DVC water
ডিভিসির জল ছাড়ার ৫ দিন পরেও দক্ষিণ দামোদরে জল আসেনি, চাষীদের মাথায় হাত
Sangbad Prabhati, 31 July 2023
প্রদীপ কুমার মণ্ডল, ৩১ জুলাই : দক্ষিণবঙ্গের ৫ জেলায় আমন চাষের জল দেওয়ার বিষয়ে গত ২৪ জুলাই বর্ধমানে জেলা সার্কিট হাউসে বিশেষ বৈঠক হয়েছিল। ছিলেন বর্ধমান ডিভিশনের ডিভিশনাল কমিশনার বিজয় ভারতী, জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়া সহ পাঁচটি জেলার জেলা আধিকারিকরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আগামী ২৭ জুলাই দুর্গাপুর ডিভিসি থেকে চাষের জন্য জল ছাড়া হবে। এবং নির্দেশ অনুযায়ী ২৭ জুলাই চাষের জন্য জল ছাড়াও হয়েছে। কিন্তু ডিভিসি'র জল ক্যানেল মারফত দক্ষিণ দামোদর এলাকায় পৌঁছালেও চাষ যোগ্য জমিতে জল পৌঁছায়নি। চাষ জমিতে চড়ছে গবাদি পশু। চাষীদের মাথায় হাত।আকাশের বৃষ্টি দু এক পশলা হলেও চাষের জমিতে জল জমেনি। অনেক আগেই তৈরি হয়ে গেছে ধান, জলের অভাবে জমিতে বীজ রোপণ করা যাচ্ছেনা। বেশি ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকার চাষীদের। কারণ ধান চাষ তাড়াতাড়ি শেষ না করতে পারলে আলুচাষ করতে পারবে না। দক্ষিণ দামোদর এলাকা মূলত খণ্ডঘোষ, রায়না ১ ও রায়না ২ এই তিনটি ব্লক নিয়ে গঠিত। তিনটি ব্লকের শেষ সীমানা দিয়ে বয়ে গেছে তিনটি নদ-নদী। একটি দামোদর, অন্যটি মুন্ডেশ্বরী, আর একটি দ্বারকেশ্বর। জলাধারে জল বেশি মাত্রায় জমলে তবেই জল ছাড়া হয় নদ গুলিতে। সরকারি ভাবে জানা যায় বেশি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মাইথন, পাঞ্চেত এবং দুর্গাপুর জলাধারগুলিতে বেশি জল জমেনি। তাই জল বেশি ছাড়তে পারছে না বলে জলাধার কতৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে। এদিকে ডিভিসি'র চাষের জল না পাওয়ায় দক্ষিণ দামোদর এলাকার চাষীরা বৃষ্টির জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন।
খণ্ডঘোষ ব্লকের কৈয়ড় পঞ্চায়েতের বড় গোপিনাথপুর গ্রামের চাষি নিরঞ্জন তা বলেন ধান বীজ অনেক বড় হয়ে গেছে। দু পাঁচ দিনের মধ্যে চাষের জন্য জল না পেলে ওই বীজে জমিতে আর ধান রোয়া যাবে না। প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। সাবমার্সিবলের মাধ্যমে ধান বীজ তৈরি করেছি। একবারই চাষ হয়। বোরো ধান চাষের সময় ক্যানেলের জল পাওয়া যায় না। তাই আমন চাষ করতে না পারলে পরিবারের লোকজন না খেয়ে মরবে। কি যে করবো ভেবে উঠতে পারছি না। রায়না ১ ব্লকের হিজলনা পঞ্চায়েতের বন্তির গ্রামের চাষি অর্জুন ধাড়া বলেন আকাশের বৃষ্টি ও ক্যানেলের জল কোনোটাই নেই। কিন্তু ডিপ টিউবওয়েল ও সাবমার্শিবল আছে বলেই আলু চাষের জমি গুলিতে ধান চাষ করা গেলেও আরও তিন মাঠের জমি শুখনো। আকাশের বৃষ্টি বা ক্যানেলের জল পেলে তবে ধান চাষ হবে। রায়না ২ ব্লকের গোতান পঞ্চায়েতের মোক্তারপাড় গ্রামের চাষি ফটিক মজুমদার বলেন আমাদের গ্রাম ছাড়াও বিজিপুর সহ বেশ কিছু গ্রাম ক্যানেলের জলের ও আকাশের বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে ধান চাষ করি। ক্যানেলে ৫ দিন আগে জল ছেড়েছে শুনলাম।কিন্তু এখনও পর্য্যন্ত জল এসে পৌঁছায় নি। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা বলেন দুর্গাপুর জলাধার থেকে ধাপে ধাপে জল ছাড়া হচ্ছে। কারণ ক্যানেল সংস্কারের কাজ চলছে সর্বত্রই।দু এক দিনের মধ্যেই দক্ষিণ দামোদর এর সমস্ত এলাকায় চাষের জন্য জল পৌঁছে যাবে। আরো ৫ দিন জল ছাড়া হবে জলাধার থেকে।তাতেই যদি দক্ষিণ দামোদর এলাকার সব জায়গায় চাষের জল না পৌঁছায় তাহলে জল ছাড়ার সময় বাড়ানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা রাজ্যের চাষীদের জন্যই সব থেকে বেশি চিন্তা করেন।কারণ বিভিন্ন চাষের ওপর নির্ভরশীল বাংলা।