চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

বিয়ের যোগাযোগ করছেন ? কি করবেন - কোষ্ঠী বিচার, না রক্ত পরীক্ষা ?

.               Image courtesy : thehealthsite.com


বিয়ের যোগাযোগ করছেন ? কি করবেন - কোষ্ঠী বিচার, না রক্ত পরীক্ষা ?



🔸ডাঃ এন সি মন্ডল



➡️  সামনে অগ্রহায়ণ মাস। বিয়ের মরশুম। একটু চোখ, কান খোলা রাখলেই দেখা যাবে যে শাড়ী কাপড়, গয়না, দান সামগ্রীর দোকানের সাথে সাথে জ্যোতিষীর চেম্বারেও পাত্র-পাত্রীর অভিভাবকদের ভিড়।  সকলেই চান ঠিকুজী কোষ্ঠী বিচার করে পাত্র-পাত্রীর বিয়ে ঠিক করতে যাতে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন সুখের ও মঙ্গলের হয়।  আমরা অনেকেই জানি না যে এমন কিছু অসুখ  আছে যা বিবাহ পরবর্তী জীবনকে বিষময় করে তোলে অথচ এই অসুখ গুলিকে  আমরা প্রতিহত করতে পারি কোষ্ঠী বিচার করে নয় বিবাহের আগে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে।  এই প্রতিবেদনে এরকম কয়েকটি রোগের সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করছি যাদের মূল কারণ রক্ত সম্পর্কিত (জিনঘটিত)।


১) থ্যালাসেমিয়া:-

এই রোগ সম্বন্ধে বেশকিছু বছর আগেও মানুষ এতটা জানতো না কিন্তু আজ আমরা আমাদের চারিদিকে থ্যালাসেমিয়া রোগীর কথা প্রায়ই শুনতে পাই কিন্তু কি এই থ্যালাসেমিয়া সেই সম্বন্ধে আলোচনা করছি।  থ্যালাসেমিয়া হচ্ছে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া একটি জিন ঘটিত রক্ত রোগ।  থ্যালাসেমিয়া শব্দটির উৎপত্তি গ্রীক শব্দ "থ্যালাস" থেকে।  থ্যালাস মানে সমুদ্র।  কিছু বিশেষ ভৌগলিক অঞ্চলে বিশেষত ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায় বলে একে থ্যালাসেমিয়া বলা হয়। ১৯২৫ সালে স্যার টমাস কুলি বিশ্বে এই রোগের অস্তিত্ব প্রমান করেন। তাঁর নাম অনুসারে একে "কুলিস অ্যানিমিয়া" ও বলা হয়। ভারতবর্ষে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি রাজ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশী দেখা যায়। আমাদের রক্তে যে লোহিত রক্ত কণিকা আছে তার মধ্যে একটি লৌহ ঘটিত প্রোটিন জাতীয় পদার্থ থাকে যাকে বলা হয় হিমোগ্লোবিন। যার জন্য রক্তের রং লাল।  এই রোগে রক্তের এই  হিমোগ্লোবিন এর গঠনগত ত্রুটির জন্য লোহিত রক্তকণিকা রক্তবাহী নালির মধ্যে ভেঙে যায় বা রক্ত কণিকার মধ্যে হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয় না।  স্বাভাবিক লোহিত কণিকার জীবনকাল ১২০ দিন।  এই ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন যুক্ত লোহিত কণিকা গুলি তাদের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল পূর্ণ হওয়ার আগেই ধ্বংস হয়ে যায় এর ফলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার  সৃষ্টি হয়।  পরিসংখ্যানে জানা গেছে যে বর্তমানে ভারতবর্ষে প্রায় তিন কোটির বেশী লোকের শরীরে থ্যালাসেমিয়া জিন রয়েছে এবং আরো ভয়ঙ্কর ব্যাপার শুনলে চমকে উঠবেন যে প্রতিবছর প্রায় দশহাজার শিশু এইরোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। আমাদের রাজ্য এই পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ২০ শতাংশের বেশী মানুষ এই রোগে আক্রান্ত না হয়েও এই রোগ বহন করে চলেছে এদের আমরা বলি থ্যালাসেমিয়ার বাহক। এদের (বাহকদের) নিজেদের শরীরে থ্যালাসেমিয়ার কোনো লক্ষণ না থাকলেও এরা নিজের সন্তানদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে দিতে পারে। যেহেতু এটি একটি জিন বাহিত বংশগত রোগ সেইহেতু পিতামাতার কাছ থেকে সন্তানরা এই রোগের একটি করে মোট দুটি রোগ বাহিত জিন গ্রহণ করে নিজেরা এই রোগের শিকার হয়ে পড়ে।  পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকের রক্ত সরবরাহের ফর্ম এর উপর ওয়েস্টবেঙ্গল ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে আমাদের এই রাজ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৭ থেকে ২৮ হাজারের মতো।  থ্যালাসেমিয়া দু'ধরণের হয়।  আলফা থ্যালাসেমিয়া এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া।  আলফা থ্যালাসেমিয়া খুবই কম পাওয়া যায় এবং এটা খুব একটা মারাত্মক বা ভয়ঙ্কর নয়।  থ্যালাসেমিয়া রোগীদের মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়াই  সবথেকে প্রকট এবং একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-




