Scrooling

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন বঙ্গতনয়া, ৮২তম ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অরিজন্তি বিভাগে সেরা পরিচালকের খেতাব জয় করলেন চিত্রপরিচালক অনুপর্ণা রায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর শুভেচ্ছা। # রজতজয়ন্তী বর্ষে সংবাদ প্রভাতী পত্রিকা। সকল পাঠক-পাঠিকা বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি শুভেচ্ছা # বর্ধমানে জাতীয় সড়কে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ১১ পুণ্যার্থীর মৃত্যু। মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর # UGC NET 2025-এ অল ইন্ডিয়া র‍্যাঙ্ক-১ করেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের পিএইচডি স্কলার নিলুফা ইয়াসমিন # উচ্চ মাধ্যমিকের পর নিটেও রাজ্যে প্রথম বর্ধমানের রূপায়ণ পাল। # ষষ্ঠ সিন্ধু জিব্রাল্টার জয় করে ইতিহাসের পাতায় সায়নী # 'দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী

হরিপুরের সামন্ত পরিবারে দেবীর স্বপ্নাদেশেই জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা, সপ্তমী-অষ্টমী-নবমী এবং কুমারী পূজা একদিনেই


 

হরিপুরের সামন্ত পরিবারে দেবীর স্বপ্নাদেশেই জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা, সপ্তমী-অষ্টমী-নবমী এবং কুমারী পূজা একদিনেই 


জগন্নাথ ভৌমিক, বলগনা : দেবী জগদ্ধাত্রী হলেন মা দুর্গার আরেক রূপ। এখানে জগজ্জননীর গাত্রবর্ণ সোনালী সূর্যের ন্যায়, দেবী জগদ্ধাত্রীর সঙ্গে লক্ষ্মী-সরস্বতী, কার্তিক-গণেশ কেউই থাকেন না, তাঁর দুপাশে থাকেন জয়া-বিজয়া। মা জগদ্ধাত্রী ত্রিনয়না, চারটি হাত, প্রতিটি হাতে থাকে একটি অস্ত্র, মা দুর্গার মতো মা জগদ্ধাত্রীর বাহনও সিংহ৷ সংস্কৃত, বাংলা এবং অসমিয়াতে জগদ্ধাত্রী কথার অর্থ হল যিনি জগৎকে ধরে রাখেন৷ জগদ্ধাত্রী পুজোকে ঘিরে গ্রাম থেকে শহরে প্রচলিত আছে নানান লোককথা৷

আজ এই রকমই একটি জগদ্ধাত্রী পুজোর কথা তুলে ধরবো। এই পুজোটি আয়োজিত হয় পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতাড় ব্লকের বলগনা অঞ্চলের হরিপুর গ্রামের সামন্ত পরিবারে। ১৯৫৯ সালে স্বপ্নাদেশে এই পরিবারে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়। হরিপুরের সামন্ত পরিবারের বুদ্ধদেব সামন্ত পুজোর ইতিহাস প্রসঙ্গে জানান, 'এই জগদ্ধাত্রী পূজা আমার ঠাকুরমা রাজলক্ষী দেবী স্বপ্নাদেশ প্রাপ্ত হয়ে আমার পিতা সদানন্দ সামন্ত-কে নির্দেশ দেন জগদ্ধাত্রী পূজা করার জন্য। এই পূজা যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই সঙ্গীন ছিল। মাটির চালা ঘরে প্রথম দেবীর প্রতিষ্ঠা হয়। এরপরে দুর্গা পূজার ঠিক আগে আমার পিতা সদানন্দ সামন্ত'র জীবনে বিরাট বিপর্যয় নেমে আসে। আমার মা, পিসিমা এবং যিনি ঠাকুর গড়েছিলেন সেই শিল্পী মারা যান। তারপর সকলেই আমার বাবাকে এই পূজা থেকে বিরত হবার জন্য অনুরোধ করেন। সকলেই বলতে থাকেন, জগধাত্রী পূজা সবার সহ্য হয় না। আমার বাবা বলেছিলেন, আমার তো জীবনের সব পরীক্ষাই হয়ে গেল। আমি আর পিছিয়ে আসবো না। তারপর থেকেই জগদ্ধাত্রী পূজা করে আমরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছি।' বর্তমানে পূজা পরিচালনা করছেন সদানন্দ সামন্ত'র পুত্র বিপদ বরণ সামন্ত, বুদ্ধদেব সামন্ত, বলরাম সামন্ত ও সাগর সামন্ত। হরিপুরের সামন্ত পরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজো এবছর ৬৪ তম বর্ষে পদার্পণ করলো। বর্তমানে পরিবারের ছেলে-মেয়েরা সবাই উচ্চশিক্ষিত তারা স্বদেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন পদাধিকারী হয়ে রয়েছে। গ্রামের মেয়েরা ও যারা বৈবাহিক সূত্রে বাইরে থাকেন তাঁরাও সকলেই এই পুজোয় গ্রামে আসেন এবং পুজোতে অংশ গ্রহণ করেন।

বলগনার হরিপুরের সামন্ত পরিবারের জগদ্ধাত্রী পূজার বিশেষত্ব হলো এক দিনে চারটি পূজা হয় অর্থাৎ সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এবং বিশেষ পূজা কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এবছর ২ নভেম্বর বুধবার মহাসমারোহে পুজো হবে। পারিবারিক পুজো হলেও বর্তমানে এই জগদ্ধাত্রী পুজো একটি সর্বজনীন রূপ পেয়েছে। গ্রামের সমস্ত মানুষই এই পুজোয় নিমন্ত্রিত থাকেন এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। দুপুরে এক পঙক্তিতে খাওয়া-দাওয়া হয়। এছাড়া পরের দিন বিসর্জনের সময়ে নরনারায়ণ সেবারও আয়োজন করা হয়। গ্রামের এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার সকলেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিরঞ্জনের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। সব মিলিয়ে হরিপুর গ্রামের সামন্ত পরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজো ঘিরে এলাকার মানুষের আবেগ এবং অনুভূতিটাই অন্যরকম।