চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

ঐতিহাসিক সুন্নত অনুষ্ঠান


 

ঐতিহাসিক সুন্নত অনুষ্ঠান 


অতনু হাজরা, জামালপুর : এক ঐতিহাসিক সুন্নত অনুষ্ঠান হলো জামালপুরে। জামালপুর নাগরিক জনকল্যাণ সোসাইটির উদ্যোগে অভূতপূর্ব এই অনুষ্ঠানটি হয়।  মুসলিম সম্প্রদায়ের পুরুষ মানুষদের একটি অবশ্যকরণীয় কাজ হলো 'সুন্নত' যাকে সাধারণ ভাষায় বলা হয় 'মুসলমানি'। কিন্তু গ্রাম বাংলায় মানুষের মধ্যে কিছু কুসংস্কার এখনো কাজ করে, যার ফলে অনেক সময় এই সুন্নতের পর বাচ্ছাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু এই মুসলমানি যে একদম আধুনিক ভাবে সুসজ্জিত অপারেশন থিয়েটারে করানো যায় সে বিষয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো জামালপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জামালপুর নাগরিক জনকল্যাণ সোসাইটি। 

ইতি পূর্বেই তাঁরা নানা ধরণের সামাজিক কাজ করে এসেছেন,  বস্ত্রবিতরণ, কম্বল বিতরণ, বিশেষ করে করোনার সময় তারা প্রচুর মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছেন। আজ সোসাইটির কর্মকর্তারা এগিয়ে এলেন গণ সুন্নতের কাজে। রবিবার এলাকার কালারাঘাটের লাইফ কেয়ার নার্সিং হোমে ৪৪ জন বাচ্চার সুন্নত বা মুসলমানি করা হয়। তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন জামালপুর ব্লকের গ্রামীন চিকিৎসকদের সংগঠন। একদিকে জামালপুর নাগরিক জনকল্যাণ সমিতি আর অন্যদিকে গ্রামীন চিকিৎসকদের মধ্যে থেকে রাশেদ আলি, শেখ সুরমান আলি, শেখ ইমতিয়াজ সহ অন্যান্যরা।

 নার্সিংহোমের মালিক তথা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজ এবং সর্বোপরি যে ডাক্তারবাবুরা এই কাজটি করলেন ডা: কামাল হোসেন, ডা: আনারুল হক, ডা: প্রতাপ রক্ষিত সহ অন্যান্য ডাক্তার বাবুরা। এঁরা সকলে মিলে  অনুষ্ঠানটিকে বা পরিকল্পনামাফিক বাস্তবায়িত করলেন। জনকল্যাণ কমিটির পক্ষে পুরো অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন সংস্থার সভাপতি মেহেমুদ খান ও কোষাধ্যক্ষ ভুতনাথ মালিক। আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি, এস ডি পি ও আমিনুল ইসলাম, জেলা পরিষদের নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝি, জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার, জামালপুরে থানার অফিসার ইন চার্জ মিঠুন কুমার ঘোষ, জামালপুর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাহাবুদ্দিন মন্ডল, ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: ঋত্বিক ঘোষ। এছাড়াও ছিলেন ছাত্র নেতা বিট্টু মল্লিক, সংখ্যালঘু সেলের নেতা তাবারক আলী মন্ডল সহ মোহাম্মদ ওয়াসিম, মিঠু পাল এবং অন্যান্যরা। মেহেমুদ খান জানান, সম্পর্কে তাঁর এক নাতির মুসলমানি করানোর কথা হতেই এটা তাঁর মাথায় আসে এবং সেই অনুযায়ী তিনি এটি করার কথা চিন্তা করেন ও অন্যান্য সকলের সাথে আলোচনা করেন। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন গ্রামীন চিকিৎসকদের সংগঠন তাঁরা আজকের এই ক্যাম্পের প্রায় লক্ষাধিক টাকার ওষুধ বিনামূল্যে দেন। তার সাথেই চকদিঘী হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত অনিমেষ সেনগুপ্ত বাচ্চাদের রক্তের বিভিন্ন টেস্ট বিনামূল্যে করে দেন। তিনি আরো জানান তিনি যখন এই প্রস্তাব বিশিষ্ট ডাক্তারবাবুদের অর্থাৎ ডা: কামাল হাসান, ডা: আনারুল হককে বলেন তাঁরা সানন্দে রাজি হয়ে যান এবং তাঁকে এবিষয়ে উৎসাহ দেন। প্রশাসনের সকলে তাঁকে এই কাজে সাহায্য করেছেন বলে তিনি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। সবচেয়ে বড় কথা যিনি করেছেন সেই লাইফ কেয়ার নার্সিং হোমের মালিক মোহাম্মদ আজিজকে যিনি আজ তাঁর নার্সিংহোম বিনামূল্যে এই ক্যাম্পের জন্য ব্যবহার করতে দিয়েছেন। বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি জানান এটা একদম সম্পুর্ন ভিন্ন ধরনের নতুন একটা ব্যাপার। এই ধরণের একটি ক্যাম্প করার জন্য তিনি নাগরিক জন কল্যাণ সোসাইটিকে ধন্যবাদ জানান। বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন নাগরিক জনকল্যাণ সোসাইটি এর আগে নানা ধরণের সামাজিক কাজ করে এসেছেন আজ তাঁরা নতুনত্ব একটা জিনিস করলেন যেটা মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ডাক্তারবাবুরা সকলেই এই কাজের জন্য  মেহেমুদ বাবুর প্রশংসাই করেন। প্রত্যেক বাচ্চাকে নতুন পোশাক ও টিফিনের প্যাকেট দেওয়া হয়।