কোজাগরী পূর্ণিমায় প্রভাতের প্রকাশ

চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশ্বের জনপ্রিয় রাষ্ট্রনেতাদের শীর্ষে # ফুটবলে আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়, ফ্রান্স কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান মেসি # মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ সম্মান ওআরএসের জনক দিলীপ মহালনবিশকে #সরকারি কর্মচারীদের সুখের দিন শেষ, শ্রম কোড চালু হতে চলেছে সমগ্র ভারতে # পূর্বস্থলি-১ ব্লকের সাতজন জিমনাস্টিক প্রতিযোগীর পাশে দাঁড়ালেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ # একই পরিবারের চারজনের রহস্যজনক মৃত্যু, শিল্প শহর দুর্গাপুরে ব্যাপক আলোড়ন

কোজাগরী পূর্ণিমায় প্রভাতের প্রকাশ


 

কোজাগরী পূর্ণিমায় প্রভাতের প্রকাশ 


অতনু হাজরা, রায়না : দুর্গাপুজার সময় বাজারে মেলে নানা ধরণের ঝাঁ চকচকে শারদীয়া পত্রিকা। বর্তমানে মানুষ এই ধরণের পত্রিকা দেখতেই অভ্যস্ত। কিন্তু আজকের এই সুপার কম্পিউটার যুগেও একটু ব্যতিক্রমী পূর্ব বর্ধমানের রায়নার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম আনগুনা আর এই গ্রামের প্রভাত সংঘ নামে একটি ক্লাব। কারণ আজকের এই সময়েও তারা কোজাগরী লক্ষীপূজার দিন ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করে আসছে 'প্রভাত' নামে হাতে লেখা সাহিত্য পত্রিকা। যা সত্যিই আজকের দিনে ব্যতিক্রম। গ্রামের বয়স্ক মানুষদের সাথে কথা বলে জানা গেল যে ১৯৪৭ সাল থেকে প্রকাশ হয়ে আসছে এই পত্রিকা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে। সবথেকে বড় ব্যাপার পরম্পরা ভাবে আজকের নতুন প্রজন্মও জড়িয়ে পড়েছে এটির প্রকাশের সাথে। গ্রামের সকলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে। এমনিতেই খুব বর্ধিষ্ণু গ্রাম আনগুনা। গ্রামের যে সমস্ত মানুষ কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন তাঁরা সকলে গ্রামে ফেরেন এই লক্ষীপূজায়। তাই এই সময়টাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে প্রভাত পত্রিকা প্রকাশের সময় হিসাবে। এই বছর এই পত্রিকা ৭৫ বছরে পদার্পন করেছে। স্বভাবতই এবছর একটু ধুম ধাম করে প্রভাত সংঘ এই  'প্রভাত' পত্রিকা প্রকাশ করেন। এই পত্রিকা প্রকাশ করতে উপস্থিত ছিলেন জামালপুরের বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি, মেমারী কলেজের অধ্যাপক দেবদুলাল মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। অলোক কুমার মাঝি বলেন,  আজকের দিনে এই ধরণের হাতে লেখা সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ সত্যিই আশ্চর্য্যজনক ও প্রশংসাযোগ্য। তিনি ক্লাব কর্তৃপক্ষকে এর জন্য ধন্যবাদ জানান।

                   ১৯৪৭ সাল থেকে একাদিক্রমে প্রকাশ হয়ে আসছে এই পত্রিকা। বহু বিশিষ্ট ও বিখ্যাত মানুষের লেখা প্রকাশ হয়েছে এই পত্রিকায়। কালিদাস রায় থেকে শুরু করে কাজী নজরুল ইসলাম, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন সহ অনেকেই লিখেছেন এই পত্রিকায়। ছবি এঁকেছেন সত্যজিৎ রায়। শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র, রামকুমার চট্টোপাধ্যায় সহ বিশিষ্টজনেরা। ক্লাবের কর্মকর্তা মলয় নায়েক বলেন তাঁরা তাঁদের অগ্রজদের পরম্পরা বহন করে এই পত্রিকা প্রকাশ করে চলেছেন। 

গ্রামের ছেলেমেয়েরাই সুন্দর করে ৮/১২ মাপের আর্ট পেপার কেটে হাতে লেখা হয়। শুধু হাতে লেখাই নয়, সেই লেখার সঙ্গে থাকে সুন্দর আঁকা কারুকার্য। গ্রামেরই আঁকার শিক্ষক সৌমেন্দু মুখার্জী নিজে হাতে সমস্ত ছবি আঁকেন। লেখার কাজ করে গ্রামের নতুন প্রজন্মের ছেলে সন্দীপ সামন্ত, সৌভিক নায়েক, সুব্রত পাঁজা সহ অন্যান্যরা। এই পত্রিকা প্রকাশকে কেন্দ্র করে গ্রামে একটা উৎসবের চেহারা নেয়।


Post a Comment

0 Comments