(১) বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর,(২)বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর,(৩)বিটা থ্যালাসেমিয়া ইন্টার মিডিয়া।  এই আলফা, বিটা নাম দেয়া হয়েছে হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন চেনের ত্রুটিপূর্ণ গঠন অনুযায়ী।  বিটা থ্যালাসেমিয়া রোগীর শরীরে ত্রুটিপূর্ণ জিন থাকে।  এই তিন ধরনের বিটা থ্যালাসেমিয়ার মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর সবথেকে ভয়ঙ্কর।  বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগীর দেহে প্রচন্ড রকমের অ্যানিমিয়ার সৃষ্টি করে।  বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগীর সেই রকম কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় না।  থ্যালাসেমিয়া রোগকে প্রতিহত করা যায় যদি প্রত্যেক পাত্র-পাত্রী বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে জেনে নেয় যে সে থ্যালাসেমিয়ার বাহক কিনা?  আমরা যদি ছেলে মেয়েদের বিবাহ ঠিক করার আগে বাহক কে চিহ্নিত করি এবং দু'জন বাহকের মধ্যে বিয়ে দেওয়া বন্ধ করি তাহলে ভবিষ্যতে পৃথিবীতে  আর থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্মই  হবে না। আর যদি এই বিষয়ে সচেতন না হই সেদিনের আর  বেশি দেরি নেই যেদিন প্রতিটি ঘরে ঘরে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সন্ধান পাওয়া যাবে।  জেনে শুনে একজন অসুস্থ শিশুকে জন্ম দিয়ে তাকে তিলেতিলে মৃত্যুর যন্ত্রণার  দিকে এগিয়ে দেওয়া পিতা-মাতার একটি অমানবিক কাজ।  তাই আসুন do in zoo in* প্রত্যেকে এগিয়ে এসে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং এই পৃথিবীতে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত করতে সাহায্য করি।  এই প্রসঙ্গে বলে রাখি যে থ্যালাসিমিয়া মেজর রোগীর বিবাহ করা একেবারেই অনুচিত।  থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগীর বিবাহ না করাই শ্রেয় তবে যদি বিবাহ করতে হয় তাহলে একমাত্র স্বাভাবিক জিন যুক্ত ব্যক্তিকেই  বিবাহ করতে হবে।  যে রক্ত পরীক্ষার দ্বারা আমরা থ্যালাসেমিয়া সম্বন্ধে জানতে পারি তার নাম হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস বা হিমোগ্লোবিন অ্যানালাইসিস( হাই পারফরম্যান্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি পদ্ধতিতে)।  এরপর আমি যে জিন ঘঠিত রক্ত রোগের প্রসঙ্গে আসছি তার নাম হিমোফিলিয়া।


