চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে নবীন প্রজন্মের সাংবাদিকরা উৎসাহিত


 

প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে নবীন প্রজন্মের সাংবাদিকরা উৎসাহিত 

কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির উদ্যোগ



ডিজিটাল ডেস্ক রিপোর্ট সংবাদ প্রভাতী : সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে জোয়ার এসেছে। এরফলে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। এখন সবাই সাংবাদিক, চিত্রসাংবাদিক। হাতে একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল থাকলেই কেল্লা ফতে। আর এদের কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়ার জন্য অনেক ব্র্যান্ডেড সাংবাদিকরাও মুখিয়ে থাকে। যতদিন ছুটিয়ে নেওয়া যায়। গ্ল্যামারের প্রলোভনে অনেকেই এদের পিছনে ছুটে মরে। ছবি, সংবাদ যোগান দিয়ে গেলেও সাংবাদিকতার প্রাথমিক পাঠ শেখার সুযোগ থাকে না। সেই ভাবনা থেকেই পূর্ব বর্ধমান জেলার কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটি ও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের উদ্যোগে একদিনের সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা  আয়োজন করা হয়েছিল বর্ধমান শহরের টাউন হলে। ১২ ডিসেম্বর প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শহীদুল্লাহ মুন্সি। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের এজিপি আনসার মন্ডল। উদ্বোধনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের সঙ্গে মঙ্গলাচরণে অংশ নেয় সমর্পিতা সাহা ও নিবেদিতা সাহা। সঙ্গে মুখে অসাধারণ শঙ্খধ্বনি দিয়ে টাউন হল মুখরিত করে তোলে সেখ সামিম।

 উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য, বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি, বর্ধমান পৌরসভার উপ পৌর প্রশাসক আইনুল হক, পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান, দৈনিক স্টেটসম্যান পত্রিকার সম্পাদক শেখর সেনগুপ্ত, ইন্ডিয়ান জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস দাস, পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবী সঞ্জয় ঘোষ,  বর্ধমান সহযোদ্ধার সম্পাদক প্রীতিলতা বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যাপক ওয়াজিজুল হক  প্রমুখ। আয়োজকদের পক্ষ থেকে অতিথিদের উত্তরীয় ও স্মারক দিয়ে সম্মানিত করা হয়।

কর্মশালার উদ্বোধন করে বিচারক শহীদুল্লাহ মুন্সি বলেন সংবাদ মাধ্যম হচ্ছে একটি আয়না। তবে সংবাদমাধ্যম যেন তার চরিত্র কখনো বদল না করে। সংবাদমাধ্যম বিক্রি হওয়া উচিত নয়, সংবাদমাধ্যম কখনো মাথা নত করবে না। এ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনে প্রায় দেড়শ জন নবীন প্রবীণ সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী পর্বের শেষে লোক সঙ্গীত পরিবেশন করেন কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পী দোলা ব্যানার্জী। যোগানৃত্য পরিবেশন করে গৌতমী দাস।

প্রশিক্ষণ পর্বের শুরুতেই  সাংবাদিক মহঃ আশিফ সুন্দর দুটি সায়রী পরিবেশন করে এই পর্বের সূচনা করেন। এরপর কলকাতা ও জেলার বিশিষ্ট সাংবাদিকরা সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বৈদুর্য ঘোষাল বলেন,  অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব। সংবাদ পরিবেশন করার পর যদি কোনো সাংবাদিককে অন্যায় ভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অত্যাচার করা হয় তাহলে তার পাশে আমরা আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। 

এদিনের সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সাংবাদিকতা ও ছবি তোলার বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন উত্তাল ঘোষ, খায়রুল আলম, পার্থ চৌধুরী, আমিনুর রহমান, সুরজিৎ ঘোষ হাজরা, রানা সেনগুপ্ত, মুকুল রহমান, গোপাল দেবনাথ, সুবল সাহা, পরেশ ঘোষ, প্রবীর চট্টোপাধ্যায়, ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

দুটি পর্বের অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক জগন্নাথ ভৌমিক, শফিকুল ইসলাম ও সেখ সামসুদ্দিন। আর এই সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা সুন্দর ও সফল ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার নেপথ্যে ছিলেন সাংবাদিক মোল্লা জসিমউদ্দিন, সোমনাথ ভট্টাচার্য, শেখ নিজাম আলম ও সাধন মন্ডল।

প্রশিক্ষণ শালার মূল উদ্যোক্তা কুমুদসাহিত্য মেলা কমিটির সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন বলেন, 'আয়োজক সংস্থার তরফে এই ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। আমরা আগামী দিনে আরও বড় আকারে সাংবাদিক প্রশিক্ষণ শিবির করব। সকলের সার্বিক সহযোগিতা আমাদের উৎসাহিত করেছে। আশাকরি  সংবাদ পরিবেশন ও আইনি বাধা নিয়ে কিছু জ্ঞান এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী নবীন প্রজন্মের সাংবাদিকদের অনেকটা কাজে লাগবে। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষার্থী সাংবাদিকদের শংসাপত্র দেওয়া হবে আগামী ৩ মার্চ কুমুদ সাহিত্য মেলার অনুষ্ঠানে।