বিধান শিশু উদ্যানে 'খেলার ছলে বিজ্ঞান' বিষয়ক কর্মশালা
🟣 মোল্লা জসিমউদ্দিন, কলকাতা
➡️ গ্রীষ্মের ছুটিতে বিদ্যালয় দেড়মাস বন্ধ। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে 'গৃহবন্দী' পড়ুয়াদের নিয়ে নান্দনিক পরিবেশে দু'দিনের কর্মশালার আয়োজন করলো 'বিধান শিশু উদ্যান' কর্তৃপক্ষ। সোমবার এবং মঙ্গলবার এই দুদিন বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত শতাধিক পড়ুয়াদের নিয়ে 'খেলার ছলে বিজ্ঞান' কর্মশালাটি আয়োজিত হয়। দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজনের আয়োজন করে থাকে কর্তৃপক্ষ। সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়ারা এতে অংশগ্রহণ করে। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এই কর্মশালায় অংশ গ্রহন করে। 'বিধান শিশু উদ্যান' এবং 'সায়েন্স কমিউনিকেটর্স ফোরাম' এর যৌথ উদ্যোগে অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানীরা ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষকরা হাতে-কলমে নানান বিজ্ঞান ভিক্তিক কাজকর্ম তুলে ধরেন আগত পড়ুয়াদের কাছে। 'বিধান শিশু উদ্যানে'র সম্পাদক গৌতম তালুকদার বলেন - "এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের প্রথম, পড়ুয়ারা সবকিছু হাতেকলমে শিখতে পেরে আনন্দিত। অভিভাবকরা অনুরোধ রেখেছেন পুনরায় এই কর্মশালার আয়োজন করতে"। জানা গেছে, আধুনিক বাংলার 'রূপকার' মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের খুব কাছের মানুষ ছিলেন শিশুপ্রেমী অতুল্য ঘোষ (একদা সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতা) শৈশবকে শিক্ষা - ব্যায়াম - অঙ্কন - ক্রীড়া প্রভৃতি ক্ষেত্রে যথাযথ বিকশিত করতে বিশাল এলাকা জুড়ে 'বিধান শিশু উদ্যান' স্থাপন করে থাকেন তিনি। নাগরিক কোলাহলের মাঝে কলকাতার হাডকো মোড় সংলগ্ন এলাকায় 'বিধান শিশু উদ্যান' তার চিরাচরিত ঐতিহ্য বজায় রেখে চলেছে এই সংস্থার সুদক্ষ সম্পাদক গৌতম তালুকদার মহাশয়ের হাত ধরে। গত সোমবার এবং মঙ্গলবার 'খেলার ছলে বিজ্ঞান' হলো বিধান শিশু উদ্যানে। দুদিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়, জগৎপুর আদর্শ বিদ্যামন্দির, হিন্দু বিদ্যাপীঠ, হরিয়ানা বিদ্যামন্দির, শুঁড়াকন্যা বিদ্যালয়, শ্রী অরবিন্দ ইনসটিটিউট অফ এডুকেশান, টাকী হাউস, সল্টলেক সি এ স্কুল, স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুল, ডন বসকো, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় (সল্টলেক), নিউ ন্যাশনাল হাই স্কুল, বি,ডি স্কুল, ড.শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ইন্সটিটিউশন, বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল স্কুল, নর্থ পয়েন্ট স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুলের সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণির পঞ্চাশ জন ছাত্রছাত্রী। এর পাশাপাশি CRY এর বেশকিছু ছাত্রছাত্রীও অংশগ্রহণ করে।
রোজকার দিনে যে সব জিনিস আমরা ব্যবহার করার পর ফেলে দিই, যেমন- (১) খালি ডট পেনের রিফিল, (২) খাবারের প্যাকেট হিসাবে ব্যবহার করা হয় এমন অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, (৩) ব্যবহার হয়ে যাওয়া পোস্ট কার্ড, (৪) খালি ওষুধের শিশি বা এই ধরনের আরও রকমারি জিনিস, যেগুলো সহজে পাওয়া যায় সবার বাড়িতে সেগুলো নিয়ে সহজ বিজ্ঞানের পরীক্ষা হাতে কলমে করে বিজ্ঞান শেখানো হয় এই দুদিনে। কর্মশালা পরিচালনা করেন অভিজিৎ বর্দ্ধন এবং মানস ভট্টাচার্য। আজ কর্মশালার শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম অধিকর্তা দেবাশীষ সরকার। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর পাঠক্রমে ভৌত বিজ্ঞানের যে সব বিষয় গুলো আছে, সেগুলো সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু বিজ্ঞানের মজার পরীক্ষা হাতে কলমে করানো হয় এই কর্মশালায়।খেলার ছলে বিজ্ঞান শেখানোর চিত্তাকর্ষক এই কর্মশালায় উপস্থিত অভিভাবক অভিভাভবকরাও খুশি এই উদ্যোগে।বিদ্যালয় ছুটি থাকায় পড়ুয়ারা এই কর্মশালায় আসতে পেরে খুবই খুশী। এই বিজ্ঞান কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য কোনো এন্ট্রি ফী ছিল না। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। হাতে কলমে কাজ করার মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষাকে সহজ করে তোলার উদ্দেশ্যই এই কর্মশালার আয়োজন। আগামী দিনে বিধান শিশু উদ্যানে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, টেলিস্কোপের সাহায্যে আকাশ পর্যবেক্ষণ সহ অন্যান্য বিষয়েও কর্মশালার আয়োজন করা হবে।