চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ নিয়ে কিছু কথা (দ্বিতীয় পর্ব)


জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ নিয়ে কিছু কথা

(দ্বিতীয় পর্ব)

 🔸 অভিজিৎ মিত্র

  ➡️  আগের লেখায় এই নতুন ‘ন্যাশনাল এডুকেশনাল পলিসি’ বা ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ ২০২০-র স্কুলশিক্ষা নিয়ে আলোচনা করেছি। এবার আমরা ঢুকব এই নীতির দ্বিতীয় ভাগে অর্থাৎ উচ্চশিক্ষায় (কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার ক্ষেত্র)। আগেরবার বলেছিলাম যে ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে কস্তুরিরঙ্গনের নেতৃত্বে যে কমিটি এই শিক্ষানীতির খসড়া পেশ করেছিল, সেই কমিটির স্কুলশিক্ষার খসড়ায় কোথাও কোথাও আমার আপত্তি আছে। কারন কস্তুরিরঙ্গন একজন স্বনামধন্য প্রযুক্তিবিদ এবং উচ্চশিক্ষায় ওনার মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু স্কুলশিক্ষায় উনি শেষ কথা নন। স্কুলশিক্ষায় এই কমিটির রিপোর্টে যা যা খুঁত আছে বলে আমার মনে হয়েছিল, আগের লেখায় সেগুলো বলেছি। ঠিক না ভুল সেটা বিচারের দায় পাঠকের। এই লেখায় আমরা দেখব কস্তুরিরঙ্গনের নেতৃত্বে এই কমিটি উচ্চশিক্ষায় কিরকম সুপারিশ করেছে এবং সেগুলো কতখানি কার্যকর।

তবে একটা কথা এখানেই বলে রাখি। ১৯৫০ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৪৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছিল শিক্ষার ভার দেওয়া হল রাজ্যে এক্তিয়ারে। দশ বছরের ভেতর সমস্ত শিশুকে শিক্ষিত করতে হবে। ১৯৭৬ সালে ৪২ তম সংশোধনে সেটা আনা হয় রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ প্রচেষ্টায়। এরপর ২০০২ সালে ৮৬ তম সংশোধনে ২১-এ ধারায় এবং ২০০৯ সালে ‘রাইট টু এডুকেশন’ অ্যাক্টে প্রত্যেক ৬-১৪ বছরের বাচ্চাদের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক হয়। যার দায়িত্ব যৌথভাবে রাজ্য ও কেন্দ্রের। কিন্তু এতকিছু করা সত্বেও আমরা সবাই জানি যে ১৯৫০-এর পর নদীর স্রোতের মত বহু দশ বছর কেটে গেলেও আজো, ভারতে, প্রত্যেক শিশুর জন্য ‘রাইট টু এডুকেশন’ অধরাই রয়ে গেছে। অতএব স্কুল শিক্ষাই যেখানে ঠিকঠাক হল না, সেখানে উচ্চশিক্ষা কদ্দূর হবে, তা নিয়ে একটু ধোঁয়াশা আছে।

১) উচ্চশিক্ষায় ‘গ্রস এনরোলমেন্ট রেসিও’ এখনকার ২৬.৩% থেকে বাড়িয়ে ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০%-এ নিয়ে যেতে হবে। এর অর্থ হল, ভারতে এখন মোট যত ১৮ বছর বয়সি যুবক-যুবতী রয়েছে যারা স্কুলশিক্ষা শেষ করেছে, তাদের মাত্র ২৬.৩% কলেজে ভর্তি হয়। এই অনুপাত বাড়িয়ে ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০% করার কথা বলা হয়েছে যাতে যুবা সম্প্রদায় উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হয়। এরজন্য দরকার হলে দূরশিক্ষা বা ডিসট্যান্স এডুকেশনের সাহায্যও নিতে হবে। নিঃসন্দেহেই ভাল লক্ষ্য।

