চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

আউশগ্রামের জঙ্গলে সশস্ত্র আদিবাসী শিকারিরা

 


আউশগ্রামের জঙ্গলে সশস্ত্র আদিবাসী শিকারিরা


🟣  রাধামাধব মণ্ডল


➡️  শীতের সকাল, তাতে কুয়াশার দাপট। চোখের বাইরে তেমন দেখা যায় না। ঠিক তখনই বনদপ্তরে খবর আসে সশস্ত্র কিছু আদিবাসী মানুষ দলবেঁধে চলেছে অজয় নদের চরে। তীরধনুক, বর্শা, কাটারি নিয়ে। তাঁদের সামনে সামনে কয়েকটা কুকুর। অজয় নদের চরের জঙ্গলে, কেশের ঝোঁপে তিতির, চড়ুই পাখির দল থাকে। শিয়াল, খটাশ'রা থাকে। থাকে মেঠো ইঁদুর। সশস্ত্র বাহিনীর পায়ের শব্দ পেতেই ছোটাছুটি শুরু করে তারা। যদিও অবশেষে বনদপ্তরের আধিকারিকের জন্য প্রাণে বাঁচে তারা।




জানা যায়, মঙ্গলবার আদিবাসীরা শিকারে বের হয়। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের জঙ্গলমহলে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের কয়েকশো মানুষ অস্ত্রশস্ত্র সহ শিকারি কুকুরকে সঙ্গে নিয়ে আউশগ্রাম জঙ্গলে ঢুকে পড়ে শিকারের উদ্দেশে। শেষ মুহূর্তে খবর পেয়ে, ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিকারি বাহিনীকে রুখতে সক্ষম হয় বিটের স্থানীয় আধিকারিকের দলটি। বন্যপ্রাণী, পক্ষীকূলকে এই যাত্রায় প্রাণে বাঁচালেন আউশগ্রামের আদুরিরার বিট অফিসার আসরাফুল ইসলাম। সক্রিয়তায় শিকারের উদ্দেশ্যে আসা আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা জঙ্গল ছেড়ে পালিয়ে যায় ভয়ে। অভিযোগ, বীরভূম জেলার নদী পাড়ের বিভিন্ন গ্রাম, হালসিডাঙা, সেনকাপুর, শ্রীচন্দ্রপুর থেকে অজয় নদ পেরিয়ে আউশগ্রাম জঙ্গলমহলে হানা দিয়েছিল প্রায় কয়েকশো সশস্ত্র আদিবাসী লোকজন। বাংলা মাসের প্রথম মঙ্গলবার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ শিকারে বের হয়, দলবেঁধে। সেই অনুযায়ী এদিন ছিল প্রথম মঙ্গলবার, তাই তারা দলবেঁধে শিকারে বের হয়। 



মঙ্গলবার কাকভোরে আউশগ্রামের রামনগরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কাছে দেখা যায় অজয় নদের চর দিয়ে বীরভূম জেলা থেকে কয়েকশো আদিবাসী সারি দিয়ে এগিয়ে আসছে, নদী ও বালিয়াড়ি পেড়িয়ে এপাড়ের জঙ্গলে। অপরদিকে ততক্ষণে তাদের মাঙ্গলিক প্রথা অনুযায়ী ভূঁয়েড়া বটতলার কাছে আউশগ্রামের শতাধিক আদিবাসীও শিকারের উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে সে খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবর যায় আদুরিরার বিট অফিসার আসরাফুল ইসলামের কাছেও। তিনি তার সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ছাড়াই বীরভূমের ওই শিকারিদলের সামনাসামনি দাঁড়িয়ে, তাদের বোঝান। বনদপ্তরের অফিসার আসরাফুল ইসলামের বক্তব্য, “আউশগ্রাম জঙ্গলে ইদানিং ময়ূরের সংখ্যা বেড়েছে। কাঁকসা থেকে তারা ঢুকেছে। ময়ূরের বাচ্চারা মাঝেমধ্যেই আশপাশের গ্রামে ঢুকে পড়ে। এছাড়া প্যাঙ্গোলিন, সজারু, বনবিড়াল তো রয়েছেই। শিকারিরা একবার জঙ্গলে ঢুকে পড়লে প্রথমেই তারা ময়ূরগুলোকে টার্গেট করে মারবে। অনেক কষ্টে শিকার আটকনো যায়। তবে স্থানীয় মানুষও আমাদের সহযোগিতা করেছেন।”