সরস্বতী পুজো মানেই ছাত্র ছাত্রীদের কাছে এক অন্য আবেগ। এই দিন থেকেই বসন্ত উৎসবের শুরু। আবার এই পুজো বাংলার এক অন্যতম সম্প্রীতির পুজো। হিন্দু - মুসলমান সকল ছাত্র ছাত্রীরা আনন্দ ও উদ্দীপনার সাথে এই পুজোয় অংশ নেয়। মন্ডপ সজ্জা, প্রতিমা আনা, পুজোর জোগাড়, সকলে একসঙ্গে অঞ্জলি দেওয়া সেই মন্ত্র যা সকলের মনের অন্তরে গাঁথা "সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল লোচনে... " । এ এক অন্য অনুভূতি। পূর্ব বর্ধমানে জাঁকজমকপূর্ণ সরস্বতী পুজোর আয়োজন হয়েছে অম্বিকা কালনায়। থিমের বাহারে একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে। আলোর রোশনাই। স্বর্ণদ্বীপ ক্লাব এবার প্রতিমায় চমক দিয়ে তৈরি করেছে ডায়মন্ড স্টোনের প্রতিমা ও আলোর রোশনাই। মহাপ্রভু পাড়ার গৌরাঙ্গ সমিতি এবারের মণ্ডপে থিম প্রজাপতির দেশে। সূর্য সমিতির এবারের থিম আকাশ আলোয় ভরা। চারাবাগান সবুজ সমিতির এবারের থিম চীনের বৌদ্ধ মন্দির। বারুইপাড়ার মিতালী সংঘের থিম ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি’। আমলাপুকুর ইয়ং বয়েজ ক্লাবের পুজো এবার ৩৫ বর্ষে। থিম ‘এক টুকরো রাজস্থান’। ভাদুরিপাড়ার জুবিলি স্টার ক্লাবের এবারের আকষর্ণ রামেশ্বরম মন্দির। জিউধারা বারোয়ারি সমিতির থিম ‘উত্থান’। এছাড়াও কালনা পুরাতন বাসস্ট্যান্ড হিমঘরের মাঠে ত্রিধারার থিম ‘পুরীর জগন্নাথ মন্দির’। শহর বর্ধমান সংলগ্ন রায়ান গ্রামেও আকর্ষণীয় পুজোর আয়োজন হয়েছে।
এদিকে আজ জামালপুর ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে ও জামালপুর কলেজে মহাসমারোহে করা হয় সরস্বতী বন্দনা। জামালপুর কলেজের পুজোর উদ্বোধন করেন জামালপুরের বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মেহেমুদ খান। এটাও এক সম্প্রীতির নজির। তিনি বলেন, বাংলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জায়গা তাই মুসলিম হয়েও তিনি সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন করছেন। তিনি কলেজের প্রিন্সিপাল ড. শ্রাবন্তী বন্দোপাধ্যায় এবং সকল অধ্যাপক অধ্যাপিকা সহ ছাত্র ছাত্রীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। এই কলেজের ফিফথ সেমিস্টারের ছাত্র সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায় নিজেই কলেজের দেবী পুজো করেন তাকে ঘিরেও ছাত্র ছাত্রীদের আবেগ ছিল দেখার মতো। পরে তিনি জামালপুর বিশ্বাস পাড়ায় মিলন সংঘের সহজ পাঠের থিমের পুজো উদ্বোধন করেন। সঙ্গে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পূর্ণিমা মালিক, জামালপুর ২ অঞ্চল প্রধান মিঠু পাল সহ অন্যান্যরা।
পুরো মণ্ডপ সজ্জা করা হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজপাঠ বইয়ের অনুকরণে। তাঁদের এই থিমে সকলেই নিজেদের ছোটবেলাকে ফিরে পাবেন। মন্ডপ ও ঠাকুর দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। বেরুগ্রাম আচার্য্য গিরিশ চন্দ্র বসু বিদ্যাপীঠেও সকল ছাত্র ছাত্রীরা বাগদেবীর আরাধনায় মেতে ওঠে। সকাল থেকেই ছেলে মেয়েরা সুন্দর পোশাক পরে স্কুলে উপস্থিত হয়ে পুজোর জোগাড় করতে লেগে যায়।
একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীরা সুন্দর ভাবে মন্ডপ সজ্জা করে। সকলে একসঙ্গে দেয় অঞ্জলী। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবাশীষ মালিক, নূর আলী, সোমা হালদার, বিপ্লব ঘোষ, জনার্দন ঘোষ, মঞ্জুশ্রী মাইতি সহ সকল শিক্ষক শিক্ষিকা সহ সকল ছাত্র ছাত্রী মায়ের পায়ে অঞ্জলি দেন।