Shikshashree Scholarship
শিক্ষাশ্রী বৃত্তি প্রকল্প রাজ্যের লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর আশাকে বাঁচিয়ে রেখেছে
বর্ধমান ২ ব্লকের মডেল দুয়ারে সরকার জনমানসে সাড়া ফেলেছে
Sangbad Prabhati, 8 April 2023
জগন্নাথ ভৌমিক, বর্ধমান : ষষ্ঠ পর্যায়ে দুয়ারে সরকারের বিশেষ আকর্ষণ মডেল দুয়ারে সরকার। ৮ এপ্রিল এরকমই দুয়ারে সরকার কর্মসূচি আয়োজিত হয় বর্ধমান দু'নম্বর ব্লকের সামন্তী হাইস্কুলে। এই শিবিরে উপস্থিত থেকে সরাসরি সাধারণ মানুষের হাতে পরিষেবা তুলে দিয়েছে বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক, বর্ধমান ২ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুবর্ণা মজুমদার, পঞ্চায়েত সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অরুন গোলদার ও অন্যান্য আধিকারিকরা। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডার বিভিন্ন পরিষেবার অঙ্গের মডেলের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল এই শিবিরে।
শনিবার পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানান, এরকম মডেল দুয়ারে সরকার শিবির জেলায় প্রতিদিনই আয়োজিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যেই জেলায় দুয়ারে সরকার শিবিরে বিভিন্ন পরিষেবা পেতে এক লক্ষের বেশি মানুষ আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা শাসকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রাম শংকর মন্ডল।
জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন বিভাগ শিক্ষাশ্রী স্কলারশিপ স্কিম চালু করেছে। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য তফসিলি জাতি বিভাগের ছাত্রদের জন্য যাতে কেউ আর্থিক সঙ্কটের কারণে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে না দেয় তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই স্কিমটি শুরু হওয়ার পর থেকে এটি স্কুল ড্রপ-আউট ছাত্রদের সংখ্যা কমাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি বলেন, গলসি-১ ব্লকের অন্তর্গত ঝারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা বাগদি শিক্ষাশ্রী বৃত্তি প্রকল্পের ইতিবাচক প্রভাবের একটি জীবন্ত উদাহরণ। পারমিতার বাবা ফেলুনাথ বাগদি অসংগঠিত ক্ষেত্রের একজন দৈনিক মজুরি শ্রমিক। পরিবারের ভরণপোষণের পাশাপাশি তার শিক্ষার সমস্ত খরচ বহন করার জন্য কোনও নিশ্চিত মাসিক আয় নেই৷ কোভিড মহামারীর দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন সময়ের মধ্যে বাগদি পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই শোচনীয় হয়ে ওঠে যে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া পারমিতার পক্ষে অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু, সেই সময়ে শিক্ষাশ্রীর বৃত্তি অনুদান তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং এটি পারমিতাকে স্কুল ছেড়ে দিতে বাধা দেয়।। এবার পারমিতা ৭ এপ্রিল তার বাবার সাথে ঝারুলিয়া হাইস্কুলে ষষ্ঠ দুয়ারে সরকার শিবিরে ব্লক কর্মকর্তাদের সহায়তায় শিক্ষাশ্রী বৃত্তির জন্য অনলাইনে আবেদন জমা দেয়। পারমিতা অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই সেটি জেলা দপ্তরে পাঠানো হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে অনুমোদিত হয়েছে। অনুমোদনের প্রক্রিয়াটি এত দ্রুত ছিল যে একই দিনে গলসি ১ ব্লকের বিডিও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছ বার্তা পারমিতার হাতে তুলে দেওয়ার সঙ্গে তাকে তার শিক্ষাশ্রী বৃত্তির আবেদনের অনুমোদিত অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন। পারমিতা এবং তার বাবা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রসারিত করার জন্য গলসি ১ এর বিডিও-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন,পারমিতা একটি উদাহরণ মাত্র এবং এভাবেই শিক্ষাশ্রী বৃত্তি প্রকল্প লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর আশাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।