চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনে "গো এ্যাজ ইউ লাইক" এর দিন শেষ


 

তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনে "গো এ্যাজ ইউ লাইক" এর দিন শেষ


জগন্নাথ ভৌমিক, বর্ধমান : তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনে "গো এ্যাজ ইউ লাইক" এর দিন শেষ। একজন লোক দু'জন লোক যত্রতত্র ব্যানার, হোডিং ব্যবহার করে অফিস খুলবে, কেউ জানবে না, এসব চলবে না। অফিস খুলতে গেলে জেলা কমিটি, জেলা সভাপতির অনুমোদন লাগবে। নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন জমা দিতে হবে‌। জেলা সভাপতির অনুমোদন ছাড়া কোনও সংগঠনকে রাজ্য সিলমোহর দেবে না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইএনটিটিইউসি'র সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনগুলোর উদ্দ্যেশ্যে এমনই কড়া বার্তা দিলেন। গোটা প্রক্রিয়াটাই যে তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ম্যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর নির্দেশেই হচ্ছে সেটাও পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন।

রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের (আইএনটিটিইউসি) ডাকে মোদি সরকারের ভ্রান্ত জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে এক বিশেষ সমাবেশের আয়োজন হয় বর্ধমান স্টেশনের কাছে রেলওয়ে ফ্লাইওভার প্রাঙ্গণে। এই সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইএনটিটিইউসি'র সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান পৌরসভার পৌরপতি পরেশ চন্দ্র সরকার, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বিধায়িকা শম্পা ধাড়া, আইএনটিটিইউসি'র পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি সৈয়দ মহঃ সেলিম, বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্ত, ভাইস চেয়ারম্যান আইনুল হক, পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিধায়ক সুভাষ মন্ডল, বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ, অলক কুমার মাঝি, জেলা পরিষদের মেন্টর তথা প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদার, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী শিখা দত্ত সেনগুপ্ত, প্রাক্তন সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা চৌধুরী, তৃণমূল জয় হিন্দ্ বাহিনীর জেলা সভাপতি রবিন নন্দী, যুব তৃণমূলের বর্ধমান শহর সভাপতি অভিরূপ যশ, তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষিয়ান নেতা প্রণব চট্টোপাধ্যায়, সুশান্ত ঘোষ, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু শাখার সহ-সভাপতি মহঃ আশরাফ উদ্দিন সহ অন্যান্য বহু নেতৃত্ব। 

এদিনের সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে একটা দুটো তিনটে চারটে করে ১৯৭২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে ৪৪ টি শ্রম আইন তৈরি হয়েছে। অথচ শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে কলমের খোঁচায় বিরোধীদের কন্ঠস্বরকে গুরুত্ব না দিয়ে বিজেপি সরকার ৪৪ টি শ্রম আইনকে নস্যাৎ করে মাত্র চারটি সর্বনাশা লেবার কোড তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে বিজেপি সরকার। আট ঘন্টার কাজের অধিকার কে খর্ব করে ১২ ঘন্টায় নিয়ে যেতে চাইছে। এসবের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এই শ্রম কোডের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন। ঋতব্রত বলেন বিজেপি যতই চেষ্টা করুক এ রাজ্যে যতদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার আছে ততদিন শ্রমিকদের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।

রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের সমাবেশকে ঐতিহাসিক সমাবেশ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন আইএনটিটিইউসির পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি সৈয়দ মহঃ সেলিমের উদ্যোগে আজ যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এরকম সমাবেশ ইতিপূর্বে কখনো বর্ধমানে আয়োজিত হয়নি। এই সমাবেশ আয়োজন করার জন্য তিনি আইএনটি টিউশির পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটিকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

ঋতব্রত দিনের সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের অধীনে রাজ্যে আরও দুটো ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে সারা বাংলা তৃণমূল নির্মাণ কর্মী ইউনিয়ন এবং সারা বাংলা তৃণমূল মৎস্যজীবি ইউনিয়ন। সারা রাজ্যে ৪২ লক্ষ নির্মাণ কর্মী এবং ২৫ লক্ষ মৎস্যজীবী রয়েছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশিত পথে এবং শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটকের উদ্যোগে এই শ্রমজীবী মানুষদের জন্য রাজ্য সরকারের শ্রম দপ্তর একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ৪২ লক্ষ নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য আবাসনের ভাবনা চিন্তা করছে রাজ্য সরকার পাশাপাশি ২৫ লক্ষ মৎস্যজীবীর জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা করে বীমার ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।