চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত


 


প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত


🟣 রাধামাধব মণ্ডল, কলকাতা 

 

➡️ একের পর এক খারাপ খবরে আমরা বিপর্যস্ত! আবারও এক প্রতিভার মৃত্যু। প্রয়াত বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। দীর্ঘ দিন তিনি বয়সজনিত নানা সমস্যাই ভুগছিলেন। দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে এদিন তাঁর মৃত্যু হয়। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। বয়সজনিত কারণে শারীরিক নানা সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে কিডনির সমস্যায়ও ভুগছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরেই ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রে এক সবুজ সোনালি অধ্যায়ের অবসান হল বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবারও তাঁর ডায়ালিসিস হয়েছিল। বেশ ছিলেন অন্যান্য দিনের মতো। তবে এবার যেন কেমন অবসন্ন হয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় এই বিশিষ্ট পরিচালকের। এদিন সকালে তাঁর পরিবারের অন্যান্যরা দেখেন, তাঁকে ডাকলে তাঁর সাড়া মিলছে না। এরপরই চিকিৎসক বাঁকা হয়ে। চিকিৎসক তাঁকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজই প্রয়াত পরিচালকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো 'দূরত্ব', 'নিম অন্নপূর্ণা', 'গৃহযুদ্ধ', 'ফেরা', 'বাঘ বাহাদুর', 'উত্তরা' ইত্যাদি। 'তাহাদের কথা', 'চরাচর' তাঁর বহু প্রশংসিত ছবি।

পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র জগতে। পরিচালকের প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। শোকবার্তায় লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়াও পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন পরিচালক, অভিনেত্রী অপর্ণা সেন। তিনি বলেছেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সিনেমা ছিল কবিতার মতো।

১৯৪৪ সালে ১১ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার আনারা গ্রামে জন্ম আজকের পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর। বাবা ছিলেন রেলের চিকিৎসক। তাই ছোটবেলা কেটেছে রেল হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায়, বাবার বদলি সুত্রে। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল। তবে উৎসাহ ছিল ফিল্ম সংক্রান্ত পড়াশোনাতেও। ১৯৬৮ সালে তথ্যচিত্র তৈরি করে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর।

১৯৭৮-এ প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি "দূরত্ব" পরিচালনা করে জাতীয় পুরস্কারের শিরোপা পেয়েছিলেন তিনি। এরপর নিম অন্নপূর্ণা, গৃহযুদ্ধ, বাঘ বাহাদুর, তাহাদের কথা, চরাচর, মন্দ মেয়ের উপাখ্যান-সহ একের পর এক উল্লেখযোগ্য ছবি তিনি নির্মাণ করেন। পুরস্কারের ঝুলিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি জাতীয় পুরস্কার। এছাড়াও চলচ্চিত্র পরিচালনায় বিদেশি পুরস্কারও পেয়েছেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। দীর্ঘ দিন সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর গল্প নিয়েও কাজ করেছেন তিনি।