চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

পূর্ব বর্ধমানে দু-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া পঞ্চম দফার ভোট পর্ব প্রায় নির্বিঘ্নে


 

পূর্ব বর্ধমানে দু-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া পঞ্চম দফার ভোট পর্ব প্রায় নির্বিঘ্নে



ডিজিটাল ডেস্ক রিপোর্ট, সংবাদ প্রভাতী : পঞ্চম দফায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৮ টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ পর্ব শেষ হয়েছে। এখানে ভোট পড়েছে প্রায় ৮২ শতাংশ। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া শনিবারের ভোট পর্বে পূর্ব বর্ধমান জেলায় বড়ো কোনো অঘটন ঘটেনি। তবে এদিনের সকালটা শুরু হয়েছে রক্তপাত দিয়ে। বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের সরাইটিকর অঞ্চলের সরাইটিকর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪টি বুথের মধ্যে ৭২ নম্বর বুথে অজিত সরেন নামে বিজেপি'র এজেন্ট আক্রান্ত হয়েছেন। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। আহত ওই এজেন্ট কে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্ধমান উত্তরের বিজেপি প্রার্থী রাধাকান্ত রায় এজেন্ট আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। 




বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নীলপুর বটতলা এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে মুহূর্তে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ডেপুটি পুলিশ সুপার (সদর) এবং বর্ধমান থানার আইসি সহ বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুথের বাইরে তৃণমূল-বিজেপি উভয় দলের কর্মী সমর্থকরা জমায়েত হয়েছিলেন। তারপরই উত্তেজনা ছড়ায় । একে অপরকে লক্ষ্য করে ইঁট ছুঁড়তে থাকে । পুলিশ এসে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। অন্যদিকে গলসির ২ নম্বর ব্লকের ভুড়ি অঞ্চলের জাঁহাপুরে তৃণমূল কর্মীদের মারধোরের অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এলাকার ৭৭ নম্বর বুথ এজেন্টকে মারধোর করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিল বিজেপি বাধা দিতে গেলে তৃণমূলের এজেন্টকে মারধোর করে। যদিও বিজেপি নেতা অভিজিৎ সিকদার তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। 




এদিকে বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের পারাপুকুরে বিজেপির বুথ ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পারাপুকুরের ৯৪ নম্বর বুথের সামনে অশান্তি বাধে। বিজেপির অভিযোগ, বিজেপির বুথ ক্যাম্পে হঠাৎই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা হামলা চালায়। বিজেপির কর্মীদের মারধর করে। কয়েকজন বিজেপি কর্মী জখম হয়। ভেঙে দেওয়া হয় অস্থায়ী ক্যাম্প। যদিও বিজেপির আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রস। বিজেপির উপর হামলার পরই পাল্টা বিজেপি কর্মীরাও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে হামলা চালায়। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় পার্টি অফিসে। এই ঘটনায় বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী খোকন দাস বলেন, বিজেপি নিজেদের বুথ ক্যাম্প নিজেরাই ভেঙে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আসলে ভোট শেষের মুখে যখন বুঝে গেছে মানুষ ওদের সঙ্গে নেই তখন তৃণমূলের পার্টি অফিস ভেঙে ক্ষমতা দেখাচ্ছে।




বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দী বলেন, বর্ধমান দক্ষিণে যে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে তাতেই তৃণমূলের হার্মাদ ও নেতারা ভয় পেয়েছে। তাই তাদের বুথ ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে।




রায়না বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শম্পা ধাড়া ইভিএম খারাপ নিয়ে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন। এই কেন্দ্রে ১৫ টি ইভিএম এবং দু'টি ভিভিপ্যাট মেশিন খারাপ হয়েছে। ভোট কিছুটা বিলম্বিত হলেও মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। দু-একটি জায়গায় বিজেপি অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। তবে সুবিধা করতে পারেনি। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করতে এলাকার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন।




খন্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহঃ অপার্থিব ইসলাম বলেন, খন্ডঘোষ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নবীন বাগ নিশ্চিত ভাবে জিতছেন। 





জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহেমুদ খান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেন, জামালপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অলোক কুমার মাঝি অবশ্যই জিতবেন। বিজেপি নানা ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। মদ, মাংস খাইয়ে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করেছে। জেলা নির্বাচন দপ্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে। মদ্যপ যুবকদের জড়ো করে ঝামেলা করতে ছক কষেছিল। পুলিশে অভিযোগ জানাতেই ভেস্তে যায়। হুগলির বর্ডার অঞ্চলে লোক ঢুকিয়ে অশান্তি করার চক্রান্ত করেছিল। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ জানানো হয়েছে। জামালপুরে ১৫টি ইভিএম খারাপ হওয়ার ফলে সাময়িক সমস্যা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও তিনি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তবে বিজেপি যত চেষ্টাই করুক শেষ হাসি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীই হাসবেন।