চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

অমল...উমিয়াম...রাস্তা...দইওয়ালা


 

অমল...উমিয়াম...রাস্তা...দইওয়ালা 


🟣  অভিজিৎ মিত্র



➡️  রাস্তাটা রোজ চলে যায়। অমল জানলা দিয়ে তাকিয়ে থাকে। একদম সিধে। চলতে চলতে রাস্তাটা যে কোথায় হারিয়ে যায়, ও বুঝতেই পারে না। রাস্তার সঙ্গে পাখিরাও চলে যায়, পাহাড়গুলোও, এমনকি পাইন গাছেরাও। চার বাই চার জানলা দিয়ে অমল দেখার চেষ্টা করে রোজ এরা কোথায় যায়, কিন্তু কোনদিন বুঝতে পারে না। 

অনেকদিন আগে এক দইওয়ালা ওকে বলেছিল, এই রাস্তাটা নাকি চলতে চলতে উমিয়াম বলে একটা লেকে গিয়ে পড়েছে। তারপর? সেটা আর দইওয়ালা বলেনি। লেকে পড়ে কি রাস্তাটা ডুবে গেল ? নাকি আবার অন্যদিকে উঠে পড়ল ? রাস্তাটা এদিকে আবার ফিরে এল না কেন ? পথের শেষ কোথায় ? অনেক প্রশ্ন। অথচ দইওলা আজকাল আর আসেই না। কে জানে, দইওলা এই বিশাল পাহাড়ে কোথায় ঘুমিয়ে পড়েছে। 

হু হু করে চলে যাওয়া গাড়িগুলোকে অমল হাত দেখায়, কেউ থামে না। অমলকে দেখতেই পায় না। সবাই ব্যস্ত। রাস্তার ঠিকানা জানতে অমল রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোষ্ট গুনতে শুরু করে। চোখের ওপর হাত রেখে যতদূর অব্ধি বহুদূর থেকে ভাসা সন্ধ্যের টিমটিমে আলো। রোজ সেই সংখ্যা বদলে যায়। তাহলে কি ল্যাম্পপোষ্টরাও রাস্তার সঙ্গে চলে যায় ? অমল রোজ ভাবে জানলা ছাড়িয়ে রাস্তায় দৌড়বে, কিন্তু ওকে নিয়ে যাবার কাউকে পায় না। 

অমল জানে ওর জন্য কেউ বসে থাকে না। রোজ ও রাস্তাকে জিজ্ঞেস করে, তুমি কি ফিরে আসবে ? কোন উত্তর আসে না। পাইনের পাতাগুলো একে একে চলে যায়, তারপর গাছগুলো, তারপর পাহাড়। কেউ বলে না লেকের জলে ঘুমভিজে উঠে রাস্তাটা চলতে চলতে ওর সামনে আবার কবে আসবে। 

অমল বসে থাকে। সেই পুরনো রাস্তার আশায়। 

(রবি ঠাকুরের ‘অমল ও দইওয়ালা’র কাহিনি অবলম্বনে এ কালের ঝুরোগল্প...আসল গল্পটা মনে আছে তো ?) 


লেখক ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি'র অধ্যক্ষ