চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

"স্বর্ণমন্দির" এর আকর্ষণে বড়শুলে জনপ্লাবনের আশঙ্কা


 

"স্বর্ণমন্দির" এর আকর্ষণে বড়শুলে জনপ্লাবনের আশঙ্কা 


জগন্নাথ ভৌমিক, বড়শুল : এবার পুজোয় মানুষের ঢল নামবে বড়শুলে। জনজোয়ার সুশৃংখলভাবে সামাল দিতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশিকা জারি করে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আসলে বড়শুলের তিনটি দুর্গাপুজোয় ভাবনার বৈচিত্রের জন্যই মানুষের আকর্ষণ রয়েছে ওই দিকে। পুজো শুরুর আগে থেকেই বড়শুল ইয়ং মেনস্ অ্যাসোসিয়েশনের (বিওয়াইএমএ)  দুর্গাপুজোর মণ্ডপের সামনে সকাল বিকেল মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বড়শুল ইয়ং মেনস্ অ্যাসোসিয়েশনের পুজো এবার ২৫ বছরে। রজতজয়ন্তী বর্ষে আপামর জনসাধারণকে আনন্দ দিতে খুব বেশি ভাবনার গভীরে না গিয়ে বিওয়াইএমএ সকলের সামনে উপস্থাপিত করছে "স্বর্ণমন্দির"। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬ টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। এক সপ্তাহ আগে থেকেই মানুষ মন্ডপের সামনে ভিড় করতে শুরু করে দিয়েছে।

 ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাজল সরকার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, ক্লাবের সভাপতি শিবপদ সরকার এবং সম্পাদক বিপুল মন্ডল এবং ডাঃ পঙ্কজ পাঁজা সহ সিনিয়র সদস্যদের নেতৃত্বে ক্লাবের টিম মানুষকে আনন্দ দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে। দিন রাত এক করে কাজ চলছে। গত ১ জুলাই খুঁটি পুজোর মধ্যে দিয়ে মন্ডপ সজ্জার কাজ শুরু হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে এদিনের আলাপচারিতায় বড়শুল ইয়ং মেনস্ অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রোহন মিত্র, ভরত ঘোষাল, দেবেশ রায়, প্রদীপ লাহা, সায়ন ঘোষাল, পার্থ দত্ত প্রমুখ।

কাজল সরকার আরও জানান, চাকদা'র মিত্র ডেকোরেটার এর কর্মীরা দিন রাত পরিশ্রম করে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের আদলে মন্দির গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। মন্দিরে সোনার আদল আনতে পুরোটাই পিতলের পাতে নকশা করে বসানো হচ্ছে। প্রতিটি চূড়া এবং আসল মন্দিরের চারপাশে যে শিল্পকর্ম আছে তাও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। তার জন্য ফাইবার গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। মূল মন্দিরের আদলে সব কিছু করার জন্য থাকছে ৪৫০০ স্কোয়ার ফিটের সরোবর। 

যে সরোবরে ভেসে বেড়াবে মাছ। মাছ যাতে  মরে না যায় তার জন্য বিশেষজ্ঞ দের পরামর্শে বিজ্ঞান সম্মত ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বর্ণ মন্দিরে ঢুকে চারপাশ ঘূরে দেখার সুযোগ থাকবে। তবে পাঞ্জাবি ঘরানার মন্দিরে মা দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তিই থাকবে। মৃৎশিল্পী মঙ্গল পাল এবার সাবেকিয়ানার প্রতিমা গড়ছেন। সামগ্রিক ভাবনার রূপায়নে ৩০ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হবে। ২৮ সেপ্টেম্বর উদ্বোধনের পরই প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। আর সেই জন্য দর্শনার্থীদের ঢোকা ও বের হবার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 

কাজল সরকার আরও বলেন, ২০২২ সাল আমাদের কাছে ত্রিবেণী সঙ্গম। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি, ইউনেস্কো দ্বারা শারদোৎসবকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আর আমাদের রজত জয়ন্তী বর্ষ। ‘প্রাণে খুশির বান ডেকেছে। রজত জয়ন্তী বর্ষে শুধু বিগ বাজেটের পুজোই নয়, বড়শুল ইয়ং মেনস্ অ্যাসোসিয়েশন এবারেও বেশ কিছু সামাজিক ও মানবিক কর্মসূচি নিয়েছে। অসহায় পরিবারের মহিলাদের হাতে পুজোর জন্য নতুন শাড়ি দেওয়া থেকে শুরু করে ইউনেস্কো-কে ধন্যবাদ জানাতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান সবই হবে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে হবে ভিন্ন অনুষ্ঠান। সকলের মধ্যে ভাতৃত্বের আহ্বান জানিয়ে বড়শুলের ১২ টি দূর্গা পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের মঞ্চে ডেকে সম্মান জানানোর পরিকল্পনা আছে। একই সঙ্গে ১২ জন প্রবীন নাগরিক, এলাকার কৃতি শিক্ষার্থীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানও হবে। সবচেয়ে বড়ো কথা দুর্গাপুজোর আয়োজনে থিমের শিল্পী, কলাকুশলী, কারিগরদের কথা না ভুলে সকলকে সম্মান জানানো হবে অনুষ্ঠান মঞ্চে। বাদ যাবেন না ডেকরেটার শিল্পী, ঢাকি, মৃতশিল্পীরাও। স্বাস্থ্য শিবির সহ নানা সামাজিক কাজও হবে। সব মিলিয়ে বড়শুল ইয়ং মেনস্ অ্যাসোসিয়েশনের রজতজয়ন্তী বর্ষের দুর্গোৎসবে মহাযজ্ঞের আয়োজন।