Scrooling

উচ্চমাধ্যমিক ২০২৫ প্রথম দশে ৭২ জন। প্রথম হয়েছে রূপায়ন পাল। রূপায়ন বর্ধমান সিএমএস হাইস্কুলের ছাত্র। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৭ ( ৯৯.৪ শতাংশ) # ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলের অদৃত সরকার। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬ নম্বর # ষষ্ঠ সিন্ধু জিব্রাল্টার জয় করে ইতিহাসের পাতায় সায়নী # বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় # 'দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী

Workshop on Journalism :  উদ্বোধনে সাংবাদিকতার পাঠ দিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ


আইজেএ'র উদ্যোগে কর্মশালা :  উদ্বোধনে সাংবাদিকতার পাঠ দিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ 


ডিজিটাল ডেস্ক রিপোর্ট, সংবাদ প্রভাতী : শতবর্ষে ইণ্ডিয়ান জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (আই জে এ)। ভারতের প্রাচীনতম এই সাংবাদিক সংগঠন সাংবাদিকদের স্বার্থে  নিরলস কাজ করে চলেছে। নানান কর্মসূচির নিরিখে পূর্ব বর্ধমান জেলা এই মুহূর্তে সংগঠনের মুখ বলা যেতে পারে। একেরপর এক জনমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইণ্ডিয়ান জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন এই মুহূর্তে একটি জনপ্রিয় সাংবাদিক সংগঠন। 

৭ আগস্ট ইণ্ডিয়ান জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন এর পূর্ব বর্ধমান জেলা শাখা সাংবাদিকতার উপর একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল। বর্ধমান রাজ কলেজ এর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বিধায়ক শম্পা ধাড়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বর্ধমান রাজ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডঃ প্রদীপ কুমার বন্দোপাধ্যায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখর সেনগুপ্ত, সহ-সভাপতি তারকনাথ রায়। শুরুতেই সংগঠনের পক্ষ থেকে শতবর্ষের স্মারক মেমেন্টো দিয়ে অতিথিদের সম্মানিত করা হয়।

 উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কর্মশালা উপলক্ষে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়।  পুস্তিকাটির আবরণ উন্মোচন করেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।  উদ্বোধকের বক্তব্যে মন্ত্রী গঠনমূলক সাংবাদিকতার উপর বিশেষ ভাবে আলোকপাত করেন। এদিন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জেলার বাউলের ইতিহাস প্রসঙ্গে যাদবিন্দু বাউলের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রসঙ্গে রাসবিহারী ঘোষ, রাসবিহারী বসু সহ অন্যান্যদের অবদানের কথা বলেন। বাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয় উল্লেখ করে কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, ঘনরাম চক্রবর্তীর কথা বলেন। আসলে মন্ত্রী এদিন বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করার মাধ্যমে শিক্ষানবিশ সাংবাদিকদের জন্য একটি সুন্দর ক্লাশ নিয়েছেন বলা যায়। উপস্থিত সকলেই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এর বক্তব্যে গঠনমূলক সাংবাদিকতায় অনুপ্রাণিত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই ইণ্ডিয়ান জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ব বর্ধমান জেলার সাধারণ সম্পাদক অরূপ লাহা স্বাগত ভাষণে সংগঠনের বিগত সময়ে রূপায়িত কর্মসূচিগুলো তুলে ধরেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আই জে এ'র রাজ্য কমিটির সদস্য জগন্নাথ ভৌমিক। 

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সাংবাদিকতা বিষয়ক কর্মশালায় আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শেখর সেনগুপ্ত, রজত রায়, দেবাশীষ আইচ, নির্ণয় ভট্টাচার্য। এই পর্বটি সুন্দরভাবে সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক পার্থ চৌধুরী। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক হীরক কর, বিবেকানন্দ কলেজের গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান বিনয় কৃষ্ণ হাজরা এবং চন্দ্রপুর কলেজের গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান অভীক গুঁই।

