নিত্য অভাবকে সঙ্গী করেও উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করলো জামালপুরের সংখ্যালঘু পরিবারের কিশোরী
অতনু হাজরা, জামালপুর : মেধার কাছে হার মানলো অভাব। পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুরের সংখ্যালঘু পরিবারের এক কিশোরীর কাহিনী। অভাব বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা মেধার কাছে তা বার বার প্রমাণিত। সেটা আবারও প্রমান করে দেখালো জামালপুরের শাহসেনপুরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী খাদিজা খাতুন। চার বছর আগেই বাবাকে হারায়। অসহায় মা, দামোদরের ধারে খাস জায়গায় ছিটেবেড়ার ঘর, জমি নেই একছটাকও।স্বভাবতই অথৈ সাগরে পড়ে খাদিজা ও তার মা। মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় পরে যান মা। মেয়ে তখন ক্লাস নাইনে পড়ে। কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না মা ও মেয়ে। তখনই এগিয়ে আসে পাড়ার কয়েকজন। স্থানীয় শাহসেনপুর গ্রামের বিদ্যালয় থেকে ৫৩৩ নাম্বার পেয়ে মাধ্যমিক পাস করে সাফল্যের সঙ্গে। সেই সময় তাকে বিনা পয়সায় টিউশন পড়িয়ে বইপত্র দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন গৃহ শিক্ষক নূর মহম্মদ, সামিউল ইসলাম ও স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক অমিত ঘোষ। ভাঙা ঘরে সাফল্যের সিঁড়ি শুরু হয়। সকলের চেষ্টায় উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে পারে পাণ্ডুয়া আল আমিন মিশনে। সেখানে সে বিনা খরচে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করার সুযোগ পায়। মিশনের পরিবেশ শিক্ষকদের কোচিং তাকে তার কাঙ্খিত ফল করতে সাহায্য করে। অবশেষে ৯১ শতাংশের বেশি নাম্বার পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে খাদিজা। একটা প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে খড়ের চাল ছিটেবেড়ার ঘরে থেকে এই রেজাল্টে গর্বিত হয়েছে তার স্কুল পাণ্ডুয়া আল আমিন মিশন ও তার গ্রামের মানুষজনও। খাদিজার স্বপ্ন অনেক বড়। সে আগামী দিনে ডাক্তার হতে চায়।