চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

শরতের অঙ্গনে কাব্যের সম্ভার



শরতের অঙ্গনে কাব্যের সম্ভার



প্রচ্ছদ স্কেচ -----------------

🔸 সুমিতা নাথ


লিখেছেন --------------------

🔸 অমিতাভ দত্ত

🔸 মনোজ কুমার রথ

🔸 সুরমান আলি মল্লিক

🔸 শুভাশিস হালদার

🔸 অতনু হাজরা



দুর্বোধ্য ; অ্যাবস্ট্রাক্ট এবং বিমূর্ত অস্তিত্ব ....


                 অমিতাভ দত্ত


শিউলি সুবাসে শরৎ আকাশে,

দোলে হাসে শ্বেতশুভ্র কাশবন।

তুমি শরৎ সুন্দরী উর্বরা স্বর্ণকেশী,

সবুজের বুকে কঠিন পাষাণে,

জাগে ভালোবাসা,

তুমি নারী ; প্রকৃতি পুরুষে -- হাস্যজ্জল মিলন আবেশে, নিরব নৈঃশব্দ্যের প্রকৃতির কোলে হরিৎ ক্ষেত্রে কঠিন অস্ত্রাঘাতে, জাগে আশা,

তুমি ভালোবাসা, তুমি মনীষা।

তুমি অর্পিতা, তুমি লিপিময় শাব্দিক ভাষা, তুমি নিবেদিতা।

তুমি কেতকী সুবাস, তুমি বকুল সুগন্ধিতা, তুমি করুণাময়ী ধাত্রী, তুমি গর্ভধারিণী গর্বিতা। 

মিলন তিয়াসায় কঠিন পাষাণে,

শিল্প রসের ধারায় ধৌত বর্ণিত, 

বহমান পুরাতাত্ত্বিক শৈল্পিক ভাষা। 

জাগে ভালোবাসা! 

বাহুবন্ধনে চুম্বনে চুম্বনে, নির্জনে জাগে নবীন আশা, তুমি ভালোবাসা।

তুমি সুন্দরী রহস্যময়ী ,

তুমি কঠিন পাষাণ ---- পর্বতমালায় গুহা কন্দরে,

প্রতিধ্বনিত গোপন মনের কোণে,

তুমি ভালোবাসা ; তুমি মনীষা।

তুমি মানবিক মানবী,

তুমি প্রতিবাদিনী নিবেদিতা।

#################


অসুর তোমার সর্বনাশ


         মনোজ কুমার রথ


অস্ত্র ধরো, অস্ত্র ধরো,

   অসুরনাশিনী দেবী তুমি;

            ভয়ে সবাই জড়সড়ো,

                    রক্ষা করো মর্ত্যভূমি।


দশটি করে অস্ত্র নয়,

   ধরেই নামো মর্ত্যলোকে;

       আগুন বৃষ্টি যেমনটি হয়,

            মাগো তোমার তিনটি চোখে।


এতো শত্রু বিশাল বিশাল,

          তারাও ভয়ে গর্তেবাসী; 

             ভয় আতঙ্কের এই যে কাল,

                          অদৃশ্য শত্রু সর্বনাশী!


কেউ জানে না কৌশলটা কি,

         কোন অস্ত্রে অসুর বিণাশ;

              তোমার জানা আছে বৈকি,

                           কিসে দস্যুর সর্বনাশ। 


মৃন্ময়ী রূপে চিন্ময়ী হও,

   শারদ প্রাতে ডাকছে কাশ;

       অজেয় অসুর বলছি পালাও,

                   মা আসছেন- সর্বনাশ!! 

################

                          

প্রতি শরৎ-এ শূন্যে বাতাস চুমি


সুরমান আলি মল্লিক


সেদিনও ছিলো শিউলির মাস

শরৎ হয়ে ফুটেছিল

ঊষর পতিত মননে তোমার

শুভ্র কাশের লাজুকলতা....


বড়ো হ্যাংলা আমি

তোমার কামিনী চোখে দেখেছিলাম

আঁধার রাতের বিবাগী জোছনা

শিরায় শিরায় আশ্বিনী ঝড়ে

অনন্ত স্বপ্নের হাতছানি মাড়িয়ে

দিয়েছি খুলে সেদিন -

পারিজাত বুকের পাপড়ি- ব্যাকুলতা.......


তুমি জৈবিকতার জৈবসারে

সাজিয়ে তুলেছিলে জমিন

দিয়েছিলে খুলে বাহুডোর.....


সাক্ষী থেকেছিলো হলুদ ক্লোরোফিল

আর

শুধু কেঁদে ভাসিয়েছিলে

তৃপ্ত ধারায় অজানা সরবর......


তারপর আর, এমন শরৎ আসেনি কখনো


দিকভ্রান্ত স্রোতে

ভাসিয়ে নৌকার পাল

প্রতি শরৎ - এ

শূন্যে বাতাস চুমি এখনো......

################


  'অন্য পুজো'


শুভাশিস হালদার


শরৎ আসে কাশের বনে 

শরৎ আসে মেঘে 

উঠেছে হেসে শরৎ শিউলি 

'করোনার' ক্যানভাসে।।

মন আনন্দে ফোয়ারা হয়ে 

বেরিয়ে পড়তে চায়, 

ম্যাক্স, স্যানিটর, দূরত্বটা 

পথ আগলে দাঁড়ায়।। 

বন্ধু গুলোর সঙ্গে দেখা 

হয়নে বহুদিন 

লকডাউনে স্কুল বন্ধ 

ভাল্ লাগে না সারা দিন।। 

পুজোর আগে কতো কিছু 

আলোচনা হতো, 

কি কিনবে, কে দিয়েছে

হাজার কথা যতো।। 


তুতুন ফোনে ছবি দিয়েছে 

নাইস লেহেঙ্গা খানা 

প্রকৃতি বলে দাঁড়া - দাঁড়া 

 আমিও পাঠাচ্ছি সোনা।। 


টুকুদের মতো মেয়েরা 

ভাবতে পারে না এতো কিছু 

চাকরি গেছে বাবার লকডাউনে

মাথা করে থাকে নীচু।। 


টুকুদের পড়াশোনা হয়নে 

অনলাইন, ফোন যে তাদের ছোটো 

নতুন জামা পূজো দেখা 

অধারা স্বপ্ন যতো।। 


ঢাকের আওয়াজ আসছে কানে 

ভেসে ওঠে আজ মনে, 

সারি - সারি আজ টুকুদের মুখ 

মন করুন সুরে বাজে।।

#############


শরৎ


অতনু হাজরা


বাতাসে হিমেল অনুভূতি

নীল নীল অম্বর।

রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা শিউলি ফুল

নদীর কুলে কাশের হাসি।

হঠাৎ হঠাৎ নেমে আসা বৃষ্টি

খড়ের মেটেতে মাটির প্রলেপ।

মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের চন্ডীপাঠ

রেডিওতে বাজা আগমনীর গান।

পথ চলতে পায়ে শিশির

পুকুরে পদ্ম ও শালুকের সমাহার।

আকাশে বাতাসে পূজো পূজো গন্ধ

এসেছে শরৎ।