চৈতন্য মহাপ্রভু'র নামে নব নির্মিত তোরণ উদ্বোধন কাটোয়ার দাঁইহাটে

বলিউডের বিখ্যাত ড্যান্স কোরিওগ্রাফার সরোজ খান - এর জীবনাবসান, শোকস্তব্ধ বিনোদন দুনিয়া


বলিউডের বিখ্যাত ড্যান্স কোরিওগ্রাফার সরোজ খান - এর জীবনাবসান, শোকস্তব্ধ বিনোদন দুনিয়া

অভিরূপ আচার্য : বলিউডের খ্যাতনামা ড্যান্স কোরিওগ্রাফার  সরোজ খান প্রয়াত হয়েছেন। সূত্রের খবর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বান্দ্রার গুরু নানক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ২টো নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। যেহেতু শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তাই চটজলদি তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। সরোজ খানের আসল নাম নির্মলা নাগপাল। তবে তিনি সরোজ খান পরিচয়েই বিখ্যাত। বলিউড দুনিয়া সহ দেশে-বিদেশে তাঁর অসংখ্য গুণগ্রাহী রয়েছে। শুক্রবার সকালে বিশিষ্ট এই নৃত্য গুরুর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই গোটা বিনোদন জগতে নেমে আসে শোকের ছায়া।

বলিউডে একেরপর এক নক্ষত্র পতন হয়ে চলেছে। ইরফান খান, ঋষি কপূর, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের পর এবার চলে গেলেন কোরিওগ্রাফার সরোজ খান।

 মাত্র তিন বছর বয়সে শিশু শিল্পী হিসাবে তার আত্মপ্রকাশ । 'নজরানা' ছায়াছবিতে শিশু শিল্পী শ্যামা চরিত্র দিয়ে পথচলা শুরু।  ১৯৫০ এর দশকের শেষদিকে তিনি ব্যাকগ্রাউন্ড নর্তকী হিসাবে সুযোগ পান। চলচ্চিত্র কোরিগ্রাফার  বি.সোহানলালের অধীনে কাজ করার সময় তিনি নাচ শিখেছিলেন। পরে, তিনি একজন সহকারী কোরিগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীকালে, ১৯৭৪ সালে   "গীতা মেরা নাম" চলচ্চিত্রে একক কোরিওগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে, তাকে  পরিচিতি পেতে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিলো।  ১৯৮৭ সালে যখন তিনি শ্রীদেবীর সঙ্গে  কাজ শুরু করেন, 'মিঃ ইন্ডিয়া', 'হাওয়া হাওয়াই' তার পর থেকেই আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্রমশঃ সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকেন। পরে, নাগিনা (১৯৮৬) এবং চাঁদনি (১৯৮৯), এবং পরবর্তীসময়ে মাধুরী দীক্ষিতের সাথে, তেজাব (১৯৮৮) ছবিতে 'এক দো তিন', থানদার (১৯৯০) ছবিতে 'তাম্মা তামমা লোগে' এবং 'ধাক ধাক কর্নে লাগা', এছাড়া বেটা (১৯৯২) খুবই প্রশংশিত হয়। তিনি সবচেয়ে সফল বলিউড কোরিগ্রাফার হয়ে ওঠেন।

২০০৫ সালে, সরোজ, 'নাচ বালিয়ে', একটি রিয়ালিটি নাচের শোতে বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, যা স্টার ওয়ান চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছিল। তিনি শো এর দ্বিতীয় বছরেও হাজির ছিলেন। তারপর তিনি কয়েক বছর ধরে কয়েকটি রিয়ালিটি শো করেন, যেমন, 'উস্তাদো কা উস্তাদ' যেখানে তিনি বিচারক ছিলেন, যা সোনি এন্টারটেনমেন্ট টেলিভিশন (ভারত) -এ প্রচারিত হয়। ২০০৮ সালে 'নাচলে ভে উইথ সরোজ খান',  যা এনডি টিভি ইমাজিনে প্রচারিত হয়েছিল। আসলে এটি ছিল একটি ড্যান্স ক্লাস শো।  ২০০৮ সালে  জাভেদ জাফরি, নাভেদ জাফরি ​​এবং রবি বেহলের সাথে একজন বিচারক হিসেবে  সোনি চ্যানেলে 'বুগি উগি' (টিভি সিরিজ) শোতে উপস্থিত হন।  ২০০৯ সালে শুরু হওয়া 'ঝালাক দিখলা যা' রিয়ালিটি শোয়ের তৃতীয় পর্বে  বৈভিভি মার্চেন্ট এবং অভিনেত্রী জুহি চাওয়লা কে সঙ্গে নিয়ে বিচারক ছিলেন এবং যা সোনি এন্টারটেনমেন্ট টেলিভিশন (ভারত) -এ প্রচারিত হয়েছিল।

এরপর ২০১৪ সালে 'গুলাব গ্যাং' চলচ্চিত্রে, সরোজ খান আবার মাধুরি দীক্ষিতের সাথে কাজ করেন। চার দশকের বেশি সময়  বলিউড জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন৷ প্রায় দু'হাজারের বেশি গানের সঙ্গে কোরিওগ্রাফি করেছেন তিনি৷ অসংখ্য সুদৃশ্য নাচ ভারতবাসী তথা বিশ্ব বিনোদন দুনিয়াকে উপহার দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে বলিউড তথা ভারতের বিনোদন দুনিয়া হারালো এক অসামান্য নৃত্য গুরুকে।