চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

পল্লীকবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের জন্মদিনে গুনীজন সমাবেশে মুখরিত মধুকর প্রাঙ্গণ


 

পল্লীকবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের জন্মদিনে গুনীজন সমাবেশে মুখরিত মধুকর প্রাঙ্গণ 


জগন্নাথ ভৌমিক, মঙ্গলকোট : "বাড়ি আমার ভাঙন ধরা অজয় নদীর বাঁকে, জল যেখানে সোহাগ ভরে স্থলকে ঘিরে রাখে৷”। সেই স্থল, যেখানে পল্লীকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের জন্মভিটে মধুকর প্রাঙ্গণে আয়োজিত হলো কবির জন্মতিথিতে অনুষ্ঠান। কুমুদ সাহিত্য মেলার  উদ্বোধন করবেন কলকাতা হাইকোর্টের দুই প্রখ্যাত আইনজীবী – লেখক জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও শীর্ষেন্দু সিংহ রায় । প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের এজিপি আনসার মন্ডল। বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন মঙ্গলকোট থানার আই.সি পিন্টু মুখার্জী, প্রাক্তন ডেপুটি পুলিশ সুপার দিলীপ রঞ্জন ভাদুড়ী সহ অন্যান্যরা।

এবছর পল্লীকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের ১৪০ তম জন্মজয়ন্তী। এই উপলক্ষে কুমুদ সাহিত্য কমিটির পক্ষ মঙ্গলকোট থানার কোগ্রামে অজয় নদের তীরে কবির জন্মভিটেতে এক আনন্দঘন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার মধুকর প্রাঙ্গণে গাছগাছালি বেষ্টিত প্রাকৃতিক পরিবেশে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদ্যজনের সমাবেশ ঘটে। আজকের অনুষ্ঠানে  উপস্থিত হয়েছিলেন কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের নাতনি মহেশ্বেতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের নাতনি সোনালী কাজি সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন এর উদ্যোগে দু’দশকের বেশি সময় ধরে আয়োজিত হচ্ছে পল্লীকবির জন্ম উৎসব। প্রতি বছরই এই অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্টজনদের সম্বর্ধনা প্রদান করা হয়। এবারেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। ক্রমশঃ বাড়ছে অনুষ্ঠানের কলেবর। এগিয়ে আসছেন অনেকেই। মোল্লা জসিমউদ্দিন এই কাজে সর্বতোভাবে পাশে পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী প্রতিমা-কে।

কুমুদ সাহিত্য মেলার অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত চিকিৎসক সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ‘কুমুদ সাহিত্য রত্ন’ পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়। ‘বিধান রায় রত্ন’ পুরষ্কার দেওয়া হয় বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান শ্যামল ঘটকের হাতে ।

লোচনদাস রত্ন ' প্রদান করা হয় রাজ্য পুলিশের ডেপুটি কমিশনার তথা লোকসংস্কৃতির গবেষক সুখেন্দু হীরা, 'নজরুল ইসলাম রত্ন' প্রদান করা হয় রবীন্দ্র ভারতী সোসাইটির সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়-কে। 

বর্ধমানের প্রয়াত আইনজীবী 'সমীর রায় রত্ন' প্রদান করা হয় বর্ধমান জেলা আদালতের আইনজীবী সঞ্জয় ঘোষ'কে, 'বীরভূম রত্ন' তুলে দেওয়া হয় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল প্রাপ্ত তৃপ্তি বন্দ্যোপাধ্যায় এর হাতে, 'রেজাউল করিম রত্ন' প্রদান করা হয় দক্ষিণবঙ্গের প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নাসিমা খোন্দেকার -কে। 

সাংবাদিক ধীমান রায়কে বর্ধমান রত্ন বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করা হয়। 'খন্ডঘোষ রত্ন' দেওয়া হয় সংস্কৃতি প্রেমি সমাজসেবী অপার্থিব ইসলাম কে। এছাড়াও  বেশ কিছু পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয় পুলিশ আধিকারিক, আইনজীবি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের গুনী মানুষের হাতে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেন সমাজসেবী ও সাংবাদিক সফিকুল ইসলাম। এদিন কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুণীজনদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে  পল্লীকবির জন্ম ভিটে মধুকর প্রাঙ্গণ।