চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

১৪ তম ভারত সংস্কৃতি উৎসবের প্রস্তুতি শুরু


 

১৪ তম ভারত সংস্কৃতি উৎসবের প্রস্তুতি শুরু 


জগন্নাথ ভৌমিক, বর্ধমান : ১৪ তম ভারত সংস্কৃতি উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এবছর আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ভারত সংস্কৃতি উৎসব। চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৪ সেপ্টেম্বর শহর বর্ধমানের পৌর অতিথিশালা বর্ধমান হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এখবর জানিয়েছেন, আয়োজক সংস্থা হিন্দুস্থান আর্ট এন্ড মিউজিক সোসাইটি'র কর্ণধার তথা উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ পোদ্দার। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির কার্যকরী সভাপতি অরূপ দাস, যুগ্ম আহ্বায়ক স্বামীনাথন পিল্লাই, কমিটির সদস্য তিলক দুবে সহ অন্যান্যরা। 

সাংবাদিক সম্মেলনে উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক পন্ডিত প্রসেনজিৎ পোদ্দার জানিয়েছেন, ভারত সংস্কৃতি উৎসব ISO 9001 : 2015 দ্বারা স্বীকৃত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা এবং উৎসব। এই উৎসবের আয়োজক হিন্দুস্তান আর্ট এন্ড মিউজিক সোসাইটি। এটি গ্লোবাল সোশাল এন্ড কালচারাল কাউন্সিল ভারত সরকার দ্বারা অনুমোদিত। এবারের ভারত সংস্কৃতি উৎসব হলো ১৪ তম সর্বভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত শাস্ত্রীয় নৃত্য আঞ্চলিক নৃত্য অংকন আবৃত্তি প্রতিযোগিতা এবং ২৭ তম আন্তর্জাতিক ভারতীয় সংগীত ও নৃত্যের উৎসব। গত বছরের মতো এ বছরও আমরা করোনা মহামারীর জন্য ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী সমস্ত বিধি-নিষেধ মেনে উৎসবের আয়োজন করতে চলেছি। ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধমানের টাউন হল অডিটোরিয়াম এবং ময়দানে সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব হবে কলকাতার চারটি জায়গায়। ২৩ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর কলকাতার সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়াম, বেঙ্গল গ্যালারি, অবনীন্দ্রনাথ গ্যালারী, আইসিসি আর-এ হবে উৎসবের অনুষ্ঠানগুলি। 

প্রসেনজিৎ বাবু আরও জানিয়েছেন, চলতি বছরের আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত যদি সমস্ত সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটে এবং আমরা পূর্বের মতো স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে পারি তাহলে বিগত বছরগুলোর মতো ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য থেকে শিল্পী এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলির সমাবেশ ঘটবে এই উৎসবে। এবং বিদেশী শিল্পীরাও উৎসবের মঞ্চে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠান করতে পারবেন।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে প্রসেনজিৎ পোদ্দার, বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চ, বর্ধমান টাউন হল এবং পান্থশালা ও বর্ধমান হাউস এর বুকিং সংক্রান্ত বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন, কয়েক বছর ধরে বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চে সিনেমা শো বন্ধ আছে কিন্তু সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো যখন হল বুকিং করে তখন বুকিংয়ের সময়সীমার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সংস্কৃতি লোকমঞ্চের তৎকালীন নিয়মাবলী বলবৎ করে। এর ফলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন এর ক্ষেত্রে আয়োজক সংস্থাগুলোকে সমস্যায় পড়তে হয়। বিষয়টি বর্ধমানের সংস্কৃতি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে উনি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন যদিও আমরা এই বিষয়টি নিয়ে বর্ধমানের সমস্ত শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া'র কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করবো। এছাড়া বর্ধমান টাউন হল, পান্থশালা এবং বর্ধমান হাউসের বুকিংয়ের বিষয়টিও সরলীকরণ করার জন্য আমরা বর্ধমান পৌরসভার নবনিযুক্ত প্রশাসক প্রণব কুমার চ্যাটার্জীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।

 সব শেষে প্রসেনজিৎ পোদ্দার বলেন, হিন্দুস্তান আর্ট এন্ড মিউজিক সোসাইটি সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সামাজিক নানা ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে। করোনা অতিমারি, আমফান ঝড় এবং ইয়াস ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের গত বছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে এছাড়া নামখানা, পাথরপ্রতিমা, দেবনগর, মৌসুমী দ্বীপ ও সুন্দরবন অঞ্চলে মোট ৪ হাজার ৬০০ পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই মহামারী সময় রক্তের সংকট মেটাতে মোট তিনটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে ১৭৮ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন। 

গতবছর হিন্দুস্তান আর্ট এন্ড মিউজিক সোসাইটি এবং উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে সারা ভারতবর্ষের মোট ২০০ জন শিল্পীকে ১৫০০ টাকা করে এককালীন সাহায্য করা হয়েছে। এবছর প্রসেনজিৎ বাবু এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন। তিনি জানান, করোনা মহামারীতে বর্ধমানের যে সমস্ত শিল্পী মারা গেছেন তাদের পরিবারবর্গকে ভারত সংস্কৃতি উৎসব এর পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে।