চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

মাধ্যমিকে রাজ্যের সেরা মেমারির অরিত্র, গর্ব ও খুশিতে উদ্বেল পূর্ব বর্ধমান জেলা



মাধ্যমিকে রাজ্যের সেরা মেমারির অরিত্র, গর্ব ও খুশিতে 
 উদ্বেল পূর্ব বর্ধমান জেলা

অতনু হাজরা ও সেখ সামসুদ্দিন, মেমারি : মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরোবার সাথে সাথেই দেখা গেল পূর্ব বর্ধমান জেলার জয় জয়কার। রাজ্যের প্রথম এই জেলারই মেমারী বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যামন্দিরের (ইউনিট-১) ছাত্র অরিত্র পাল। ঘরের ছেলে রাজ্যে প্রথম। ফলে গর্ব আর খুশিতে উদ্বেল পূর্ব বর্ধমান জেলা। এছাড়াও রাজ্যের যুগ্ম দ্বিতীয়, ষষ্ঠ,সপ্তম ও দশম স্থান পেয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক ছাত্র-ছাত্রী। খবর পেয়েই বুধবার সকালে অরিত্র'র বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন মেমারী পৌরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান তথা পুরসভার প্রশাসক স্বপন বিষয়ী। এরপর থেকে পালা করে তার বাড়িতে চাঁদের হাট বসে যায়। অরিত্র'র বাড়িতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। কিছু সময় তিনি কাটান অরিত্র'র বাড়িতে। কথা বলেন অরিত্র'র বাবা গনেশ পাল ও মা চন্দনাদেবীর সঙ্গে। মন্ত্রী জানান যেকোনো প্রয়োজনে রাজ্য সরকার তার পাশে সব সময় আছে। একই রকমভাবে মেমারির বিধায়ক নার্গিস বেগম রাজ্যের সেরা ছাত্রকে শুভেচ্ছা জানান।




এরপর একে একে তার বাড়িতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে আসেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। একই সঙ্গে আসেন জেলা পরিষদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ হাজরা চৌধুরী, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহঃ ইসমাইল। তারপরে আলাদা ভাবে সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু, কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝি সহ একাধিক কর্তাব্যক্তি। এসে পৌঁছান জেলা পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক সহ তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক কেশব চন্দ্র ঘোষাল সহ অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষক খুবই উছ্বসিত ছাত্রের এই সাফল্যে। তিনি বলেন ওতো শুধু তাঁর স্কুলের নয় পুরো জেলা তথা রাজ্যের গর্ব। স্কুলের শিক্ষকদের পাশে পেয়ে বিশেষত প্রধান শিক্ষকের খুব প্রশংসা করে অরিত্র। স্কুলের সকল শিক্ষকের কাছ থেকে সে সব রকমের সাহায্য পেয়েছে বলে জানায়। মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের সেরা অরিত্র তাই তার বাড়িতে লেগেই রয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টজনদের আনাগোনা। গতকালের পর থেকে আজও চলছে শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন জানানোর পালা।




বৃহস্পতিবার এই সোনার ছেলেকে সম্বর্ধনা ও শুভেচ্ছা জানাতে যান জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভুতনাথ মালিক। তাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি প্রয়োজনে যেকোনো দরকারে পাশে থাকার কথা বলেন। হঠাৎ করে অরিত্র আজ সেলিব্রেটি তাই বাড়িতে মন্ত্রী সহ নানা মানুষের আনাগোনায় মেমারির শ্রীদুর্গাপল্লী রীতিমত জমজমাট। সাংবাদিক-চিত্র সাংবাদিকদের ক্যামেরার ঝলকানি বেশ উপভোগ করছে সে। অরিত্র জানায় ভালো রেজাল্ট হবে সে জানতো কিন্তু রাজ্যে প্রথম হবে সে এতটা ভাবেনি। তার পরিবারের লোকেরা বিশেষ করে তার মা খুব খুশি হয়েছেন ছেলের এই সাফল্যে। ভবিষ্যতে সে রসায়ন বিষয়ে নিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী।


বর্ধমান উত্তর বিধানসভার বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিকও বৃহস্পতিবার জেলার গৌরব অরিত্র পালকে শুভেচ্ছা জানান। উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের নেতা মহঃ জাহাঙ্গীর সহ বিশিষ্ট ব‍্যক্তিবর্গ।





এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলা শাসকের প্রেরিত শংসাপত্র তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মেমারি ১ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিপুল কুমার মন্ডল, জয়েন্ট বিডিও অংশুমান ঘোষ সহ ব্লকের কর্মীবৃন্দ। এদিন মেমারি ব‍্যবসায়ী কল‍্যাণ সমিতির পক্ষ থেকেও অরিত্র-কে শুভেচ্ছা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন মেমারি ব‍্যবসায়ী কল‍্যাণ সমিতির সভাপতি কুমার কান্তি রায়, সহসভাপতি বিপ্লব কুমার পাল, সম্পাদক রামকৃষ্ণ হাজরা, সদস‍্য পার্থ সামন্ত, মনোজ মন্ডল প্রমুখ। রামকৃষ্ণ হাজরা জানান কৃতি এই ছাত্রের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে কোনো সহযোগিতা লাগলে তারা পাশে থাকবেন। এছাড়াও এদিন চিকিৎসক অভয় সামন্ত ব‍্যক্তিগতভাবে অরিত্র পাল-কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।




করোনা আবহে গোটা রাজ্যের মানুষ রীতিমত অতিমারি আতঙ্কে সন্ত্রস্ত। তবু কৃতি এই ছাত্রকে একঝলক দেখতে অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন অরিত্রদের বাড়ির কাছে। অতিমারির বিধি-নিষেধ না থাকলে মেমারি শহর অকাল উৎসবে মেতে উঠতো।



যাইহোক সংবাদ প্রভাতী'র পক্ষ থেকেও অভিনন্দনের পাশাপাশি অরিত্র'র জন্য রইলো শুভকামনা।