ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ যুবক চাকরি না পেয়ে অভাবের তাড়নায় চায়ের দোকান খুলে বসলো
অতনু ঘোষ ও মৃনাল কান্তি মণ্ডল, মেমারি : এক সাধারণ পরিবারের ছেলে চা বিক্রেতা অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও তার নিজের মেধার জোরে আজ ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আজ যার কথা বলব সেও একজন চা বিক্রেতা। কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা ছিল না তার। কী সেই ঘটনা ? ঘটনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটের নয়। আজ যে চা বিক্রেতার কথা বলছি সে এই বাংলার এক মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ যুবক। জীবনে মেধার উপযুক্ত দাম না পেয়ে কার্যত হতাশ হয়ে শেষে সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে চায়ের দোকান খুলে বসল ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জু কুণ্ডু।
ছোটবেলা থেকে অত্যন্ত মেধাবী সঞ্জু ২০১৯ সালে জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করে। পড়াশোনা করার জন্য সেই সময় একটি ব্যাঙ্ক থেকে বেশ কিছু টাকা এডুকেশন লোন নেয়। তৎকালিন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলেছিলেন, পড়া শেষ করে চাকরীর বেতন থেকে লোনের কিস্তি নেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে সঞ্জু ইঞ্জিনীয়ারিং পাশ করে। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও একটি চাকরি জোটাতে পারেনি। এদিকে ঋণের বোঝা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় ব্যাঙ্ক লোনের কিস্তি দিতে বলে। কোর্টের দারস্থ হবার ভয় দেখালে, বহু কষ্টে প্রথম কিস্তি দেওয়ার পর সঞ্জুর বাবা নবকুমার বাবুর স্ট্রোক হয়। বর্তমানে তিনি ফুটপাতে সবজী বিক্রি করেন।
এক দিকে বাবার চিকিৎসা অপর দিকে ব্যাঙ্কের কিস্তি নিরুপায় হয়ে নিজের বাড়ির সামনে মেমারী কাটোয়া রোডের ধারে একটি চায়ের দোকান খুলে বসে সঞ্জু। চায়ের দোকান থেকে সারা মাসে যা সাশ্রয় হয় তার থেকে ব্যাঙ্কের ২৩০০টাকা কিস্তি দেবার পর, বাবার ওষুধ কিনতে ফুরিয়ে যায় বাকি টাকা।
এলাকার মানুষের কথায়, সরকার যদি সঞ্জুর মত মেধাবীর মেধা বিচার করে একটু সদয় হয়। তবে আগামী দিনে এই সঞ্জুরাই যে দেশের সম্পদ হবে না, তা কে বলতে পারে।