চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

বঙ্গভঙ্গের বিরোধীতায় সরব, মামলার সপক্ষে লেখককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ

           অভিযোগকারী লেখক ও গবেষক রাধামাধব মণ্ডল

 

বঙ্গভঙ্গের বিরোধীতায় সরব, মামলার সপক্ষে লেখককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ



ডিজিটাল ডেস্ক রিপোর্ট, সংবাদ প্রভাতী : বিজেপি'র বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং আলিপুর দুয়ারের সাংসদ জন বার্লারা প্রকাশ্যে পশ্চিমবঙ্গকে ভাগ করা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। গণমাধ্যমেও বিবৃতি দিয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, জঙ্গলমহলকে পৃথক রাজ্য করা হোক। বিজেপি সাংসদ জন বার্লারও সেই আগুনকে উসকে দিয়ে, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য চেয়ে গণমাধ্যমে দাবী তুলেছেন। বিজেপি নেতাদের এমন পরপর বিবৃতিতে দলও চাপে পড়েছে। প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে বিজেপি এর দায় অস্বীকার করে, ব্যক্তিগত মতামত বলে উল্লেখ করেছেন। 

কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত দুই সাংসদের এমন সংবিধানবিরোধী মন্তব্যে রাজ্য জুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বহু মানুষ মুখ খুলেছেন। আর সেই বিতর্কেই গত ২৩ জুন বর্ধমান জেলা পুলিশের কাছে, এই দুই বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতা আইনে গ্রেফতারির দাবী জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের তরুণ লেখক, গবেষক রাধামাধব মণ্ডল।

তিনি পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিঙলা, এসপি কামনাশিষ সেন এবং আউশগ্রাম থানায় ইমেল মারফৎ তাঁর প্যাডে অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং জন বার্লার এর নামে অভিযোগ করেন। আর সেই অভিযোগকেই যাতে এফআইআর বলে গণ্য করা হয় তার আবেদনও জানান লেখক।

এই নিয়ে রাধামাধব মণ্ডল তাঁর বক্তব্যে বলেন, "কোনো জনপ্রতিনিধি সাংবিধানিক রীতি নীতি মেনে, জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে, সংবিধান মেনে শপথ নেওয়ার পর প্রকাশ্যে এমন ভাবে, বাংলা ভাগের পক্ষে সওয়াল করতে পারেন না। এটা শুধু বেআইনি নয়! গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধও। বাক স্বাধীনতার নামে দাঙ্গার ইন্ধন দেওয়া কোনো সাংসদের কাজ নয়। তাই দ্রুত গ্রেফতার করা হোক দুই সাংসদকে।"



২৩ জুনের অভিযোগের পর রবিবার সকালে আউশগ্রাম থানায় লেখক রাধামাধব মণ্ডলকে নোটিশ করে ডেকে পাঠায় পুলিশ। দীর্ঘক্ষণ কেশের তদন্তকারী অফিসার এসআই উত্তম পাল লেখক রাধামাধবের থেকে দুই অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদের সেদিনের বক্তব্যের বিরোধীতায় লেখকের যুক্তি গুলো লিপিবদ্ধ করেন। এবং কেশের স্বপক্ষে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং সাংসদ জর্ন বার্লার সেদিনের বিতর্কিত বক্তব্যের ভিডিও টেপ নেন। যদিও এবিষয়ে জিজ্ঞেসা করা হলে আউশগ্রাম থানার আই সি সুব্রত ঘোষ বলেন, 'জেলা পুলিশের নির্দেশে আইনি পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। লেখকের বক্তব্য নিয়েছি। '

তবে এবিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে জেলা বিজেপি নেতা শ্যামল রায় বলেন, "যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। তবে এটা বক্তাদের নিজস্ব বক্তব্য। এর সঙ্গে দলের কোনো যোগ নেই।"  পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, 'ভোটের আগে থেকেই বাংলা ভাগের এই চক্রান্ত করে চলেছে বিজেপি। এখন তাদের সাংসদের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। তবে এই নিয়ে লেখক রাধামাধব মণ্ডলসহ যারা আইনি পথে ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তাকে সাধুবাদ জানাই। আরও বহুমানুষ এই বাংলা ভাগের বিজেপি চক্রান্তের বিরোধীতায় পথে নামবে।"

এদিকে আগামীকাল রাজ্য বিজেপি'র কার্যকারিনী বৈঠক হওয়ার কথা। জানা গেছে, ওই বৈঠকে বিজেপি'র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা উপস্থিত থাকবেন। তাই দলের অন্দরেই সংশয় রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, আগামীকালের বৈঠকে ওই দুই সাংসদের বিরুদ্ধে কেউ কেউ ক্ষোভ উগড়ে দিতে পারেন।