Scrooling

উচ্চমাধ্যমিক ২০২৫ প্রথম দশে ৭২ জন। প্রথম হয়েছে রূপায়ন পাল। রূপায়ন বর্ধমান সিএমএস হাইস্কুলের ছাত্র। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৭ ( ৯৯.৪ শতাংশ) # ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলের অদৃত সরকার। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬ নম্বর # ষষ্ঠ সিন্ধু জিব্রাল্টার জয় করে ইতিহাসের পাতায় সায়নী # বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় # সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষকের চাকরি গেল # আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বিজয়ী ভারত, নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয় বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হল ভারত # প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর শোকজ্ঞাপন # বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভার সাংসদ হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় # 'দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী

সংবাদপত্র বিক্রেতার মেয়ে এবং অটো চালকের ছেলে IAS, দুই কৃতির জীবনকাহিনী


 

সংবাদপত্র বিক্রেতার মেয়ে এবং অটো চালকের ছেলে IAS, দুই কৃতির জীবনকাহিনী 


ডিজিটাল ডেস্ক রিপোর্ট, সংবাদ প্রভাতী : জীবনে চলার পথে যত বাঁধাই আসুক না কেন, লক্ষ্যে অবিচল থাকলে, যেকোনও বাঁধাই সহজ হয়ে যায়। এই সত্যটি আবারও প্রমাণিত হল। আর সেটা প্রমাণ করে দিল মারাঠওয়াড়ার শেলগাঁও-র আনসার শেখ  এবং হরিয়ানার জয়সিংহপুরা গ্রামের  শিবজিৎ ভারতী। দুজনই  IAS পাশ করেছেন।

শিবজিৎ ভারতী হরিয়ানার জয়সিংহপুরা গ্রামের একজন সংবাদপত্র বিক্রেতার মেয়ে। অন্যদিকে আনসার শেখ এর বাবা পেশায় অটোরিক্সা চালক। দুই কৃতির জীবনকাহিনী দেশের আপামর ছাত্র ছাত্রীদের চলার পথে অনুপ্রাণিত করার সঙ্গে নতুন দিশা দেখাতে পারে। 

শিবজিৎ ভারতীর বাবা গুরনাম সাইনি সূর্য ওঠার আগেই বাড়ি থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন।  সংবাদপত্র বিক্রির এই কাজে বছরে মাত্র ৪ টে দিন ছুটি পান তিনি। মা শারদা সাইনি কাজ করেন অঙ্গনওয়াড়িতে। এসবের মধ্যে থেকেও নিজের পড়াশুনার জায়গাটা ঠিক রেখে জীবনের লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছিলেন ভারতী।

উল্লেখ্য ভারতী এইচসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম প্রচেষ্টাতেই তিনি যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন।   তারপর তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে তিনি UPSC সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করে যাবেন। ২০১৫ সালে পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি, চণ্ডীগড় থেকে গণিত অনার্স থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন ভারতী। ছোট বোন জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর হন এবং তাঁর ভাই একজন স্পেশাল চাইল্ড। নিজের এই সাফল্যের বিষয়ে ভারতী বলেন, ‘সাফল্যের জন্য কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন এবং এর অন্য কোনো বিকল্প নেই’। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এই সফলতার দিকে এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন পড়তে এবং ইউটিউবে ভিডিও দেখতে বেশ পছন্দ করেন ভারতী।

মেয়ের এই সাফল্যের জন্য ভারতীর বাবা খুবই গর্বিত। তবে পড়াশুনা চলাকালীন অনেকবার ভারতীর আত্মীয় তাঁর বিয়ের জন্য জোরাজুরি করতেন। কিন্তু তাঁর বাবা মা সর্বদাই ভারতীর পড়াশুনার প্রতি গুরুত্ব দিতেন। তাই আত্মীয়দের কথায় কান না দিয়ে, মেয়ের পরাশুনায় তাঁকে উৎসাহ দিতেন। 

অন্যদিকে আনসার শেখ এর বাবা ইউনুস সেখ আহমেদ পেশায় অটোরিক্সা চালক এবং মা একজন কৃষি শ্রমিক। তাঁর ভাই সপ্তম শ্রেণীর স্কুলছুট ছাত্র। সাংসারিক জীবনের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে আনসার শেখ ভারতের  কনিষ্ঠতম IAS অফিসার হিসাবে সাফল্য অর্জন করেছেন। জীবন সংগ্রামে ছোট থেকে রুজিরুটির জন্য আনসার শেখকে কাজ করতে হতো। তাঁদের এলাকা খরাপ্রবণ হওয়ায় চাষের কাজেও নানা সমস্যা দেখা দিত। এসবের মধ্যে থেকে আনসার উপলব্ধি করেছিলেন, তাঁকে জীবনে কিছু করে দেখাতে হবে এবং সাফল্য লাভ করতেই হবে। 

মারাঠি মাধ্যমে পড়াশুনা করার কারণে ইংরেজিতে কিছুটা কাঁচা ছিলেন আনসার। কিন্তু তা সত্ত্বেও হার মানেননি। সকল বাঁধাকে জয় করে নিজের জীবনে এই সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন আনসার শেখ। মাত্র ২১ বছর বয়সেই প্রথম প্রচেষ্টাতেই দেশের অন্যতম কনিষ্ঠ IAS অফিসার হিসাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন। নিজের এই সাফল্যের বিষয়ে আনসার সেখ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘যখন আমি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি, তখন আমাদের আত্মীয়রা আমার পড়াশুনা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ দিত। সেই কারণে শিক্ষকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতেন বাবা। এরপর বাবাকে সকলে বোঝায়, তোমার সন্তানের মধ্যে ধরে রাখার ক্ষমতা আছে, ও জীবনে সফল হবে। আর তারপর থেকে বাবা আমাকে পড়াশুনা ছেড়ে দেওয়ার জন্য কোনদিন জোর করেনি’।

 তিনি আরও জানান, ‘স্কুলে পড়াকালীন খাবার খারাপ হলেও মিড-ডে মিলের খাবারই ছিল ক্ষুদা নিবারণের একমাত্র পথ। এরপর দাদ্বশ শ্রেণিতে ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর গ্রামের মানুষ আমায় বেশ সম্মানের চোখে দেখতে শুরু করে। এরপর কলেজের প্রথম বর্ষে পদার্পণ করে ইউপিএসসি পরীক্ষা সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করি। এরপর সেইদিকেই বেশি আগ্রহ দিই এবং ২০১৫ সালে ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর, আমার স্বপ্ন সত্যি হয়’। 

                                                    সূত্র : বাংলা হান্ট