সিভিক ভলেন্টিয়ারদের বীমা, রাজ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বড়শুল কিশোর সংঘ
ডিজিটাল ডেস্ক রিপোর্ট, সংবাদ প্রভাতী : রাজ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান ২ ব্লকের বড়শুল কিশোর সংঘ। যে কাজ সরকারের করা উচিত সেটাই করে দেখালো একটি ক্লাব। কোনও গল্প কথা নয়। বাস্তবে এমনটাই করেছে বড়শুল কিশোর সংঘ। শনিবার ক্লাবের পক্ষ থেকে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের জন্য দুর্ঘটনাজনিত ২ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বীমা করে দেওয়ার অসামান্য স্বাক্ষর রাখলো বড়শুল কিশোর সংঘ। এদিন এই ক্লাবের উদ্যোগে শক্তিগড় থানার ৫৪ জন সিভিক ভলেন্টিয়ারের হাতে বীমার সার্টিফিকেট তুলে দিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন, ডেপুটি পুলিশ সুপার (সদর) অতনু ঘোষাল, বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক, অলক কুমার মাঝি, বর্ধমান ২ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুবর্ণা মজুমদার, শক্তিগড় থানার ওসি দীপক সরকার সহ অন্যান্য অতিথিরা।
পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন বলেন, ‘একটা ক্লাব আমাদের সিভিকদের জন্য ভেবেছে এটা ভেবেই খুব ভালো লাগছে। এই উদ্যোগ আমাদের জেলাতেই শুধু নয়, সম্ভবত রাজ্যেও প্রথম। সিভিক ভলেন্টিয়ারদের জন্য দুর্ঘটনাজনিত ব্যক্তিগত বীমা ওদের পরিবার কে আরও সুরক্ষিত করবে। তবে এই বীমার সুবিধা যাতে কাউকেই নিতে না হয় মা দুর্গার কাছে সেই প্রার্থনা করছি। তবে বড়শুল কিশোর সংঘের মানবিক এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’
শনিবার এই অনুষ্ঠানে এলাকার ৫০০ জন দুঃস্থ মহিলার হাতে শাড়ি তুলে দেন অতিথিরা। শারদ উৎসবের প্রাক্কালে নতুন শাড়ি হাতে পেয়ে গরীব পরিবারের মহিলারা খুবই খুশি। এদিনের মহতী অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান মহিলা থানার আইসি বনানী রায়, বর্ধমান ২ ব্লকের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সৌভিক পান, যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাম দাস, বড়শুল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুস্মিতা সরেন, উপপ্রধান রমেশ সরকার, রোটারী ক্লাব অ্যামেনিটি বর্ধমান এর সভাপতি গৌতম রায় সহ শীর্ষেন্দু সাধু এবং অন্যান্যরা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কিশোর সংঘের সভাপতি প্রবীর দাঁ।
এদিন বড়শুল কিশোর সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, 'মহালয়ার পুণ্যতিথিকে সামনে রেখে আজ ক্লাবের পক্ষ থেকে এলাকার ৫০০ জন দুঃস্থ মহিলাদের হাতে শাড়ি তুলে দেওয়া হলো। এছাড়া রোদ, ঝড়, বৃষ্টিতে বিভিন্ন রাস্তায় সারা বছর ডিউটি করেন সিভিক ভলেন্টিয়াররা। তাদের কথা ভেবে গত বছর ডিসেম্বর মাসে আমরা একটি উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম কিন্তু করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে সেটা করা যায়নি। আসলে সিভিক ভলেন্টিয়াররা দুর্ঘটনার কবলে পড়লে তাদের সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ পাবার কোনো বিধান নেই। সেই ভাবনা থেকেই আমরা শক্তিগড় থানা এলাকার ৫৪ জন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে দুর্ঘটনাজনিত ২ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বীমা করে দিয়েছি। আমরা বলে ছিলাম আগামী তিন বছর এই বীমার প্রিমিয়াম ক্লাব থেকে বহন করা হবে। তবে আজ আমরা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন এর উপস্থিতিতে ঘোষণা করলাম আগামী ৫ বছর বীমার খরচ বহন করবে বড়শুল কিশোর সংঘ। এই কাজটি করতে পেরে ক্লাবের সদস্যরা আনন্দিত।
এছাড়া আগামী বছর ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবসে বড়শুল বর্ধমান রুটের কুড়িটি বাসের ৬০ জন কর্মীকেও অনুরূপ বীমা করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে'।