রবিবারের কর্মশালায় আলোচকদের মধ্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক রজত রায় বলেন, সাংবাদিকতা করতে গেলে প্রথম শর্ত তাকে দায়িত্বশীল হতে হবে। কোন খবরের সত্য মিথ্যা বিচার করে তবেই সেই খবরটিকে পরিবেশন করা উচিত। খবরের ক্ষেত্রে ইতিহাস জানাটা ভীষণভাবে দরকার, তার সাথে বাংলা ভাষার জ্ঞান। যে খবরই হোক না কেন সাংবাদিকের কাজ সেই খবরটিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে মানুষের সামনে তুলে ধরা। রজত বাবু উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে নতুন প্রজন্ম এবং সকল সাংবাদিকদের উৎসাহ দিয়েছেন তাদের কাজে আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তার সাথে সাংবাদিকতার আসল দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করারও নির্দেশ দেন। 

বিশিষ্ট সাংবাদিক দেবাশীষ আইচ বলেছেন, যা কিছু নতুন নতুন সবই খবর। বাসি বা পুরোনো খবরও বিশ্লেষণে টাটকা হয়ে আসতে পারে।  একজন সাংবাদিকের কাজ তথ্য সংগ্রহ করা, যে কোন খবরের তথ্য জানার অধিকার অর্জন করা। যে কোনও ক্ষেত্রে মাথা উঁচু করে সামনাসামনি হয়ে প্রশ্ন করা। মনের মধ্যে প্রশ্ন রাখতে হবে সব সময়। খবরের বিষয়ে কৌতূহল থাকাটা ভীষণভাবে দরকার। তার সাথে জরুরী, স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন দেখা থামালে চলবে না। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা চর্চা এবং পড়াশোনা সবটাই করতে হবে। তিনি আরো একটি বিষয় বলেন যে অনেকেই এখন বলেন সাংবাদিকদের নাকি আর শ্রদ্ধার জায়গা নেই। কিন্তু এটা ভুল এটার তো অনেক কারণ আছে। এটা সাংবাদিকদের জন্য যতটা তার থেকে ঢের বেশি সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক চাপের জন্য অনেক বেশি। কিন্তু সেটাকে অতিক্রম করেও সকলে পারবেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে স্বপ্ন দেখতে। 

সাংবাদিক নির্ণয় ভট্টাচার্য বলেন,  যেকোনো একটি খবর বা যে কোন একটি তথ্য যখন আমাদের কাছে এসে পৌঁছায় তখন সেই তথ্যটিকে যাচাই করা ভীষণভাবে প্রয়োজন। এমনটা টেলিভিশনের ক্ষেত্রে যেমন প্রয়োজনীয় তেমনই ডিজিটাল ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রয়োজনীয়। তার কারণ ডিজিটাল মাধ্যমে যদি একটি বেঠিক তথ্য পরিবেশিত হয় তাহলে সেটি মুহূর্তের মধ্যে কোটি কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। তাই ডিজিটাল মাধ্যমে যারা কাজ করবে তাদেরকে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে ও সতর্ক থাকতে হবে। মাধ্যম হিসেবে ডিজিটালের অবদান যেমন অনস্বীকার্য সে রকমই মাধ্যম হিসেবে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে অন্যান্য মাধ্যমের থেকে অর্থাৎ এই নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কতা নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে। তার সাথে সাথে বিভিন্ন বিষয়ে ভাষা জ্ঞান থাকাটা প্রয়োজনীয়। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই পারদর্শী হতে হবে এবং খবরের বিষয় নিয়ে জানতে হবে। তিনি আরো বলেন যত দিন এগোচ্ছে ততই ডিজিটাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। 

এদিনের কর্মশালায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে বর্ধমান বিবেকানন্দ কলেজ, চন্দ্রপুর কলেজের গণজ্ঞাপন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ  করেছিল। এছাড়াও জেলা থেকে প্রকাশিত পত্রিকার সাংবাদিক এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। কর্মশালা শেষে প্রশিক্ষার্থীদের হাতে  শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।