চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

বিধায়কের হাত ধরে ফের আউশগ্রামে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে



বিধায়কের হাত ধরে ফের আউশগ্রামে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে

নিজস্ব সংবাদদাতা, আউশগ্রাম : তিন মাসে পাঁচ বার ভাঙ্গন! ফের আবার বিজেপিতে ভাঙ্গন আউশগ্রামে। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের অজয় নদের তীরবর্তী বীরভূম বর্ধমানের সীমান্ত লাগোয়া আউশগ্রামের রামনগরগ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়োল, পল্লিশ্রী গ্রামের  বিজেপির ৩৫ জন নানা স্তরের আঞ্চলিক নেতা, কর্মীরা এদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছে বলে জানায় তৃণমূল নেতৃত্ব।

বৃহস্পতিবার সকালে পল্লিশ্রী গ্রামের  তৃণমূল কার্যালয়ে চার শতাধিক তৃণমূল নেতা, কর্মীর উপস্থিতিতে বিজেপি ছেড়ে এদিন তৃণমূলে যোগদান করে গোসাই মুর্মু, সুভাষ মুর্মু, কেলেন মাড্ডি, বুধোন কিস্কু, শিবু কিস্কু, খান্দা মুর্মু, মঙ্গল সরেন, গোপা সরেণসহ আরও অনেকে কুড়ুল গ্রাম থেকে প্রায় ১৬ পরিবার থেকে  একজন করে ১৬ জন এবং পল্লীশ্রী গ্রাম থেকে গুরুদাসী সরকার, শেফালি সরকার, সুজিৎ বিশ্বাস সহ ১৯ টি পরিবারের ১৯ জন  এদিন তৃণমূলে যোগদান করেন। এই যোগদান অনুষ্ঠানে ছিলেন আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার,  তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক কার্যকরী সভাপতি সেখ আব্দুল লালন, ব্লক  সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রামকৃষ্ণ ঘোষ, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দেবদাস সরকার, অর্ঘ্য বিশ্বাস, উজ্জ্বল মণ্ডল, রামনগরের প্রধান সুকুমার আঁকুড়ে, উপ প্রধান সেখ জিয়াউল হকরা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রামনগর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা প্রবীণ নেতা আসগর শেখ। তিনি যোগদানের এই অনুষ্ঠানটিতে পৌরোহিত্য করতে গিয়ে বলেন,"এই করোনা মহামারির প্রকোপ থেকে বাঁচতে এবং আমাদের কাজকর্ম বজায় রাখতে আমরা দূরত্ব বজায় রেখে চলবো। এবং এই সভাতেও সোশ্যাল ডিস্টেন্স মেনে, সবাই মাক্স পড়ে বসবো।" পরে তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন,"আজ যে সব ভাইরা, তরুণ তুর্কিরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের শরিক হতে আসছেন তৃণমূলে, আগামীতে  তারাই দল চালাবেন। তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তিনি আগামীতে দলকে আরও শক্তিশালী এবং আগামী বিধানসভা ভোটের জন্য মূলত প্রস্তুত থাকার ইঙ্গিত দেন।"



যদিও আউশগ্রাম ২ নং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি, বলিষ্ঠ সংগঠক রামকৃষ্ণ ঘোষ বলেন,"আগামীতে তারুণ্যের উপর ভর করেই চলবে তৃণমূল। সেই তরুণরা এখন আসছেন, বিভিন্ন দল থেকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের শরিক হতে তাদের অংশগ্রহণ জরুরি। আগামীতে এই সমবেত তারুণ্যের তৃণমূলই বাংলাকে পথ দেখাবে। সেই দিনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে আমাদের। দিন যতো এগিয়ে আসছে, ততো মানুষের ভিড় বাড়ছে তৃণমূলে। আমি একজন তৃণমূলের সৈনিক হয়ে, সেই ভিড়ের অংশীদার হতে চাই। আর সেই সমবেত তৃণমূলের অংশীদাররাই চৌকিদারদের তাড়াবে। সেই কাজ শুরু হয়ে গেছে। আবার ২০২১ এ নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল। "



যদিও এই বক্তব্যের পরেই চনমনিয়ে ওঠে গোটা সভা। হাত তালিতে ভরে ওঠে। তখনই আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার মঞ্চে বলতে ওঠেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন,"আজকে যারা আমাদের হাত ধরে, তৃণমূল কংগ্রেসে এলেন, আগামীতে তাদের হাত ধরেই আবার বাংলা জুড়ে জোড়া ফুল ফুটবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে আমাদের আগামীতে। আরও বেশি বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। প্রয়োজনে আমাকে ডাকবেন, আমি সর্বক্ষণ আছি আপনাদের ঘরের ছেলে হয়ে। এখনও যারা আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন, তাদের কাছে পৌঁছাতে হবে আমাদের। গ্রামে গ্রামে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারের সাফল্যের খতিয়ান জানাতে টিম গড়ছি আমরা। যুবদের সেই কাজে লাগাতে। প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিদের দলমত নির্বিশেষে উপকার করতে হবে। এটাই তৃণমূলের আদর্শ। কোনো রাগ, অভিমান নয়। শিহরে এসে দাঁড়িয়েছে একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি। সমবেত লড়াইয়ে সেই শক্তিকে ঠেকাতে হবে আমাদের। "





তৃণমূল নেতা সেখ আব্দুল লালন বলেন,"আমাদের সমবেতভাবে লড়াই করতে হবে। সেই লড়াই শুরু হোক রামনগরের পল্লিশ্রীর মাটি থেকেই।"


যদিও অনুষ্ঠানের শেষে আবারও বক্তব্য রাখতে গিয়ে, রামনগর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি আসগর শেখ বলেন,"আজ যারা বিজেপি ছেড়ে, তৃণমূলে যোগদান করলেন, আগামীতে তারা দলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করবেন। আরও বিভিন্ন গ্রাম থেকে আরও কিছু বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলে আসতে চাইছেন, আগামীতে তাদের আবার দলে যোগদান করানো হবে।"


এই যোগদানের বিষয়ে ৫২ জেড পি-র বিজেপির মণ্ডল সভাপতি নিতাই বিশ্বাস বলেন,"ওরা আমার দলের কেউ নয়। আগামীতে দল দেখিয়ে দেবে, কোথায় আছে তৃণমূল। বিজেপিই আবার ক্ষমতায় আসবে।"