চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকারা একগুচ্ছ দাবি নিয়ে সরব


 

প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকারা একগুচ্ছ দাবি নিয়ে সরব 


জগন্নাথ ভৌমিক, বর্ধমান : রাজনৈতিক ছত্রছায়ার বাইরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকারা নিজেদের সমস্যা নিরসনে সংঘবদ্ধভাবে সংগঠিত হয়েছেন। গড়ে তুলেছেন ‌'অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস' (ASFHM) নামে সংগঠন। ২-৩ বছরের মধ্যেই সংগঠনের পরিধি যে অনেকটাই বেড়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১২ জুন বর্ধমান শহরের বর্ধমান ভবনে 'এ এস এফ এইচ এম' - দের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এইচ এম'দের আলোচনা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার উঠে আসে, এইচ এম-দের ২৪ ঘন্টা কাজ ও মানসিক চাপে থাকতে হয়। তাদের কষ্ট ও যন্ত্রণা কেউ বোঝে না। করোনা অতিমারি সময়ে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক এইচ এম মৃত্যুবরণ পর্যন্ত করেছেন। এইচ এম সংগঠনের জেলা সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে হঠাৎ ৪৫ দিন বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয় অথচ কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রী সহ সকল সরকারি প্রকল্প চালু আছে। চালু আছে মিড ডে মিল প্রকল্প। মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশের পর ছাত্র-ছাত্রীদের মার্কশিট দেওয়া এবং ভর্তির কাজ আছে কিন্তু কে করবে এসব কাজ, সরকার এইচ এম -দের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ক্ষ্যান্ত। 

এক চরম দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে এইচ এম দের প্রতিনিয়ত কাজ করতে হচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতেই তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ার বাইরে সংঘটিত হয়ে গড়ে তুলেছেন 'অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস'। ২০২০ সালে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬৫ জন প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা এই সংগঠনের ছত্রছায়ায় সঙ্ঘবদ্ধ হলেও বর্তমানে জেলায় তাদের সদস্য সংখ্যা ডবল সেঞ্চুরি করেছে বলে জেলা সম্পাদক স্বপন কান্তি চৌধুরী তাঁর প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকাদের বিভিন্ন সমস্যা প্রসঙ্গে সম্পাদকীয় প্রতিবেদন 10 দফা দাবি উল্লেখ করা হয়েছে এরমধ্যে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে ইলেকশন ডিউটি থেকে এইচ এম-দের অব্যাহতি দিতে হবে। যখন তখন হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ এ অর্ডার করা যাবে না। মেইলের মাধ্যমে অর্ডার করলেও কমপক্ষে ৭ দিন সময় দিতে হবে। মিড ডে মিল কর্মসূচি থেকে এইচ এম দের অব্যাহতি দিয়ে কোন এনজিও-কে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিও রাখা হয়েছে। 

সম্মেলনে মুখ্য বক্তা হিসেবে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন কুমার মাইতি সংগঠনের দাবি দাওয়া নিয়ে তীব্র ভাষায় সরব হন। উপস্থিত এইচ এম -দের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সমস্যাবলী উত্থাপন করুন। সব উত্তর দেওয়ার সঙ্গে কি ভাবে এগোতে হবে বলে দেব। কোনও তাবেদারীর কাছে মাথা হেঁট না করে মেরুদন্ড সোজা রেখে কাজ করার কথা বলেন।

এদিনের সম্মেলনে অতিথির ভাষণে বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক পরেশ চন্দ্র সরকার  শিক্ষক সংগঠনের বিভিন্ন দাবি এবং এইচ এম -দের কর্মক্ষেত্রে উত্থাপিত সমস্যাগুলো যথার্থ বলে সিলমোহর দিয়ে যান। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের জেডিএ(অ্যাকাউন্টস অফিসার) অর্চনা ঘোষ। কর্মক্ষেত্রে নিজের জীবনের ঘটনাবলী তুলে ধরে এইচ এম -দের উৎসাহিত করেন।

'এ এস এফ এইচ এম'দের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্মেলনে সংগঠনের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক চন্দন কুমার মাইতি, ইন্টার ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর আলতাফ সেখ, পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সভাপতি অশোক কুমার সরকার, কাউন্সিল সদস্য আজিজুল হক সহ লক্ষীকান্ত দাস, প্রলয় কুমার ঘোষ,  জয়তী আইন মিত্র, মনোহর দাস, সৌগত মিত্র, মিলন চক্রবর্তী, কৃষ্ণা ঘটক, রানু চক্রবর্তী, সোমনাথ সিনহা, বিশ্বজিৎ ঘটক প্রমূখ।