চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

People are happy for Duare Sarkar দুয়ারে সরকার শিবিরে চটজলদি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে খুশি আমজনতা


 

People are happy for Duare Sarkar 

দুয়ারে সরকার শিবিরে চটজলদি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে খুশি আমজনতা





Jagannath Bhoumick
Sangbad Prabhati, 5 April 2023

জগন্নাথ ভৌমিক, পূর্ব বর্ধমান : ষষ্ঠ পর্যায়ের দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনকল্যাণমূলক ৩৩টি প্রকল্পের পরিষেবা পাচ্ছেন জনসাধারণ। বুথে বুথে চলছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণে 'স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড' হোক বা মা-বোনেদের ক্ষমতায়নে 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার', পূর্ব বর্ধমান জেলায় দুয়ারে সরকার শিবিরে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে খুশি আমজনতা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা রায়নার বিধায়িকা শম্পা ধাড়া বিভিন্ন গ্রামে দুয়ারে সরকার শিবির পরিদর্শনের পাশাপাশি উপভোক্তাদের হাতে নানান সুবিধার আবেদন পত্র ও শংসাপত্র তুলে দেন। আজ রায়না ১ নম্বর ব্লকের নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতে দুয়ারে সরকারে মানুষ ঠিক মত পরিসেবা পাচ্ছেন কিনা সেটা খতিয়ে দেখলেন রায়না বিধানসভার‌ বিধায়িকা তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। তার সাথে ছিলেন নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান তথা রায়না ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি সেখ ইসমাইল। সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, বঙ্গবাসীর সুরক্ষার অঙ্গীকার, পাশে আছে দুয়ারে সরকার।

সেই দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে অসহায় মানুষজন সত্যি যে সুবিধা পাচ্ছেন বুধবার তেমনি কাহিনী শোনালেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। উপস্থিত ছিলেন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রাম শংকর মন্ডল। এদিন জেলা শাসক এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, বুদ্ধিন হেমব্রম বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়িতে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেন। চরম আর্থিক অনটনের কারণে মাঠে কৃষি মজুরের কাজ করে কোনরকমে দিন যাপন করেন। খবর পেয়ে ষষ্ঠ দুয়ারে সরকারের সময়ে শ্রীমতী হেমব্রম এর বিষয়টি স্থানীয় মানুষরা গলসি-২ ব্লকের নজরে আনেন। এরপরই ব্লক ফুড অ্যান্ড সাপ্লাই বিভাগের আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে ছুটে আসেন, তাঁর বর্তমান আর্থিক অবস্থা যাচাই করে তাঁকে অনুরোধ করেন খানো গ্রাম পঞ্চায়েতের চান্না আশ্রমে দুয়ারে সরকার শিবিরে খাদ্যাসাথী ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন জমা দিতে। সেই মতো তিনি দুয়ারে সরকার শিবিরে পৌঁছানোর পর ১ এপ্রিল কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের সহায়তয় ব্লক কর্তারা তাঁর আবেদন পত্র পূরণ করে জমা দেন। বিডিও এবং খাদ্য ও সরবরাহ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে‌ ৪ এপ্রিল বুদ্ধিন হেমব্রম এর হাতে খাদ্যাসাথী ডিজিটাল রেশন কার্ড তুলে দেওয়া হয়।

 শ্রীমতি হেমব্রম জানান তিনি দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন।জীবনের যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার পাশে আছে। তাঁকে এবং পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য চিন্তা করতে হবে না। দুয়ারে সরকার শিবিরের জন্য তিনি আজ আনন্দিত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার, গলসি ব্লক এবং খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

অন্যদিকে কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চরমণ্ডলহাট গ্রামের বাসিন্দা দীপিকা বৈদ্য গত বছর থেকে জটিল রোগে ভুগছিলেন। বর্তমানে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয় এবং তার চিকিৎসার জন্য যে বিশাল খরচ দরকার তা বহন করার সামর্থ্য তাদের নেই। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র ত্রাণকর্তা হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। গত ১ এপ্রিল দীপিকা বৈদ্য খেজুরডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুয়ারে সরকার শিবিরে তার পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী স্মার্ট কার্ডে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ফর্ম A-তে তার আবেদন জমা দিয়েছিলেন এবং তার জরুরি প্রয়োজন বিবেচনা করে আবেদনপত্রটি দুয়ারে সরকার শিবিরেরই অনুমোদন দেওয়া হয়। কাটোয়ার সাব ডিভিশনাল অফিসারের কার্যালয়ে স্থায়ী তালিকাভুক্তি কেন্দ্রে ৪ এপ্রিল তাঁর পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী স্মার্ট কার্ডে (ইউআরএন- 19070997097833778) বায়োমেট্রিক্স ক্যাপচার করার পরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্লক এবং মহকুমা প্রশাসনের এই ধরনের মানবিক মুখ এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া সত্যিই সেই পরিবারকে গুরুতর রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নৈতিক সমর্থন পেতে সাহায্য করেছে এবং তারা এখন বিশ্বাস করছে যে জীবনের যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের পাশে আছে। শ্রীমতী বৈদ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। 

এই রকমই অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে ষষ্ঠ দুয়ারে সরকার। আজ বর্ধমানের বেলকাস গ্রাম পঞ্চায়েতে দুয়ারে সরকার শিবিরে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে শিক্ষাশ্রী মেধাশ্রী শংসাপত্র তুলে দিলেন বর্ধমান ১ ব্লকের বি ডি ও অভিরূপ ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন বেলকাস গ্রাম পঞ্চায়েতের প্ৰধান জাহানারা খাতুন সহ অন্যান্যরা।