চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

সর্বধর্ম সমন্বয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির অভিনব মিছিল


 

সর্বধর্ম সমন্বয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির অভিনব মিছিল 


অতনু হাজরা, জামালপুর : সম্প্রতি নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রতিবাদে অশান্তির ঝড় বয়ে চলেছে সারা দেশ জুড়ে। বিভিন্ন ভাবে চলছে প্রতিবাদ। এ বিষয়ে একটু ব্যতিক্রমী ভাবে প্রতিবাদ করলো জামালপুর নাগরিক জনকল্যাণ সোসাইটি। এই ধরনের প্রতিবাদ এর আগে সম্ভবত হয়নি। আজ তারা হালাড়া মোড় থেকে জামালপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত একটি মৌন শান্তি মিছিলের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান। এই মিছিলে পা মেলান বিভিন্ন ধর্মের মানুষ। একই সঙ্গে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। মিছিলের শুরুতে দেখা যায় ভারতের প্রতীক মানচিত্র নিয়ে ভারতমাতা। পুরো এই মিছিল জুড়ে ছিল নানা ধরনের ট্যাবলো। সেখানে দেখা যায় এক হিন্দু ব্রাক্ষ্মন এক মুসলিম ভাইকে রক্ত দিচ্ছেন। 

হিন্দুদের মন্দির, মুসলিমদের মসজিদ, খ্রিস্টানদের গির্জা ও শিখদের গুরুদোয়ারা প্রত্যেকটি প্রতীকের সাথে সংশ্লিষ্ট ধর্মের মানুষ পা মেলান। মিছিলে ছিলেন জনকল্যাণ সোসাইটির সভাপতি মেহেমুদ খান, কোষাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিক, শিখ সম্প্রদায়ের  মহেন্দ্র সিং শালুজা সহ তাদের ধর্মের ধর্মগুরু, মুসলিমদের ইমাম জালালউদ্দিন শেখ, হিন্দুদের পুরোহিত অমিত চক্রবর্তী ও খ্রিস্টানদের ফাদার অ্যালেক্স, আদিবাসী সম্প্রদায়ের তারক টুডু সহ মিঠু মাঝি, সাহাবুদ্দিন মন্ডল, ডাঃ  প্রতাপ রক্ষিত ও অন্যান্যরা। 

মিছিলে ছিল না কোনো স্লোগান। শুধুমাত্র দেশাত্মোবোধক গান বাজতে থাকে। আর মিছিলের উদ্দেশ্য খুব কোমল স্বরে মাইকে বলা হচ্ছিল সর্ব ধর্মের কথা। মেহেমুদ খান বলেন, প্রতিবাদের ভাষা হিংসা হওয়া উচিত নয়। নূপুর শর্মা যে অন্যায় করেছে তার শাস্তি তাকে ভারতীয় আইন দেবে। তার বক্তব্যের জন্য তিনি তীব্র ধিক্কার জানান। তিনি বলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষও তার এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন না। তাই তিনি প্রতিবাদের ভাষা হিসাবে এই মৌন মিছিল ও শান্তি মিছিলের আয়োজন করেছেন। তিনি আরো বলেন জামালপুরের মানুষ অত্যন্ত সহিষ্ণু। তাই এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না। আজ এই মিছিলে সর্ব ধর্মের মানুষ পা মিলিয়ে  প্রমাণ করে দিলো। তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান।

 মিছিল শেষে একটি পথ সভা করা হয়। সেখানে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগুরুরা বক্তব্য রাখেন এবং তাঁরা প্রত্যেকেই জনকল্যাণ সোসাইটির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান।  আজকের এই মিছিল নিঃসন্দেহে রাজ্য তথা দেশ জুড়ে এক আলাদা মাত্রা এনে দেবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।