অতনু হাজরা, সংবাদ প্রভাতী : বর্ধমানে শহরে গোদার মাঠে ২৭ জুন কৃষকবন্ধু প্রকল্পে খারিফ মরশুমের সহায়তা প্রদানের সূচনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বক্তব্যের শুরুতেই বর্ধমান জেলাকে "অন্নদাত্রী মা" আখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমান জেলা কে আমি স্যালুট জানাই। বর্ধমান জেলা আমাদের খাইয়ে-পরিয়ে রাখে। এর পরেই তিনি বর্ধমান নিয়ে বলেন আমাদের অন্নদাতা মা আমাদের অন্নদাত্রী মা।
আজ দুপুর ২ টোর কাছাকাছি সময় তিনি সড়কপথে বর্ধমানে এসে পৌঁছান। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে সেজে ওঠে বর্ধমান শহর। পূর্ব বর্ধমানের গোটা জেলা থেকে কাতারে কাতারে মানুষ এসে পৌঁছায় গোদার মাঠে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য। প্রতিটি ব্লক থেকে বাস, ট্রেকার, সুমো ভর্তি করে হাজার হাজার মানুষ আসেন আজকের সভায়। পুরো শহর অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
মঞ্চে এসেই মুখ্যমন্ত্রী সকলকে অভিবাদন জানান। তাঁর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী সহ কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটক, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কৃষি বিপণন দপ্তরের সচিব ওঙ্কার সিং মীনা, জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলার সকল বিধায়ক, পৌরসভা, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনিক কর্তারা। শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বেশ কয়েকজন কৃষকের হাতে কৃষক বন্ধু সম্মান তুলে দেন। এই মঞ্চ থেকেই আজ তিনি সারা রাজ্য জুড়ে এই প্রকল্পের বিশেষ সুবিধা দিলেন। তিনি বলেন ভোটের আগে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই কথাই তিনি আজ রাখলেন তিন একরের বেশি জমি থাকলেই ১০০০০ টাকা পাবেন কৃষকরা। আজকের সভামঞ্চ থেকে রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প ও সাফল্য তুলে ধরেন। মাটিতীর্থ তিনি যা শুরু করেছিলেন রাষ্ট্র সঙ্ঘ তা অনুসরণ করছে। তিনি মহিলাদের শিক্ষার কথা তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কন্যাশ্রী স্কলারশিপ করে দিয়েছে সরকার যাতে কোনো মেয়ের পড়াশুনা চালিয়ে যেতে অসুবিধা না হয়। কোনো গরিব মেয়ে ১৮ বছর পর্যন্ত পড়াশুনা করে বিবাহের জন্যও ২৫০০০ টাকা দিচ্ছে সরকার। তিনি বলেন তাঁর সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কর্মসংস্থান। এবিষয়ে তিনি পাঁচামির কয়লাখনির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। কেন্দ্র সরকারের চার বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে নিয়োগের বিরোধিতা করেন। বেকার ছেলে মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে কেন্দ্র সরকার। বর্ধমানের ধানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন এই কৃষকরাই সারা রাজ্য তথা দেশের মানুষের অন্ন সংস্থান করছেন তাঁদের আগে দেখতে হবে। তিনি বর্ধমানের ল্যাংচা, সীতাভোগ ও মিহিদানার প্রশংসা করেন। এত তীব্র রোদ গরম উপেক্ষা করে সভায় আসার জন্য সকল মা, বোন ও ভাইদের তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। বর্ধমানের সভা শেষে তিনি দুর্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।