চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

করোনাকে বুকে নিয়ে আউশগ্রামে তৃণমূলের সভা, উঠছে প্রশ্ন

 

করোনাকে বুকে নিয়ে আউশগ্রামে তৃণমূলের সভা, উঠছে প্রশ্ন


নিজস্ব সংবাদদাতা, আউশগ্রাম : একদিনে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ২ ব্লকের রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোড়া কলোনি, মোড়বাঁধ ও পুবার গ্রাম মিলিয়ে আট জনের শরীরে মিললো করোনার জীবাণু। বুধবার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্টে রামনগর পঞ্চায়েত এলাকায় এক গর্ভবতী মহিলাসহ মোট আট জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সেই সঙ্গে প্রতিবেশী পঞ্চায়েতের বিলসোণ্ডা গ্রামের একজনের রিপোর্টও এদিন পজিটিভ এসেছে। বুধবার ছোড়া কলোনি ও মোড়বাঁধে করোনা আক্রান্তরা বাড়িতেই ছিলেন বলে জানা যায় প্রশাসন সুত্রে।

এদিন বিকেল পর্যন্ত প্রশাসন কোনো গুরুত্বই দেয়নি। ঘেরা হয়নি এলাকা। তবে স্থানীয়সুত্রে পাওয়া খবরে জানা যায়, পুবার মির্ধা পাড়ায় করোনা আক্রান্তরা গেঁড়াই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে ছিল। তারা পরিযায়ী শ্রমিক, দিন চারেক আগে ভিনরাজ্য থেকে ফিরেছে। যদিও ছোড়া কলোনি ও মোড়বাঁধে আক্রান্তরা বাড়িতেই ছিলেন। মানেনি প্রশাসনিক নিয়ম! মঙ্গলবার এক পরিবারের দু'জন আক্রান্ত। তাদের বাড়িতেই গোটা গ্রামের কয়েকশো মানুষ জন্মদিনের নিমন্ত্রণ খেতে এসেছিল! প্রশাসনের গোচরে এমন ঘটনা কি ভাবে ঘটলো সেটা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। যদিও প্রশাসন সমস্ত করোনা আক্রান্তদের পাঠিয়েছে, দুর্গাপুরের সনকা কোভিড হাসপাতালে। 


অন্যদিকে করোনা আক্রান্তের রিপোর্ট আসতে না আসতে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে একাধিক করোনা আক্রান্ত এলাকা থেকে এক কিমি দূরে রামনগর পিএইচই'র মাঠে মল্লিকপুর গোস্বামীখণ্ডতে দলবদলের সভা করলো তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের দাবি, আক্রান্তদের গ্রাম থেকে তেমন কেউ আসেনি। যদিও এই সভাকে কেন্দ্রে করে ইতিমধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। 

এবিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে রামনগর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আসগর সেখ বলেন, 'আমরা বহু পরে শুনেছি। তখন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে গেছে। তবে আমরা সতর্ক ছিলাম। মানুষকেও সতর্ক ও সাবধান করেছি।' 

 তৃণমূলের এই দলবদলের সভায় তিন শতাধিক তৃণমূল কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদিন মল্লিকপুর গ্রামের তৃণমূলের সভায়, বিজেপি থেকে তৃণমূলে ৩০ জনের মতো বিজেপি কর্মী যোগদান করে। এই যোগদানের সভায় উপস্থিত ছিলেন আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, জেলা পরিষদ সদস্য রামকৃষ্ণ ঘোষ, তৃণমূল নেতা সেখ আব্দুল লালন, আউশগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলী।


এবিষয়ে জেলা পরিষদ সদস্য তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষ বলেন, 'সভাটি পূর্বপরিকল্পিত। তবুও আমরা প্রশাসনের কথা মেনে, ফাঁকা মাঠ থেকে সৃজনী হলে করি। দূরত্ব ও সেনেটাইজার ব্যবহার করে। আর পাঁচশো লোকের আয়োজন থাকলেও, আমরা শেষ এপর্যন্ত সভাটি করি ১০০ লোক নিয়ে।' তাছাড়া সকলকে সচেতন করতে এই সভা বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন আমরা রোগের বিরুদ্ধে লড়ছি। রুগীর বিরুদ্ধে নয়। আর কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি এখন রামনগর অঞ্চলে হবে না বলেও জানান তিনি।

যদিও এবিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে আউশগ্রাম ২ ব্লকের বিডিও বলেন, 'এই বিষয় গুলো পুলিশের দেখা উচিৎ।'

যদিও এবিষয়ে আউশগ্রামের আইসি কোনো বক্তব্য দিতে চাননি। এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি মণ্ডল সভাপতি নিতাই বিশ্বাস বলেন, 'কি ভাবে এই সভা তৃণমূল করতে পারে, পুলিশের সামনে, তা ভাবলে অবাক লাগে! তারা জনগণকে মারতে চায়! পুলিশের বিরুদ্ধেও তদন্ত হওয়া জরুরি।'