চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

করোনা : উপসর্গ ও উপসর্গহীন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ


করোনা : উপসর্গ ও উপসর্গহীন, 
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ


ডেস্ক রিপোর্ট : করোনা কে সঙ্গে নিয়েই নাকি মানুষকে বাঁচতে হবে। এমন কথাই বলছেন স্বাস্থ্যমহল। তাছাড়া করোনা উপসর্গ ও তার চিকিৎসা নিয়ে অনেকে অনেক কিছুই বলছেন। করোনা নিয়ে  কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ডাঃ রাজা ধর। ফর্টিস হাসপাতালের পালমোনারি বিভাগের ডিরেক্টর বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক জানালেন, উপসর্গহীন অথবা কম উপসর্গ হলে অর্থাৎ কম হাঁচি, কম কাশি, অল্প জ্বর এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে না গেলেও চলে। কিন্তু তাদের হাঁচি, কাশি বেশি হচ্ছে। বেশি হাঁপানি হচ্ছে। শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে এমন গুরুতর উপসর্গে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন।

যদি এমন হয় আপনি বাড়িতে রয়েছেন, চার-পাঁচ দিন পরেও জ্বর কমছে না এবং শ্বাস কষ্ট বাড়ছে তাহলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। যদি কারও বাড়িতে অক্সিজেন মাপার যন্ত্র থাকে এবং যদি দেখা যায় আপনার অক্সিজেনের পরিমাণ ৯৪ শতাংশের কম হয় তাহলে চিন্তার বিষয়। এই পরিস্থিতিতে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যাওয়া জরুরি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে ডাঃ ধর -এর এই বার্তাটি এখন বিশেষ ভাবে প্রচার করা হচ্ছে।



হোম আইসোলেশনে কোভিড চিকিৎসার খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করলেন ডাঃ যোগীরাজ রায়। বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক জানালেন, কম উপসর্গ, উপসর্গহীন ও কো-মরবিডি না থাকলে বাড়িতেই চিকিৎসা সম্ভব। ডাঃ রাজা ধর বলেছেন, আপনি যদি ভিড় এলাকায় পড়ে গিয়ে থাকেন, যেখানে কেউ করোনা সংক্রামিত রয়েছেন কিনা, তাহলে আবার দু' সপ্তাহ বাড়িতে থাকুন। করোনা আক্রান্ত কেউ সুস্থ হয়ে উঠলে, তার থেকে আতঙ্কের কারণ নেই। 



কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে কি রকম উন্নত করা হয়েছে ? 


এবিষয়ে ডাঃ দীপ্তেন্দ্র সরকার জানালেন, এমুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের পরিস্থিতি প্রায় পাশাপাশি চলছে। তবে তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ভালো হয়ে উঠছে। প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১৩১ জন করোনা আক্রান্ত বা সম্ভাবনা আছে। সেই প্রেক্ষাপটে আগামী তিন মাসে যদি ভাইরাসের প্রকোপ কমেও না রায় সে ক্ষেত্রে তিন মাসে ১৩ হাজার জন আক্রান্ত হতে পারে। তার মধ্যে কিছু মানুষ যদি সুস্থ হয়ে যান তাহলে বেডের প্রয়োজন হতে পারে ৫ থেকে ৬ হাজার। এই মুহূর্তে রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থা মিলিয়ে সরকার ১১ হাজার বেডের ব্যবস্থা করে রেখেছে। অর্থাৎ প্রয়োজনের দ্বিগুণ। এই সূত্র ধরেই বাঃ রাজা ধর জানালেন, রাজ্যের পুরো ডাক্তার সম্প্রদায় মানুষের পাশে আছেন। যদি কারও অসুবিধা হয় হেল্পলাইনের সহায়তা নিতে পারেন।


বিরল কিছু ক্ষেত্রেই কোভিড রোগীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হতে পারে। এবিষয়ে ডাঃ ধর জানালেন, আমাদের দেশে ৫ শতাংশ রোগী ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি হয়। অর্থাৎ কুড়ি জনের মধ্যে একজন। তার মধ্যে ২৫ শতাংশ রোগীর ভেন্টিলেশন দরকার হতে পারে। প্রত্যেক করোনা রোগীর ভেন্টিলেশন প্রয়োজন নেই। 


এপ্রসঙ্গে কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, রাজ্যে সুনিয়ন্ত্রিত চিকিৎসার জন্য যথাযত ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা আছে। এস এস কে এম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, পাঁচ হাজার রোগীর ৫ শতাংশের ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হলে ২৫০ টি ভেন্টিলেশন দরকার সেখানে ৪০০ ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা আছে। ডাঃ ধর জানালেন, ভেন্টিলেশন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই


সব শেষে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, অদূর ভবিষ্যতে আমাদের মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, আমাদের নিয়মিত অভ্যাস হিসাবে মেনে চলতে হবে। বাড়িতে থাকলে মাস্ক পরার দরকার নেই। কিন্তু বাইরে বেরোলে এবং কাজের জায়গায় অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। গত তিন মাসে মাস্ক পরার যে অভ্যাস আমরা রপ্ত করেছি এমনটাই আগামী কয়েক মাস হয়তোবা কয়েক বছর পরতে হতে পারে। মাস্ক পরা জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে ফেলতে হবে। আর সামাজিক দূরত্ব বিধি অবশ্যই মেনে চলা উচিত নিজে ভালোর থাকার জন্য এবং সমাজের ভালোর জন্য।


আর ডাঃ রাজা ধর সকলকে আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, যদি কোনো ভিড় এলাকায় গিয়ে থাকেন যেখানে জানা সম্ভব নয় কেউ করোনা সংক্রামিত রয়েছেন কিনা এমন অবস্থা হলে নিজেকে দু'সপ্তাহের জন্য কোয়ারান্টাইনে রাখুন। 


ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ভিড় এলাকা এড়িয়ে চলার। একই সঙ্গে মাস্ক ব্যবহার স্যানিটাইজার ব্যবহার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আপনাকেই অভ্যাস করতে হবে অন্যকেও করাতে হবে এটা শুধু চিকিৎসক বা সরকারের কাজ নয়। 


পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ উল্লেখ করে বলেছে এগুলো মতামত ভাবে মেনে চললে করোনা হারবে বাংলা জিতবে।