চিঁড়ে ও মুড়ি কলের শ্রমিকদের মজুরি ও বোনাস বাড়লো, উপকৃত হলেন ৪৪টি কলের পাঁচ শতাধিক শ্রমিক
দ্বারকানাথ দাস, ৩০ সেপ্টেম্বর, পূর্বস্থলি : সিআইটিইউ'র নেতৃত্বে চিঁড়ে কল ও মুড়ি কলে লাগাতার আন্দোলনের জেরে শ্রমিকদের মজুরি বাড়লো। পেলেন পুজোর বোনাস। এই খবর ছড়িয়ে পড়তে চিঁড়ে কল ও মুড়ি কলের শ্রমিকরা সামিল মিলের সামনে। আট দফা দাবি নিয়ে শ্রমিকরা সি আই টি ইউ-র নেতৃত্বে আন্দোলনে নামে। সমকাজে সমবেতন, সাথে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবি ছিল চিড়ে কল মুড়ি কল শ্রমিকদের। চিঁড়ে কলের ১২টি মুড়ি কলের ২৬টি এবং খই কলের ৭টি মোট ৪৪টি কলের মালিক পক্ষের কাছে মজুরি বৃদ্ধির এবং পুজোর বোনাসের দাবি জানানো হয়। একমাস ব্যাপি মিছিল, পথসভা, মিলের সামনে ধর্ণায় বসেন শ্রমিকরা। লাগাতার আন্দোলনের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করা হয়। শ্রীরামপুর মিল মালিকের অফিসে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়। ১৫ শতাংশ হারে এবং পুজোর বোনাস ২০ শতাংশ হারে দেবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মালিকরা। পূর্বস্থলী থানা এলাকায় ৪৪টি কলে মোট ৫০০ শ্রমিক তারা উপকৃত হলেন। শ্রীরামপুরের চিঁড়ে ও মুড়ি কলের শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক চঞ্চল কুমার সাহা সহ সি আই টি ডি পূর্ব বর্ধমান জেলার নেতা প্রবীর মজুমদার, সুব্রত ভাওয়াল ও রতন দাস সমস্ত কলের শ্রমিকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। শ্রীরামপুর অঞ্চলের চিঁড়ে ও মুড়ি কল, এই কলের ৫০০ শ্রমিক একমাস ব্যাপি লাগাতার আন্দোলন করছিলেন। শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সাথে মালিক পক্ষ প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় মালিক পক্ষ দিতে রাজি না হওয়ায় পরবর্তী সভায় বসেই মালিক পক্ষ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন শ্রমিকদের ১৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধি করা হবে, এছাড়া ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হবে বলে উভয় পক্ষ চুক্তি পত্রে স্বাক্ষর করেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সি আই টি ইউ অনুমোদিত চিঁড়ে ও মুড়ি কলের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গান্ধি দাস, সম্পাদক চাল কুমার সাহা, সদস্য তপন সরকার, মধুসুদন দত্ত, সঞ্জীব বিশ্বাস, নিতাই দাস, গোপাল আইচ, প্রকাশ ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ দে, আশীষ দে, বসু মল্লিক প্রমুখ। মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শঙ্কর প্রসাদ কর, সমীর রঞ্জন দাস, জগন্নাথ আইচ, বাসুদেব দে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শঙ্কর প্রসাদ কর। সিদ্ধান্ত হয় পূর্বস্থলী থানা এলাকায় সমস্ত চিঁড়ে, মুড়ি খই কলের শ্রমিকদের ১৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধি করা হবে, সঙ্গে ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হবে বলে মালিক পক্ষ ঘোষণা করেন।
কৃষক সভার নেতা সাকাউৎ হোসেন বলেন- শ্রীরামপুরের চিড়ে, মুড়ি ও খই কলের শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়াতে উভয় পক্ষ দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি তামিক ও মালিক পক্ষকে অভিনন্দন জানান। গভীর রাত পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক সভা চলে। সকালে কলের সামনে জড়ো হন শ্রমিকরা এবং মিছিল করেন। চিঁড়ে কলের মহিলা শ্রমিক বেজু সেখ, ছোকুরা বিবি, ফুলেশ্বরী সেখ, উমা সেখ এবং মধুসূদন দত্ত ও উপেন সরকার বলেন- তাদের এই জয়ে অত্যন্ত খুশি। তিনি বলেন এইভাবে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনের পথে অধিকার লড়ে নিতে হবে, সে কথাও জানান তারা।