২) সেকেন্ডারি স্কুলে (ক্লাশ নাইন থেকে টুয়েলভ) গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা যেমন আর্টস, কমার্স, সায়েন্স থেকে যেরকম খুশি বিষয় পছন্দ করতে পারবে, তেমনি উচ্চশিক্ষায় এসে তারা কলেজে বহুশাখাযুক্ত (মাল্টি ডিসিপ্লিনারি) বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবে। কোন ছাত্র যদি মনে করে সে অঙ্ক, ইংরাজি ও ফাইন আর্টস নিয়ে পড়তে চায়, তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে। এবং এর জন্য ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে ‘মাল্টিডিসিপ্লিনারি এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইউনিভার্সিটি’ খোলা হবে। প্রতি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সেলিং সেন্টার খোলা হবে। এটাও ভাল উদ্যোগ।

৩) কলেজের ডিগ্রি কোর্সের সময়সীমা হবে ৩ বা ৪ বছর। প্রফেসনাল বা মাল্টিডিসিপ্লিনারি ডিগ্রি হবে ৪ বছরের। এর ভেতর কেউ যদি মনে করে সে এক বছর পরেই কলেজ ছেড়ে দিতে চায়, তাকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। ২ বছর পর ছাড়লে ডিপ্লোমা। আর কোর্স শেষ করলে ডিগ্রি। এই নতুন ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের যদ্দূর সম্ভব সুবিধে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এবং আশা করা যায় এতে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।

৪) সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এবার অনলাইনে ‘অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অব ক্রেডিট’ (ABC) চালু করা হবে। ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলা যাক। কোন ছাত্র হয়ত কলেজে ফিজিক্স পড়ছে সপ্তায় তিন ঘন্টা। এর অর্থ ঐ বিষয়ের ক্রেডিট ৩। এরকম সাতখানা বিষয় নিয়ে সে প্রথম সেমেস্টারে পাশ করল। তাহলে তার মোট ক্রেডিট হল ২১। এইরকম ভাবে ধরা যাক, তিন বছরে পুরো ডিগ্রি কোর্সের শেষে সে হয়তো ১২০ ক্রেডিট পাশ করল এবং ডিগ্রি পেল। তখন ঐ ১২০ ক্রেডিট ছাত্রটির অনলাইন ABC-তে উঠে গেল। এবার সে যদি অন্য কোন জায়গায় মাস্টারডিগ্রি করতে যায় এবং সেখানকার যদি নিয়ম হয় সে ১২৫ ক্রেডিট করে এলে তবেই তাকে মাস্টারডিগ্রি-তে নেওয়া হবে, তখন তারা ঐ ছাত্রটিকে চটজলদি ৫ ক্রেডিটের আরেকটা বিষয় প্রিপারেটরি হিসেবে পড়িয়ে নিয়ে তারপর ভর্তি করতে পারবে। এর ফলে ঐ বিশ্ববিদ্যালয় বা ছাত্রটি, সবারই সুবিধে। আমেরিকা বা ইউরোপ বা অস্ট্রেলিয়া, সব জায়গাতেই এই অ্যাকাডেমিক ক্রেডিট ব্যাপারটা বহুল প্রচলিত। এটা এখানে চালু হলে সব শিক্ষার্থীর সুবিধে হবে। তাদের কাউকেই আর পাশ করার পরে ট্রান্সক্রিপ্ট বা মাইগ্রেশন সার্টিফিকেটের জন্য দৌড়দৌড়ি করে বেড়াতে হবে না।

৫) প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই এবার আস্তে আস্তে মাল্টিডিসিপ্লিনারি হয়ে উঠতে হবে, যেখানে অনেক রকমের ডিগ্রি দিতে হবে। ধীরে ধীরে এইসব প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠবে তিনটের ভেতর কোন একটাঃ শিক্ষামূলক বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণামূলক বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বাধীন ডিগ্রিপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। ২০৩৫ এর ভেতর আর কোন ডিগ্রিপ্রদানকারী ইউনিভার্সিটির সঙ্গে অ্যাফিলিয়েটেড প্রাইভেট কলেজ থাকবে না। সেই প্রতিষ্ঠানকে হয় স্বাধীন (অটোনোমাস) ডিগ্রিপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হতে হবে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অংশ হিসেবে থাকা এক কলেজ। এই সমস্ত কলেজকে মুচলেকা দিতে হবে যে তারা সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কোন লভ্যাংশ ঘরে তোলে না। এবং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকেই চেষ্টা করতে হবে ন্যূনতম ৩০০০ ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশোনার পরিকাঠামো তৈরি করে নিতে।