২) হিমোফিলিয়া:-

হিমোফিলিয়া হচ্ছে একটি জিনঘঠিত রক্তের রোগ।  এই রোগে রোগীর রক্ত জমাট বাঁধে না বা জমাট বাঁধতে সাধারণের থেকে অনেক অনেক বেশী সময় লাগে তাই  একবার কেটে ছিঁড়ে গেলে এমনকি ছোটখাটো আঘাতেও ক্রমাগত রক্তপাত হতেই থাকে এর ফলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।  সাধারণ মানুষের রক্তনালী থেকে রক্ত বের হওয়ার পর দুই থেকে আট মিনিটের মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে যায় কিন্তু হিমোফিলিয়া রোগীর এই রক্ত জমাট বাঁধতে সময় লাগে তিরিশ মিনিট থেকে চব্বিশ ঘন্টা পর্যন্ত। ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে জন কটো নামক ফিলাডেলফিয়ার এক বিজ্ঞানী এই জন্মগত হিমোফিলিয়া রোগের সন্ধান পেয়েছিলেন।  এই রোগে সাধারণত বাহক হয় মেয়েরা- এরা এই রোগের শিকার হয় না এবং আক্রান্ত হয় পুরুষরাই।  মায়ের কাছ থেকে ছেলেরা এই রোগ পেয়ে থাকে এবং এও দেখা যায় যে মামাদের বংশেও এই  রোগ থাকে।  পিতার হিমোফিলিয়া রোগ থাকলে এবং মা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হলে পুত্র সন্তানের মধ্যে এই রোগ আসবে না কিন্তু কন্যা সন্তানরা এই রোগের বাহক হবে। আবার মা যদি এই রোগের বাহক হয় এবং পিতা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হলে কোন কোন পুত্রের এই রোগ দেখা যাবে এবং কোন কোন কন্যারা এই রোগের বাহক হবে। হিমোফিলিয়া আছে এমন ছেলের সাথে  রোগটি বহন করছে (বাহক) এইরকম মেয়ের বিয়ে হলে সেই ক্ষেত্রে তাদের কন্যা সন্তানের  শতকরা পঞ্চাশ জন হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়বে।  এই রোগ  মাতৃগর্ভে ভ্রূণ তৈরি হবার সাথে সাথেই পিতামাতার কাছ থেকে বংশানুক্রমে সন্তানরা পেয়ে থাকে। আমাদের দেহের কোষে তেইশ জোড়া অর্থাৎ ছেচল্লিশ টি ক্রোমোজোম থাকে।  এর মধ্যে বাইশ জোড়া অটোজোম এবং বাকি একজোড়া সেক্স ক্রোমোজোম।


               Image courtesy : wecapable.com


 এই ক্রোমোজোমের যে অংশ প্রতিটি মানুষকে তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের জন্য আলাদা করে তাদের জিন বলা হয়।  এইরকম এক জোড়া ক্রোমোজোম যেটি লিঙ্গ নির্ধারণ করে তাকে সেক্স ক্রোমোজোম বলে।  পুরুষদের ক্ষেত্রে একটি 'X' ক্রোমোজোম এবং একটি 'Y' ক্রোমোজোম থাকে কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে শুধু একজোড়া 'X' ক্রোমোজোম থাকে কোন 'Y' ক্রোমোজোম থাকে না।  কোন মহিলা যদি কোনো বিশেষ ত্রুটিযুক্ত জিনের অনুলিপি তার দুটি 'X' ক্রোমোজোম এর একটিতে বহন করে তখন তাকে হিমোফিলিয়া জাতীয় তথাকথিত ক্রোমোজোম সম্পর্কিত রোগের বাহক বলা হয়।  কেবল পুরুষ সন্তানরাই  তাদের মায়ের কাছ থেকে একটি 'X' ক্রোমোজোম এবং বাবার কাছ থেকে একটি 'Y' ক্রোমোজোম পায় তাই তাদের ত্রুটিযুক্ত জিন লাভের সম্ভবনা থাকে শতকরা পঞ্চাশ ভাগ।  সমীক্ষায় জানা গেছে যে বর্তমানে ভারতবর্ষে পঞ্চাশ হাজারের বেশি লোক এইজিন ঘঠিত বংশানুক্রমিক রক্তরোগ হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত।  যে রক্ত পরীক্ষা দ্বারা হিমোফিলিয়া সম্বন্ধে জানতে পারি তার নাম হিমোফিলিয়া প্যানেল।  এই প্যানেলে থাকে তিনটি পরীক্ষা এপিটিটি ( অ্যাক্টিভেটেড পারশিয়াল থ্রম্বোপ্লাস্টিন টেস্ট),  ফ্যাক্টর VIII এবং ফ্যাক্টর IX।  এই সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা এই প্রসঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক।  এরপর আসছি রক্তের গ্রুপ সম্পর্কিত আলোচনায়।


