চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের নতুন জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়, কর্মী-সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা


 

পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের নতুন জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়, কর্মী-সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা


কাজল মিত্র, আসানসোল : বারাবনির তিনবারের বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় পশ্চিম বর্ধমান জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পদের দায়িত্ব পাওয়ার পরই সালানপুর, বারাবনি, চিত্তরঞ্জন ব্লকে কর্মীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে খুশির জোয়ার।বাজি ফাটিয়ে সবুজ আবির খেলে একে অপরকে মিষ্টি মুখ করিয়ে আনন্দে মাতলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা।

বারাবনি বিধান সভার কেও এই প্রথম জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেলেন। ফলে খুশি সকলেই।বিধানসভা ভোটের পূর্বে জেলা জুড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল। ঠিক তখনই দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন অপূর্ব মুখার্জী, কিন্তু সেইসময় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেলার ঘাস ফুল শিবিরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন তিনি। আর তার ফলেই জেলার ৩ টি আসন হাতছাড়া হয় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের। তারপর থেকেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি বদল নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। আর সেই জল্পনার অবসান ঘটল সোমবার। প্রসঙ্গত রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, নতুন করে সংগঠন গুলিকে সাজানো হবে। আর তারই জেরে এদিন নিজের ক্ষমতা খোয়ালেন, এত দিন ধরে জেলা সভাপতির আসন সামলে আসা অপূর্ব মুখার্জি।তবে শুধু তিনি নন, একই ভাবে ক্ষমতা চ্যুত হয়েছে শ্রমিক সংগঠনের নেতা বিশ্বনাথ পরিয়ালও। শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি বিশ্বনাথ পারিয়াল যে শুধু ভোটে হেরেছেন তা নয়, ভোটের আগে জীতেন্দ্র তেওয়ারিকে সাথে নিয়ে নানান ছক পাকাতে চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় সায়নী ঘোষের পরাজয় ভালো ভাবে মানতে পারেনি তৃণমূলের হাইকমান্ড। একই ভাবে উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের হারের জেরেও রুষ্ট হয় তৃণমূল নেতৃত্ব। আর তাই জেলায় নতুন করে দলকে ঘুরে দাঁড় করতে দিদির ভরসা এবার পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। তার কাঁধেই জেলার দলীয় দায়ভার তুলে দিল তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব। এদিন তৃণমূল রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে জেলার নতুন সভাপতি করা হয়েছে বিধান উপদ্যায় কে। অন্য দিকে শ্রমিক সংগঠনে জেলা সভাপতি পদ থেকে বিশ্বনাথ পারিয়ালকে সরিয়ে তার জায়গায় আনা হয়েছে অভিজিৎ ঘটক কে।পাশাপাশি মহিলা সংগঠনের জেলা সভাপতি থাকলেন মিনতি হাজরা। দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকায় কনভেনার পদে আনা হলো মৃগেন পালকে। আসানসোল শহর এলাকায় কনভেনার করা হয় ভি শিবদাসন দাসুকে এবং রানীগঞ্জ শহরের সভাপতি হলেন রূপেশ যাদব। অন্যদিকে জেলা তৃণমূলের নতুন চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়।

এদিন বিধান উপাধ্যায় জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর উৎসব মেতে উঠে বারাবনি বিধানসভা সহ অন্যান্য বিধানসভা অঞ্চলগুলি, বাজি ফাটিয়ে এবং আবির খেলে কর্মীরা মিষ্টি মুখ করানো হয় সমস্ত কর্মী সমর্থকদের।

এদিন দায়িত্ব পাওয়ার পর বিধানবাবু জানান মুখ্যমন্ত্রী ভরসা করে তার কাঁধে এই দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি চেষ্টা করবেন দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। তিনি আরো বলেন, এবার পশ্চিম বর্ধমানে বিরোধী শূন্য হবে, আরো মজবুত হবে তৃণমূল কংগ্রেস।

এই প্রসঙ্গে বারাবনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অসিত সিংহ বলেন, আজ আমাদের খুশির দিন দিদি এত বড় দায়িত্ব আমাদের বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়কে দিয়েছেন, আমি জানি বিধান উপাধ্যায় সংগঠন ভালো বোঝে তার প্রমাণ আমাদের বারাবনি বিধানসভা। এই বিধানসভায় কোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই এবার সারা পশ্চিম বর্ধমানে থাকবে না।

এই প্রসঙ্গে সালানপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভা পতি মহম্মদ আরমান বলেন, আনন্দে ভরে গেছে। বারাবনি বিধানসভা অঞ্চল উৎসবমুখর। দিদি বিশ্বাস করে বিধান বাবুকে বড় একটা দায়িত্ব দিয়েছেন। এবার আরো বেশি উন্নয়ন হবে, পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন আরো বেশি শক্তিশালী হবে।

এই প্রসঙ্গে সালানপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ভোলা সিং জানান, দায়িত্ব বাড়লো তবে এবার উন্নয়ন আরো বেশি হবে।বারাবনি বিধানসভার মত একজোট সংগঠন এবার পশ্চিম বর্ধমানে দেখা যাবে, খেলা হবে।