৬) জাতীয় স্তরে এক নোডাল এজেন্সি ‘ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ তৈরি করা হবে। এর কাজ হবে সমস্ত ইউনিভার্সিটির সঙ্গে (বিশেষ করে স্টেট ইউনিভার্সিটি) যোগাযোগ বজায় রেখে তাদের গবেষণার ওপর নজর রাখা ও প্রয়োজনীয় ফান্ডিং সরবরাহ করা।

৭) প্রতি বছর প্রায় ৪ লাখ ভারতীয় শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে চলে যায়। সেই যাওয়া থামানোর জন্য এই নতুন নীতিতে বিদেশী আইভি লিগের প্রথম ১০০ টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রন জানান হবে এদেশে তাদের ক্যাম্পাস খোলার জন্য।

৮) প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে পড়াশোনা চালানোর জন্য (এই কোভিড পরিস্থিতিতে যেমন অনলাইন ক্লাশ) ‘ন্যাশনাল এডুকেশনাল টেকনোলজি ফোরাম’ নামক এক স্বাধীন সংস্থা খোলা হবে। এই সংস্থার কাজ হবে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন পড়াশোনা বিষয়ে সাহায্য করা (যেমন, NPTEL বা SWAYAM থেকে চলা MOOCs বা স্মার্ট ক্লাশরুম তৈরি করে দেওয়া)। কোভিড পরিস্থিতির জন্য এই নীতিতে বারবার জোর দেওয়া হয়েছে ভবিষ্যতের অনলাইন ক্লাশ আর ডিজিটাল ক্লাশের ওপর।

৯) জাতীয় স্তরে এক হায়ার এডুকেশন কমিশন অব ইন্ডিয়া তৈরি হবে। সমস্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এই কমিশনের অধীনে আনা হবে (মেডিকেল ও আইন বাদে)। এই কমিশনের ছাতার নিচে চারটে আলাদা কাউন্সিল থাকবে। এদের কাজ হবে কলেজ বা ইউনিভার্সিটি ঠিকঠাক গাইডলাইন মেনে চলছে কিনা, সেটা দেখা, তাদের মান্যতা দেওয়া ও ফান্ডিং-এর সুপারিশ করা। এছাড়াও, প্রত্যেক কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনগ্রসর শ্রেণীর বা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আর্থিক সহায়তার সুযোগ থাকবে।

১০) সবশেষে, স্কুল শিক্ষকদের মতই কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উন্নয়নের জন্য ভাবনা চিন্তা। এখানেও কিন্তু ২০৩০ সালের ভেতর শিক্ষকদের ন্যূনতম যোগ্যতা নতুনভাবে সাজানো হবে।  

দেখুন, আমি কিন্তু আগেই বলেছিলাম যে কস্তুরিরঙ্গন একজন স্বনামধন্য প্রযুক্তিবিদ এবং উচ্চশিক্ষায় ওনার কমিটির মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্যাপারটা উনি বোঝেন। ফলে, যেটা আশা করা গিয়েছিল যে উচ্চশিক্ষায় ওনার কমিটির সুপারিশ ভালই হবে, ঠিক সেটাই হয়েছে। আমি তো বলব, এই ১০ টা পয়েন্ট (৬ ও ৭ বাদে) যে কোন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভার্টিকাল ও হরিজোন্টাল গ্রোথের জন্য মোটামুটি ভাল পদক্ষেপ।   

৬ নম্বর পয়েন্ট নিয়ে আমার খটকা আছে কারন DST, DBT থাকা সত্বেও আবার কেন আরেকটা NRF দরকার সেটা বুঝলাম না। আর ৭ নম্বর পয়েন্টের আমি ঘোরতর বিরোধী। ব্রেন-ড্রেন থামানোর জন্য বাইরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতে কেন ডাকা হবে? ছাত্ররা ওখানে পড়তে গেলে টাকা তো সেই বিদেশেই বেরিয়ে যাবে। তারচেয়ে আইভি লিগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানদের বলা হোক কোন উচ্চমানের ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে। তাহলে তো দুটো উদ্দেশ্যই সফল হবে। দরকার হলে পাঁচ বছরের ডুয়াল ডিগ্রি দেওয়া হোক। আরো একটা বিষয় ঠিক করা দরকার। সেটা হল সেকেন্ডারি স্কুলে কাউন্সেলিং সেন্টার খোলা উচিৎ। নাহলে বাচ্চারা বুঝতে পারবে না কোন্‌ কোন্‌ বিষয় নিয়ে পড়লে ভবিষ্যতে মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে তাদের সুবিধে হবে। এবং এটাও বলব, বিজ্ঞান বিষয়ক উচ্চশিক্ষায়, বিশেষ করে প্রফেসনাল শিক্ষায়, সংস্কৃত পড়িয়ে কোন লাভ নেই। TOEFL বা ইউরোপিয়ান ভাষা শেখালে বরং আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক স্তরে সফল হবে।    

