সমাজসেবায় জামালপুরের ইসলামপল্লীর এক পরিবারের নজির
অতনু হাজরা, জামালপুর : যেকোনো কাজে সদিচ্ছাটাই বড় বিষয়। ইতিবাচক ভাবনা যে সামাজিক উন্নয়নেরও হাতিয়ার হতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ইসলাম পল্লীর একটি পরিবার। সমাজসেবা থেকে ক্রীড়া, সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রেই এই পরিবারের চার ভাই হাজী আনোয়ার মন্ডল, জামালউদ্দিন মন্ডল, কামালউদ্দিন মন্ডল এবং সাহাবুদ্দিন মন্ডল ওরফে পাঞ্জাব এর ভূমিকা প্রশংসনীয়। খেলার মাঠে গ্রামের ছেলেদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে পরিবারের ছোট ছেলে সাহাবুদ্দিন মন্ডল এর নামে তৈরি করলেন সাহাবুদ্দিন ফ্যান ক্লাব। সাহাবুদ্দিন মন্ডল আবার জামালপুর ১ নং পঞ্চায়েতের উপ প্রধান এবং যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলার সহ-সভাপতি। তাঁর মানবিক মুখের সঙ্গে তাঁর নিজের পঞ্চায়েত ছাড়িয়েও অনেকের কাছেই পরিচিত। মানুষের যেকোনো সমস্যায় তাঁর কাছে গেলে সাথে সাথে সাহায্য করার জন্য তিনি সহাস্যে সদা প্রস্তুত। তা সে যেকোনো সাহায্যই হোক না কেন। করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে।
তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সামাজিক বিষয়ে পিছিয়ে নেই। সম্প্রতি জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস ও শাখা সংগঠনের উদ্যোগে ৮ দলীয় নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাহাবুদ্দিন ফ্যান ক্লাব ফাইনালে ওঠে। ১৪ নভেম্বর নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয় পাড়াতলী সিদ্ধেশ্বরী ক্লাবের মাঠে। এই প্রতিযোগিতায় সাহাবুদ্দিন ফ্যান ক্লাবের টিমই বিজয়ী হয়। জেতার সুবাদে প্রাইজ মানি হিসাবে পায় ২০ হাজার টাকা। সেই প্রাইজ মানি নিতে উঠে মঞ্চে সাহাবুদ্দিন মন্ডলের দাদা কামালউদ্দীন মন্ডল সেই টাকা গ্রহণ করে তার সাথে আরো ৩০ হাজার টাকা যোগ করে মোট ৫০ হাজার টাকা তৃণমূল কংগ্রেসের জামালপুর ব্লক সভাপতি মেহেমুদ খানের হাতে তুলে দেন জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঠান্ডা বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্রকল্প রূপায়িত করার জন্য। শুধু তাই নয় প্রয়োজনে আরো টাকা লাগলেও তাঁরা পরিবারের পক্ষ থেকে সেটাও দিয়ে দেবেন বলে অঙ্গীকার করেন।
সাহাবুদ্দিন মন্ডল বলেন, তাঁর স্বর্গীয় পিতা আরশেদ মন্ডলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তাঁরা চার ভাই হাজি আনোয়ার মন্ডল, জামালউদ্দিন মন্ডল, কামালউদ্দিন মন্ডল ও তিনি নিজে সাহাবুদ্দিন মন্ডল এই টাকা দিলেন। পাঞ্জাব বাবু বছরের বিভিন্ন সময় নানা সামাজিক কাজ করে থাকেন। তিনি নিজে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ হয়েও তাঁর নিজের পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রামে মন্দির সংস্কারের জন্য তিনি আর্থিক সাহায্যও করেন। মেহেমুদ খান বলেন পাঞ্জাব অত্যন্ত ভালো ও গুণী এবং উদ্যমী ছেলে। তাঁর পরিবারকেও এলাকার সকলেই চেনেন, তাঁদের দান - ধ্যানের জন্য। তিনি তাঁদের ধন্যবাদ জানান, জামালপুর হাসপাতালে ঠান্ডা জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। তিনি জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে ও জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাঞ্জাবের পরিবারকে ধন্যবাদ জানান।