চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

Rice Mills Association পূর্ব বর্ধমানে রাইস মিলগুলো সঙ্কটে, উত্তরণের পথ খুঁজছে বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন


 

Rice Mills Association

পূর্ব বর্ধমানে রাইস মিলগুলো সঙ্কটে, উত্তরণের পথ খুঁজছে বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন


Jagannath Bhoumick
Sangbad Prabhati, 21 May 2023

জগন্নাথ ভৌমিক বর্ধমান : পূর্ব বর্ধমান জেলার রাইস মিলগুলি খুবই সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন জেলার একমাত্র বৃহৎ শিল্প রাইস মিল অথচ এই রাইস মিল শিল্প গত কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে। রবিবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন এর বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কথাগুলো বলেন বিধায়ক খোকন দাস।

তিনি রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে বলেন, প্রদীপ দা আপনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত কাছের মানুষ। এই জেলার রাইস মিল শিল্প বাঁচাতে আপনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে একটা পথ বার করুন, কারণ এই শিল্পকে নিয়ে শুধু কিছু মানুষ ব্যবসা করে এমনটাই নয় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু মানুষের রুটি রুজি। 

এদিন প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভার উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সহ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা রায়নার বিধায়িকা শম্পা ধাড়া, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মন্ডল, বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ তারাপদ মহাপাত্র, বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার সাহানা, কোষাধ্যক্ষ কাঞ্চন সোম প্রমুখ।

মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন রাইস মিল ধ্বংস হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি না। আমি ভাই খোকনের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলবো বলে বলেছি। তবে হ্যাঁ, আগের মতো লাভ করার জায়গা আর নেই। আগে কি হতো আমি সেই প্রসঙ্গে যাচ্ছিনা। আগে কি হতো আপনারাও জানেন আমিও জানি। পশ্চিমবঙ্গে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়, তা আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। এই বিষয়টি আমি অনেকবার নীতি আয়োগকে বোঝাবার চেষ্টা করেছি। উৎপাদন বেশী হলে কৃষকরা অভাবী বিক্রি করতে বাধ্য হন। প্রদীপবাবু বলেন, ২০১১ সালে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প চালু করবেন। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে এই খাদ্য বাইরে থেকে নেবেন না সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে। তারপরই তিনি কৃষকদের কাছ থেকে তাদের অভাবী বিক্রি বন্ধ করতে সরকারিভাবে ধান ক্রয় করা শুরু করেন এবং সেই ধানের উৎপাদিত চাল খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে সরবরাহ করা শুরু হয়। আর এই কাজটি করার জন্য তিনি যাদের উপর নির্ভর করেন তারাই হলেন পশ্চিমবঙ্গের রাইস মিল মালিক। তারাই সুষ্ঠুভাবে ধান ক্রয়ের পর চাল উৎপাদন করে সেই চাল পৌঁছে দেন খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের জন্য।

বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, আমাদের রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন ১০২ বছরে পদার্পণ করেছে। মালেক সাহেব বলেন, বর্ধমান জেলায় ২৮ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। সরকার ৬ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সরাসরি চাষীদের কাছ থেকে ক্রয় করে। বাকি ধান রাইস মিলার এবং ধান ব্যবসায়িরা চাষীদের কাছ থেকে কেনেন। কিন্তু আমরা যে সময়ে দাঁড়িয়ে এই সম্মেলন করছি, সেই সময়টা রাইস মিল শিল্পের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সঙ্কটময় সময়। তিনি বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরার পাশাপাশি সংগঠনের সেবামূলক কাজের খতিয়ানও তুলে ধরেন।

এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেও ৫০ জন টিবি রোগীর ৬ মাসের খাদ্য সামগ্রীর দায়িত্ব নেয় বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়া সংগঠনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী জিতেন গড়াই -কে সাল পুষ্পস্তবক, উপহার ও এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়ে সম্বর্ধিত করেন আব্দুল মালেক ও রাজকুমার সাহানা সহ অন্যান্যরা।

এদিনের অনুষ্ঠানে সংগঠনের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত মন্ডল, বংশী শাম, সুকুমার সাহানা, পার্থ নন্দী, কিরণ শঙ্কর মন্ডল, জন্মেঞ্জয় খাঁ, হীরেন পাঁজা, মণীশ আগরওয়াল, কামালউদ্দিন মন্ডল, জয়দেব বেতাল, বাপি কেশ, গফুর আলি খান পলাশ সাহানা, আজিজ আমান সহ অন্যান্যরা।

সঙ্গীতানুষ্ঠানের মাধ্যমে এদিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন আয়না'র শিল্পীরা। পরিচালনায় ছিলেন মণিকা ঠাকুর। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুন্দর ভাবে সঞ্চালনা করেন প্রখ্যাত বাচিক শিল্পী সতীনাথ মুখোপাধ্যায়