চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

পুজোর বাদ্যিই কাটাল ঢাকিদের লকডাউনের বিষাদ


 

পুজোর বাদ্যিই কাটাল ঢাকিদের লকডাউনের বিষাদ


প্রিয়ব্রত সাহা,কাঁকসা, ৩০ অক্টোবর 


 করোনা মহামারির মারণ ঢেউ এ যখন গোটা দেশ বিধ্বস্ত। অর্থনীতি যখন ভেঙ্গে পড়ছে লকডাউনের জেরে, তখন গ্রাম বাঙলার প্রত্যন্ত ঢাকি বা লোকশিল্পীদের অবস্থা ছিল খুবই করুণ। সেই পরিস্থিতিতেও তারা আশায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন যে একদিন আবার সব ঠিক হবে। কাঁকসা অঞ্চলে যে সমস্ত ঢাকিরা এখনও ঢাককে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম মঙ্গল দাস, দুধকুমার দাস বংশ পরম্পরায় ঢাক বাজিয়ে আসছেন। লকডাউনে তাদের আর্থিক অবস্থা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছিল। পুজোর বায়না আসতেই তারা আশার আলো দেখেছিলেন। পুজোর কটা দিন ঢাকের বাদ্যিই লকডাউনের বিষাদ কাটাল । তাদের জীবনে অভাব ছিল, এখনও আছে কিন্তু এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতি তারা আগে কখনো দেখেননি। এবছর অন্যান্য পুজো গুলোয় কোনো বায়না পাননি তারা। তবে দূর্গা পুজো আসতেই পরিস্থিতি বদল ঘটে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর বায়না কম হলেও তারা খুব খুশি সামান্যতেই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দুঃস্থ শিল্পীদের মাসিক ভাতা দেন তারা তাতে খুবই উপকৃত হচ্ছেন। দুধকুমার দাস বলেন, 'কষ্ট হলেও আমরা ঢাককে আঁকড়ে ধরেই বাঁচব। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও শেখাব এ বাজনা। '

মঙ্গল দাস এই এলাকার নাম করা ঢাকী । এলাহবাদ, আন্দামান সহ অনেক জায়গায় ঢাক বাজিয়ে এসেছেন । বয়স পঞ্চাশোর্দ্ধ। আজও আরতি কিংবা বিসর্জনে তার বাজনা মানুষকে মুগ্ধ করে। তিনি আমাদের জানান, 'বাবা দাদুদের রীতিকে কষ্ট করে ধরে রেখেছি। আমাদের কষ্ট আছে জীবনে, তবুও পুজোর কটা দিন ঢাক কাঁধে বাজাতে পারলে আমরা খুশি হই। ' পুজো শেষ ঘরে ফেরার পালা, কিন্তু আবার শোনা যাবে এই শব্দ, সামনেই আলোর উৎসব দীপাবলি । তাদের জীবনও আলোকিত হোক । থাকুক তারা আঁকড়ে ধরে....... বজায় থাকুক পরম্পরা।