বিদ্যালয়ে প্রাণবন্ত বসন্ত উৎসব
Sangbad Prabhati, 27 March 2024
🟣 বিশ্বরূপ দাস
শহরের প্রান্তে অবস্থিত হলেও তেজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় সবসময় নতুন কিছু ভাবে, নতুন চিন্তা করে। আর সেই চিন্তাভাবনার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরি হয় প্রধান শিক্ষকসহ সহ-শিক্ষক শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়।
ভারমুক্ত এবং চাপমুক্ত শিক্ষার আনন্দদায়ক পরিবেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর তেজগঞ্জ হাইস্কুল। পঠন পাঠনের পাশাপাশি সারাবছর ছোটখাটো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এসব সাংস্কৃতিক আয়োজন যেন হৃদয় কুসুম দিয়ে গাঁথা একটি উৎকৃষ্ট মালিকার মত সৌরভে সুগন্ধে সুমধুর।
ঋতুরাজ বসন্তের সমাগমে প্রকৃতি যখন সেজে ওঠে রাজকীয় বেসে যখন দিকে দিকে ফুটে উঠে অশোক-পলাশ তখন ছাত্র-ছাত্রীদের মনও ফাগুনের আবির রঙে রঙিন হয়ে ওঠে। তাদের চঞ্চল মন আনমনা হয়ে ওঠে রং খেলার জন্য। ইচ্ছে ডানায় পাখনা মেলে তারা ছুটে চলে নীল দিগন্তে। ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় তাদেরও তখন ইচ্ছা করে সহপাঠি সহ প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে নৃত্য গীতের তালে তালে রং খেলি, রং মাখি।
তাদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতেই তেজগঞ্জ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ কুমার চক্রবর্তী এবং পরিচালন কমিটির সভাপতি নিতাই চন্দ্র কাইতি সিদ্ধান্ত নেন যে এ বছর বিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসব পালন করা হবে। সেই মোতাবেক ক্লাস করার ফাঁকে ফাঁকে ছাত্র-ছাত্রীদের তালিম দিতে শুরু করেন শিক্ষিকা রেশমি ঘোষ, বর্ণালী রায়, অনন্যা ভট্টাচার্য, ঝুমা চক্রবর্তী গাইন এবং বিশ্বরূপ দাস।
কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে কি না হয়। তাই মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে তেজগঞ্জ হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত হলো একটি অতি সুন্দর মনোজ্ঞ বসন্ত উৎসব। সম্পূর্ণ রাবীন্দ্রিক পরিবেশে নাচ-গান এবং ছোট্ট নাটিকার মধ্য দিয়ে এই উৎসব উদযাপন করা হয়। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রিয় শিক্ষক শিক্ষিকাদের শ্রীচরণ যেমন আবির রঙে রাঙিয়ে দেয়। তেমনি শিক্ষক শিক্ষিকারাও তাদের সন্তান তুল্য ছাত্র-ছাত্রীদের ললাটে পরিয়ে দেন স্নেহের আবির রং। হাতে তুলে দেন ভালোবাসার ছোট্ট একটি উপহার।
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে তেজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় যেন মুহূর্তে হয়ে গিয়েছিল এক টুকরো শান্তিনিকেতনের মতো। যেখানে চোখের আলোয় ছিল স্বপ্ন নদীর ঢেউ। ছিল বিভেদ মোছার স্বপ্ন অভিযান। ছিল নতুন করে জেগে ওঠার গান। তাই ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার পর একে অপরকে আবির রঙে রঞ্জিত করার মাধ্যমে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফোটাতে চেয়েছেন বোধের গোলাপ, পারস্পরিক সহযোগিতার রজনীগন্ধা, বাৎসল্যের পলাশ এবং বন্ধুত্বের অশোকফুল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, " বিদ্যালয়ের এই বসন্ত উৎসবে সব ধর্মের সব বর্ণের ছেলে মেয়েরা মিলেমিশে একাকার হয়ে আনন্দের জোয়ারে ভেসেছে। এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি। হোলির এই রং শুধু উপরে নয় যেন মর্মে লাগে, জীবনের সকল কর্মে লাগে এটাই আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য "।