ফকির লালনের স্মরণ উৎসব
নিজস্ব সংবাদদাতা, আউশগ্রাম : অমরপুরের জালিকাঁদর গ্রামে ফকির লালন স্মরণে শুরু হয়েছে উৎসব। গ্রামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রতি বছর এই উৎসবের আয়োজন করে। এবছর ১৪ তম উৎসবে বীরভূম, বর্ধমানের তিনটি দল এসেছিল। উদ্যোক্তাদের দাবি দীর্ঘ লকডাউনে গৃহবন্দি মানুষ। সেই সঙ্গে শিল্পীরাও বাড়িতে বন্দি। পুরোনো অভ্যেস হারিয়েছে। সেই সঙ্গে করোনা মহামারির কথা ভেবে, ছোট করা হয়েছে উৎসব। বীরভূমের জয়দেবের মনেরমানুষ আখড়ার তন্ময় দাস বাউল, কেন্দুলীর নন্দিনী দাস বাউলের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের মানস মুখোপাধ্যায়, বাপী দাস বাউল ও তার সম্প্রদায়ের সংগীত শিল্পীরা।
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের জঙ্গলমহলের অমরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জালিকাঁদর গ্রামের এই লালন স্মরণ উৎসব কমিটির আয়োজক গৌর দাস বৈরাগ্যের দাবি, "আমরা ১৪ বছর ধরে, এই উৎসব করছি। গোটা গ্রামের মানুষের সঙ্গে এলাকার ব্যবসাদার সেখ আব্দুল লালনও আমাদের সহযোগীতা করে। এবছর করোনা মহামারির জন্য উৎসবটি ছোট করা হয়েছে। "
অনুষ্ঠানে ফকির লালনের জীবন দর্শন নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন জেলার বিশিষ্ট লেখক রাধামাধব মণ্ডল, অভিনেতা সঞ্জু সহ আরও অনেকে।
এবিষয়ে জিঞ্জেস করা হলে লেখক রাধামাধব মণ্ডল বলেন,"গায়ক মানস মুখোপাধ্যায় ও বাউল তন্ময়রা বাংলার শাশ্বত লোকায়ত ধারাকে ধরে রেখেছেন। এই সব উৎসবে বাংলার শিকড়ের সংস্কৃতি উজ্জীবিত হয়। সেই সঙ্গে ফকির লালনের ভাবধারাও আরও বহু মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। তাতে জীবে প্রেমের দর্শন আরও শক্তিশালী হবে।"
অনুষ্ঠানের আরও এক উদ্যোক্তা অভিজিৎ ঘোষ বলেন,"গ্রামের এই লোকায়ত ধারাটিকে বাঁচানোই আমাদের লক্ষ্য।"
গায়ক মানস মুখোপাধ্যায় বলেন,"বাংলার এমন সংস্কৃতি প্রবণ গ্রাম হারিয়ে যাচ্ছে। জালিকাঁদর একটি সংস্কৃতির গ্রাম। উৎসবে আসতে পেরে আনন্দ হচ্ছে। "
এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ি তথা আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরি সভাপতি সেখ আব্দুল লালন বলেন,"লৌকিক চেতনাকে জাগিয়ে তোলাই আমাদের কাজ। মানুষের সংস্কৃতির সেই কাজে আমরা রয়েছি। "
অভিনেতা সঞ্জু অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন,"বাংলার এই শাশ্বত সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই আমরা কাজ করি। আগামীতে এই লড়াইকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।"