Scrooling

প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর শোকজ্ঞাপন # বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভার সাংসদ হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় # 'দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী # নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রীসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে শপথ নিলেন ডঃ সুকান্ত মজুমদার ও শান্তনু ঠাকুর # আঠারো তম লোকসভা ভোটের ফলাফল : মোট আসন ৫৪৩টি। NDA - 292, INDIA - 234, Others : 17 # পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফলাফল : তৃণমূল কংগ্রেস - ২৯, বিজেপি - ১২, কংগ্রেস - ১

Space Scientist Rajib Saha মহাকাশের সুলুক সন্ধান দিতে ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞানী রাজীব সাহা শহর বর্ধমানে


 

Space Scientist Rajib Saha


মহাকাশের সুলুক সন্ধান দিতে ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞানী রাজীব সাহা শহর বর্ধমানে 




Jagannath Bhoumick 
Sangbad Prabhati, 27 October 2024

জগন্নাথ ভৌমিক, বর্ধমান : শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির শহর বর্ধমান। সেই বর্ধমানে এবার বিজ্ঞানের বিজয় পতাকা তুলে ধরে শত শত ছাত্র-ছাত্রীকে চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা বিজয়ের স্বপ্ন দেখাতে বর্ধমান সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের আহবানে হাজির হলেন ইসরোর বিশিষ্ট মহাকাশ বিজ্ঞানী তথা রত্নগর্ভা বাংলার কৃতি সন্তান রাজীব সাহা।

 শ্যামা পূজা, ছট পূজা এবং ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার প্রাকলগ্নে ২৭ শে অক্টোবর বর্ধমান শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা পীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ে শুরু হলো যেন এক প্রাক বসন্ত উৎসব। শিমুল পলাশ না ফুটলেও এই বিদ্যালয়ের এনসিসি ক্যাডেটরা গার্ড অফ অনারের মধ্য দিয়ে এবং উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের অন্তরের অকৃত্রিম ভালোবাসার শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়ে যেভাবে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রাজীব সাহা সহ তাঁর শিক্ষা গুরু তথা পশ্চিমবঙ্গের সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের কনভেনার পিন্টু রাহা কে সাদরে বরণ করে নিলেন তাতে বলতেই হয় "ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত"।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, জাতীয় শিক্ষক তথা শিক্ষারত্ন ডঃ সুভাষচন্দ্র দত্ত এবং শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন পাল সহ একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তি। বর্ধমান সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের সদস্য শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় পাল, হিমাদ্রি শেখর দে, অমৃত প্রসাদ দাস, সজল কুমার দে, অনিমেষ সাহা, অয়ন কুমার মল্লিক, বিশ্বনাথ দত্ত, সুদীপ্ত দাস, সৈয়দ জহর আলী, নয়ন চক্রবর্তী, তরুণ দাস, অনুপম মুখার্জী, রাঘব শ্যাম, সূর্যদেব ঘোষ, মিঠুন চ্যাটার্জীদের মতো  কর্মকর্তারা। পেশায় শিক্ষক সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠা বর্ধমান সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের পক্ষ থেকে বিজ্ঞানী সহ উপস্থিত অতিথিদের পুষ্পস্তবক, উত্তরীয়, মেমেন্টো এবং একাধিক উপহার সহ সবুজ প্রাণ ফুল গাছের চারা দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। 

 অনুষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অদ্রিকা সাহা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করে সকলের মন জয় করে নেয়। এরপর প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে এদিনের বিজ্ঞান বিষয়ক সেমিনারের উদ্বোধন করেন ডঃ সুভাষ চন্দ্র দত্ত।

  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন পাল এবং সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের কনভেনর পিন্টু রাহা তাদের সংক্ষিপ্ত ভাষণে বর্ধমান সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের ছাত্রহিতৈষী এবং পরিবেশ উন্নয়নমূলক নানান কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

তারপরই অধীর আগ্রহে অপেক্ষারত হল ভর্তি ছাত্র-ছাত্রীদের মহাকাশের সুলুক সন্ধান দেবার জন্য বিজ্ঞানী রাজীব সাহা উঠে দাঁড়াতেই তুমুল করতালিতে ফেটে পড়ে স্কুলের অডিটোরিয়াম। এরপরই বিজ্ঞানী রাজীব সাহা শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে ছাত্র ছাত্রীদের সাথে বন্ধুর মতো মিশে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি বিষয়ের সাথে অতীত ও বর্তমানের গৌরবময় অধ্যায় গুলি সুন্দরভাবে তুলে ধরেন প্রজেক্টরের মাধ্যমে। 

আগামী দিনে মহাকাশ বিজ্ঞানে ভারত যে আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করতে চলেছে তার তথ্যনিষ্ঠ প্রমান তুলে ধরে ছাত্রদের তিনি এ বিষয়ে এগিয়ে এসে দেশ মাতৃকার সেবা করার আহ্বান জানান। সদা হাস্য প্রিয় তরুণ এই বিজ্ঞানীর অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্যে আবারও গোটা অডিটোরিয়াম হাততালিতে ফেটে পড়ে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের সাক্ষাৎ ভগবানকে ছুঁয়ে দেখতে চায়। তিনিও হাসিমুখে তাদের আবদার মেটাতে অকাতরে অটোগ্রাফ দেন এবং তাদের সাথে সেলফিও তোলেন।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সঞ্চালনা করেন বর্ধমান সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের প্রেসিডেন্ট তথা বিশিষ্ট শিক্ষক বিশ্বরূপ দাস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, " বর্ধমান সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাব বিদ্যালয়ের পঠন পাঠনের বাইরে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মধ্য দিয়ে ছাত্রদের নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক ক্লাস করে থাকেন এবং তাদের প্রশ্নের সমাধান করে দেন। এছাড়াও সারা বছর জুড়ে তারা সমাজ সেবা, পরিবেশ উন্নয়ন, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞান সচেতনতা মূলক নানান কর্মকাণ্ড করে থাকেন। আগামী দিনে শহর বর্ধমানে বিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রীদের দিয়ে একটি বিজ্ঞান মেলা করার ইচ্ছা রয়েছে। সকলের সহযোগিতা থাকলে তা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে এবং সেখান থেকেই উঠে আসবে ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা, যারা আগামী দিনে রাজীব সাহার মতো বিজ্ঞানের জয়ধ্বজা তুলে ধরে সুদূর মহাকাশের বুকে রচনা করবে ভারতবর্ষের নব নব গৌরব গাথা "।

এই অনুষ্ঠান থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ভবিষ্যতের জীবন ও জীবিকার ব্যাপারে  যে নতুন স্বপ্ন দেখবে সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না।