চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

অসহায় মহিলার পাশে ব্লক প্রশাসন


 

অসহায় মহিলার পাশে ব্লক প্রশাসন


অতনু হাজরা, জামালপুর : দুর্গা পুজোর চতুর্থীর দিন জামালপুরে কালারা সার্বজনীন বারোয়ারী পূজোর উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দিন সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পূজা মন্ডপে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান। সেদিনই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে বলেন সামনেই একটি ঝুপড়িতে অসহায় ভাবে বসবাস করছে এক প্রসূতি মা। তারা নিজেরা কিছুটা তাকে সাহায্য করলেও তার আরও বেশি সাহায্যের প্রয়োজন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি যদি সেই দায়িত্ব নেন সে বিষয়ে তারা অনুরোধ করেন। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সাথে সাথেই তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন সেই অসহায় প্রসূতি মা শকুন্তলা দেবীর কাছে। প্রথমেই তিনি সেই অশ্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে তাকে নিয়ে গিয়ে তার নিকট আত্মীয়র বাড়ি রাখার ব্যবস্থা করেন। তার খাবার দাবার এবং চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা করেন। প্রসবের দিন উপস্থিত হলে তিনি নিজে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে স্থানীয় গ্রামীন চিকিৎসক রাশেদ আলী হালদারকে দিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সকলের শুভ কামনায় শকুন্তলা দেবী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সেই পুত্র সন্তানের মুখদর্শন করে তিনি তার নামকরণ করেন শুভদীপ।

 এলাকায় এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। তিনি নিজে এলাকার কিছু মানুষকে দিয়ে তত্ত্বাবধান করতে থাকেন। নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া এবং তার যাতে কোন অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন। এ বিষয়ে তিনি সর্বদা পাশে পেয়েছেন জামালপুর থানার ইন্সপেক্টর রাকেশ সিং ও জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদারকে। আজ সেই শকুন্তলা দেবী তার শিশু পুত্র ও তার পরিবারকে নিজে দায়িত্ব নিয়ে একটি নতুন ঘর বানিয়ে দিয়ে সেখানে তার গৃহ প্রবেশ করালেন। নতুন ঘরে থাকতে কোনো অসুবিধা না হয় তাই সকল প্রকার সাংসারিক জিনিস রান্নার স্টোভ, করাই, খুন্তি, বালতি, জগ, চাদর, দুটি কম্বল, মুদিখানার দোকান, এবং সবজির বাজার সবই করে দেন। 

আজকে এই উপলক্ষে সেখানে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান জামালপুরের যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অরিন্দম চন্দ, জামালপুর থানার সেকেন্ড অফিসার তাপস শীল, রাশেদ আলী হালদার, বাচ্চু মাঝি, মনোজ কাপাসি, মিঠু পাল, মানিক খোরট সহ স্থানীয় এলাকার মানুষরা। মেহেমুদ খান বলেন তার রাজনৈতিক জীবনে এক অন্যরকম অনুভূতি। এই অসহায় মায়ের পাশে দাঁড়াতে পেরে তিনি সত্যিই খুবই গর্ব অনুভব করছেন সাথে সাথে তিনি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই তাঁদের অনুপ্রেরণা। তিনি সর্বদা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন। তিনি কোন জায়গায় গেলে যেকোনো সময় গাড়ি দাঁড় করিয়ে মানুষের সাথে কথা বলা এবং সাহায্যের জন্য এগিয়ে যান। এই সমস্ত কাজে তিনিই তাদের অনুপ্রেরণা। তিনি শকুন্তলা দেবী এবং তার সন্তানের সুস্থতা কামনা করেছেন এবং আগামীতেও তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তার এই ভূমিকায় স্থানীয় মানুষজনেরা অত্যন্ত খুশি। শকুন্তলা দেবী এবং তার পরিবার মেহেমুদ খান ও ব্লক প্রশাসনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।