চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী # ফুটবলে আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়, ফ্রান্স কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান মেসি # বাংলার চিকিৎসক উজ্জ্বল পোদ্দার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরার তালিকায় #সরকারি কর্মচারীদের সুখের দিন শেষ, শ্রম কোড চালু হতে চলেছে সমগ্র ভারতে # পূর্বস্থলি-১ ব্লকের সাতজন জিমনাস্টিক প্রতিযোগীর পাশে দাঁড়ালেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ # একই পরিবারের চারজনের রহস্যজনক মৃত্যু, শিল্প শহর দুর্গাপুরে ব্যাপক আলোড়ন

প্রাণের মানুষ শঙ্খ ঘোষ (১৯৩২-২০২১)


 

প্রাণের মানুষ শঙ্খ ঘোষ 

            (১৯৩২-২০২১)



  🟣 শ্রীনীল মজুমদার 



 ➡️ আমরা বাঙালি হিসেবে এই সময় দাঁড়িয়ে যাদের নিয়ে গর্ব করতাম, তাঁদের একজন ছিলেন শঙ্খ ঘোষ। মনীন্দ্রকুমার আর অমলাবালার সন্তান চিত্তপ্রিয়, শঙ্খ নামেই বিখ্যাত হয়েছেন। ১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি অধুনা বাংলাদেশের চাঁদপুরে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে পাবনা জেলার পাকসির চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে আই এ এবং ১৯৫১ সালে বি এ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ ডিগ্রি পান ১৯৫৪ সালে। বঙ্গবাসী কলেজ,জঙ্গীপুর কলেজ, বহরমপুর গার্লস কলেজ ,সিটি কলেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় – সব জায়গাতেই অধ্যাপক হিসেবে নাম রেখে গিয়েছিলেন। বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রভবনের অধ্যক্ষ (১৯৮৯-৯০)ও ভিজিটিং ফেলো (১৯৭৮) হিসেবে উভয় ক্ষেত্রেই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও ভিজিটিং প্রোফেসর ছিলেন।

               তাঁর অসংখ্য কবিতাগ্রন্থ বাঙালির প্রাণের সম্পদ। দিনগুলি রাতগুলি (১৯৫৬), নিহিত পাতালছায়া (১৯৬৭), মূর্খ বড় সামাজিক নয় (১৯৭৪), বাবরের প্রার্থনা (১৯৭৬), পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ (১৯৮০), ধূম লেগেছে হৃৎকমলে (১৯৮৪), গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ (১৯৯৪) সহ একাধিক উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ মুগ্ধ পাঠককে উপহার দিয়েছেন তিনি।

                         কালের মাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক (১৯৬৯), এ আমির আবরণ (১৯৮০), কবিতার মুহূর্ত, (১৯৮৭), দামিনীর গান (২০০২) – এইসব গদ্যগ্রন্থের লেখক তিনি অমর হয়ে থাকবেন। স্বাদু গদ্যে জটিল বিষয়ের উপস্থাপনা পাঠক/গবেষকদের বারবার ঋদ্ধ করেছে। 

                    ছন্দের বারান্দা (১৯৭২) গ্রন্থে সহজে ছন্দের অ-আ-ক-খ এর পাঠ দিয়েছেন। কুন্তক ছদ্মনামে শব্দ নিয়ে খেলাতে বানানের সহজ পাঠ দিয়েছেন তিনি। পাপিরাস-জীবনী-গ্রন্থমালার জন্যে লিখেছেন বিদ্যাসাগরের জীবনী। ছোটদের জন্যে ছড়ার বইগুলিও সমানভাবে পাঠকপ্রিয়।

                                ১৯৭৭ সালে মূর্খ বড় সামাজিক নয় কাব্যগ্রন্থের জন্য পান নরসিংহ দাস পুরস্কার। বাবরের প্রার্থনা গ্রন্থের জন্যে পান সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। কন্নড় থেকে বাংলায় রক্তকল্যান অনুবাদ করে ১৯৯৯ সালেও সাহিত্য আকাদেমি পান তিনি। ১৯৮৯ সালে পান রবীন্দ্র পুরস্কার, ধূম লেগেছে হৃৎকমলে কাব্যগ্রন্থের জন্য। পেয়েছেন সরস্বতী সম্মান গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ গ্রন্থের জন্যে। এছাড়াও পদ্মভূষণ, জ্ঞানপীঠ, বিশ্বভারতীর দেশিকোত্তম সহ একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

                         আজ সকাল ১১.৩০ টা নাগাদ করোনা কেড়ে নিল এই প্রাণের মানুষটিকে। বলিষ্ঠ প্রতিবাদী মানুষটির কায়িক মৃত্যু হল ঠিকই। কিন্তু তিনি তাঁর অসংখ্য সৃষ্টির মধ্য দিয়েই আমাদের কাছে সবসময় অমর হয়ে থাকবেন। 





Post a Comment

0 Comments