৩) রক্তগ্রুপ:-

১৮৭৫ সালে ভিয়েনার  কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার প্রথম লক্ষ্য করেন যে,  যে কোন ব্যক্তির রক্ত অন্য ব্যক্তির দেহে সঞ্চালিত করা যায় না।  তিনি এটা অনুভব করেন যে অ সম গ্রুপের রক্ত সঞ্চালনের ফলে এর আগে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ১৯০১ সালে কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার প্রথম রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার করেন এবং এই আবিষ্কারের ফলে পৃথিবীতে শত সহস্র মানুষের মৃত্যুর গতি স্তব্ধ হয়ে যায়।  তিনি প্রথমে A, B এবং O নামক তিনটি বিভাগ বা গ্রুপ আবিষ্কার করেন। এর দুই বছর পর তার দুই ছাত্র স্ট্যালি এবং ডিকাস্টিলো AB নামক চতুর্থ গ্রুপ টি  আবিষ্কার করেন।  রক্তের শ্রেণীবিভাগ কে অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডি উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির  উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। ১৯৪০ সালে কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার এবং এ.এস.ওয়েনার মানুষের রক্তে আর এক ধরনের অ্যান্টিজেনের সন্ধান পান। প্রমাণিত হয় রীসার্স বানর নামক এক প্রকার বানরের রক্তকণিকার গায়ের মত এক ধরনের অ্যান্টিজেন মানুষের লোহিত রক্ত কণিকায় রয়েছে। রীসার্স বানরের নাম অনুসারে একে রীসার্স ফ্যাক্টর বা Rh Factor বলা হয়।  যাদের রক্তের লোহিত কণিকায় Rh Factor থাকে তাদের Rh Positive(+ve) এবং যাদের থাকে না তাদের Rh Negative (-ve) বলা হয়।  এখন Rh(+ve) রক্ত যদি Rh(-ve) দের শরীরে প্রবেশ করে তাহলে শরীরের ভিতরে এরকম অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এর ফলে Rh(+ve) রক্ত জমাট বেধে যায় এবং রক্ত কণিকা ধ্বংস হয়ে যায়।  যেসব মেয়েদের রক্ত Rh(-ve) তাদের ক্ষেত্রে এটা বিপদ ডেকে আনে।  এইসব মেয়েরা যখন মা হন তখন তাদের রক্ত Rh(-ve) হওয়ায় শরীরের মধ্যে বর্তমান শিশুটির রক্ত Rh(+ve) হলেও মা তার সন্তানের বিরুদ্ধে Rh অ্যান্টিবডি তৈরি করে এর ফলস্বরূপ শিশুটির রক্তকণিকা ধ্বংস হয়ে বা জমাট বেঁধে সে মারা যেতে পারে। মা এবং শিশুর রক্তের এই  গোলমাল (Rh বৈষম্য) কিন্তু গর্ভসঞ্চারের সময় নাও হতে পারে।  প্রথমবার মায়ের শরীরে শুধু Rh(+ve) অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।  সেই অ্যান্টিবডি শিশুর শরীরে প্রবেশ করে না।  দ্বিতীয় বা তার পরবর্তী গর্ভসঞ্চারের সময় এই সৃষ্টি হওয়া অ্যান্টিবডি শিশুর দেহে প্রবেশ করে শিশুর রক্ত কণিকা ভেঙে দেয় বা ধ্বংস করে এবং এর ফলে মৃত্যু হতে পারে।  এই অবস্থাকে এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস বলা হয়।  তাই Rh(-ve) মেয়েরা সন্তানসম্ভবা হলে তাদের বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং প্রয়োজনে অভিজ্ঞ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।  এইসব রোগগুলি কোনটাই বাইরে থেকে শরীরে প্রবেশ করে না।  এইগুলি জন্মের পরই আমরা বংশগত সূত্রে পেয়ে থাকি।  সুতরাং বিয়ের ঞপটআগে রক্ত পরীক্ষা করেই এসব রোগের  উপস্থিতি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া দরকার।  কোষ্ঠী ঠিকুজি বিচার করে এসব রোগ সম্বন্ধে জানা সম্ভব নয়।  শুধুমাত্র রক্ত পরীক্ষা করে এটা জানা সম্ভব। যে পরীক্ষা দ্বারা আমরা রক্ত গ্রুপ সম্বন্ধে জানতে পারি তার নাম রক্ত গ্রুপ পরীক্ষা সাথে রীসাস ফ্যাক্টর (ABO with Rh FACTOR)। 

  সবশেষে সকল পাত্র-পাত্রীর অবিভাবকদের বলবো কুষ্টি বিচার নয়, তাদের ভবিষ্যৎ মঙ্গলের কথা চিন্তা করেই রক্ত পরীক্ষা করে আপনারা আপনাদের ছেলে মেয়েদের বিয়ের যোগাযোগ করুন।