এপর্যন্ত ভারতে যে যে শিক্ষানীতি এসেছে, তার ভেতর ১৯৬৮ সালের শিক্ষানীতিকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়। তৎকালীন ইউ-জি-সি চেয়ারম্যান ডি এস কোঠারির নেতৃত্বে সেই কমিশন ১৯৬৬ সালে এক রিপোর্ট দেয় (কমিশনে একজন সদস্য ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেক্টর ত্রিগুনা সেন) যা ১৯৬৮ সালে গৃহীত হয়। সেই রিপোর্টের শিরোনাম ছিল ‘শিক্ষা ও জাতীয় উন্নয়ন’। রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগে মোট ১৯ টা বিভিন্ন টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছিল। রিপোর্টে উচ্চশিক্ষায় গবেষনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রথম সরকারকে বলা হয়েছিল শিক্ষাখাতে জিডিপি-র অন্তত ৬% খরচ করতে। সেই প্রথম সারা দেশ জুড়ে ১০+২+৩ শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয়েছিল। বলা হয়েছিল, শিক্ষার ফলে শিক্ষার্থীর সাথে সাথে সমাজেরও উন্নতি হয়। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্তর্জাতিক মানের মানুষ হিসেবে তৈরি করা দরকার। দুর্ভাগ্য, ঐ রিপোর্টের পর সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় ধাপে ধাপে উন্নতির ধারা ১৯৮৬ বা ২০২০, কোন শিক্ষানীতিতেই দেখলাম না। এবং ২০২০-র নীতি উচ্চশিক্ষায় মোটামুটি ভাল সুপারিশ করেছে বলে ধরে নিলেও এটাও ঠিক যে ভারতীয় ভেঙে পড়া স্কুলশিক্ষায় এই নীতি এখন কোন কাজে আসবে না। তাছাড়াও সামগ্রিক ভাবে একটা গন্ধ এই নীতি থেকে পাওয়া যাচ্ছে। তা হল, ক্লাশ সিক্স থেকেই শিক্ষার্থীকে বাজার অর্থনীতির সঙ্গে ফিট করে দেওয়া, একদম মাল্টিডিসিপ্লিনারি ডিগ্রি অব্ধি। মার্কেট মডেল। প্রযুক্তিবিদ হিসেবে এই মডেল আমি সমর্থন করলেও একজন শিক্ষবিদ হিসেবে করতে পারছি না। আমাদের দেশে সাধারন শিক্ষার্থীর সংখ্যাই সবথেকে বেশি, যারা সহজ রাস্তায় আর্টস, কমার্স বা সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা চালায়। শিক্ষার এই নতুন মডেলে ঠিকঠাক গাইডলাইন না পেলে তাদের ক্ষেত্রে হাঁসজারু তৈরি হবার সম্ভাবনা বেশি। সেজন্য আগেই বলেছি যে প্রত্যেক সেকেন্ডারি স্কুলে কাউন্সেলিং সেন্টার খুলতেই হবে, শুধু কলেজে নয়।  

আমাদের রাজ্যে এই নতুন শিক্ষানীতি সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনা করার জন্য ৬ জনের এক বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছে যেখানে পবিত্র সরকার বা সুরঞ্জন দাসের মত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা আছেন। আশা করা যায়, এরা খুব তাড়াতাড়ি ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ ২০২০ নিয়ে মতামত দেবেন এবং আমাদের রাজ্যের ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীদের জন্য সঠিক শিক্ষার রাস্তাই বেছে দেবেন।

(লেখক বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যক্ষ এবং আই-আই-টি গুয়াহাটির প্রাক্তন অধ্যাপক