চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

স্কুল কর্তৃপক্ষের চরম ত্রুটি, ১৩৭ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মার্কশিট না পেয়ে হতাশ


 

স্কুল কর্তৃপক্ষের চরম ত্রুটি, ১৩৭ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মার্কশিট না পেয়ে হতাশ



কাজল মিত্র, সালানপুর : উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবার পর ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও সালানপুর ব্লকের আছড়া যজ্ঞেশ্বর ইনস্টিটিউশনের ২৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩৭ জন পরীক্ষার্থী মার্কশিট হাতে না পেয়ে হতাশ। ফল প্রকাশের পরই পরীক্ষার্থীরা মার্কশিট না পেয়ে স্কুল চত্বরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। সেদিন পরীক্ষার্থীদের কে প্রধান শিক্ষক জানান স্কুল থেকে সকল ছাত্র - ছাত্রীর ফর্ম সঠিক সময়ে জমা করেছেন সংসদ অফিসে। তাই মার্কশিট না আসার বিষয়টি ঊর্ধতম কর্তৃপক্ষ কে জানিয়েছেন এবং তারা বিষয় টি দেখছেন। সেই আশ্বাসে সকল ছাত্র ছাত্রী ফিরে যায়। কিন্তু মার্কশিট না পাওয়ার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা সোমবার স্কুলে যায় এবং তাদের পুনরায় ফেরত পাঠানো হয় কিন্তু ২৭ জুলাই নিশ্চিত হয়ে যায় যে ছাত্র - ছাত্রীদের তথ্যাবলী সংসদে জমা দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। যদিও প্রথম দিকে সকলেই ভেবেছিলেন সংসদের ভুলে এরা মার্কশিট পাচ্ছে না। কিন্তু স্কুলের এতবড় গাফিলতির কারনে ১৩৭ জন ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারের মুখে। তাদের হয়ত একবছর নষ্ট পর্যন্ত হতে পারে।


এই অবস্থায় স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে সমস্ত দিক দিয়ে শেষ চেষ্টা করে দেখা হচ্ছে যদি এদের রেজাল্ট কোনভাবে সংসদ থেকে আনা যায়। সেকারনেই বৃহস্পতিবার আছড়া স্কুলে প্রশাসনিক ভাবে এক বৈঠক ডাকা হয়।

আর এই খবর পেয়ে স্কুলে জমায়েত হয় ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আগে থেকেই বিরাট সংখ্যক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে রাখা হয় স্কুল গেটের সামনে এবং বন্ধ রাখা হয় স্কুল। শেষ পর্যন্ত স্কুল এর পরিবর্তে সেই আলোচনা পঞ্চায়েত দফতরে করা হয়। সেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিল দত্ত সহ স্কুল এস আই পাপিয়া মুখার্জী, বিধায়ক প্রতিনিধি ভোলা সিং, সালানপুর ব্লক যুগ্ম আধিকারিক অরুনাভ মন্ডল, স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্য গৌরাঙ্গ তেওয়ারী, পঞ্চায়েত উপপ্রধান হরেরাম তেওয়ারী সহ স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকগন উপস্থিত ছিলেন। এই আলোচনা থেকেই উঠে আসে সালানপুর ব্লকের বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছড়া যজ্ঞেশ্বর ইনস্টিটিউশন স্কুলের ১৩৭ জন পড়ুয়ার উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে এই ছাত্র - ছাত্রীদের কোন তথ্যই স্কুল কর্তৃপক্ষ জমা দেননি ফলে তাদের অনলাইন মাধ্যমেও তাদের কোন রেজাল্টই দেখায়নি।


তবে ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভেবে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে চেষ্টা করা হয় যাতে নতুন করে এদের তথ্য জমা দিয়ে রেজাল্ট তৈরি করিয়ে আনা যায়। সেজন্য রাজ্যের স্কুল শিক্ষা সচিব, শিক্ষা মন্ত্রী সহ সমস্ত জায়গায় দরবার করা হয়েছে। যদিও সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস স্কুলকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন স্কুল থেকে কোনাে তথ্য না আসায় তাদের পক্ষে আর কিছু করা সম্ভব নয়।


তবুও আছড়া পঞ্চায়েতের আলোচনা সভায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক, স্কুল কমিটি, সালানপুর ব্লকের বিডিও, চিত্তরঞ্জন শিক্ষা চক্রের এস আই, বিধায়ক প্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে অন্যান্যরা কিছু একটা উপায় বের করার জন্য চেষ্টা করতে থাকেন।

সকল বিষয়ে জেলাশাসকের কাছে আর্জি করার বিষয়ে মনস্থ করেন সকলেই। তাছাড়াও রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী তথা আসানসােলের বিধায়ক মলয় ঘটকের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যােগাযােগ করে এই ১৩৭ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর জীবন বাঁচানাের আর্জি জানানাে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


এদিকে সকাল থেকে স্কুলের সামনে উপস্থিত থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা খবর পেয়ে পঞ্চায়েতের সামনে এসে উপস্থিত হয় এবং সেখানে তারা মার্কশিট পাওয়ার আশা নেই সেই কথা শোনার পর ছাত্র ছাত্রীরা অজানা আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সকলে প্রধান শিক্ষক সহ কর্মচারী উত্তম এর বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত অফিসের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অনেকে আবার কান্নাকাটি শুরু করে, কেউ আবার আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে।