৭ দিন ব্যাপি রক্ত দেবেন মহিলারা, জামালপুরে
রক্তদান শিবির আয়োজনে দৃষ্টান্ত স্থাপন
জগন্নাথ ভৌমিক : জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস ৭ দিন ব্যাপি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির আয়োজনে নজির সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিনই রক্ত দেবেন একমাত্র মহিলারাই। এধরনের রক্তদান শিবির পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই সারা ভারতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। আর এই কৃতিত্বের মূল দাবীদার হলেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান এবং পূর্ত ও পরিবহণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিক। তবে তাদের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন চকদিঘী অঞ্চলের প্রধান গৌর চন্দ্র মন্ডল, সমাজসেবী বাঃ প্রতাপ রক্ষিত, জামালপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাহাবুদ্দিন মন্ডল, স্থানীয় নেতা তাবারক আলি সহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান, উপ-প্রধান, মহিলা স্বয়ম্বর গোষ্ঠীর দলনেত্রী সহ অন্যান্যরা।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদানের মাধ্যমে সাতদিন ব্যাপি আয়োজিত রক্তদান শিবিরের সূচনা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ-সভাপতি মেহেবুব রহমান, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিক সহ এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
শুক্রবার রক্ত দান শিবিরের শুরুতেই মে দু'জন মহিলা স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন তাদের হাতে বৃক্ষশিশু তুলে দিয়ে সম্মানিত করেন পূর্ব বর্ধমান জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী শিখা দত্ত সেনগুপ্ত। তিনি এই উদ্যোগের ভূয়ষী প্রশংসা করে বলেন ইতিপূর্বে প্রতিটি রক্তদান শিবিরে দেখা যেত মহিলাদের দু'একজন রক্ত দেন। বেশীরভাগ পুরুষেরাই রক্তদান করেন। কিন্তু এবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে মেয়েরা। আসলে এই সব কিছুর অনুপ্রেরণার মূলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মে সমস্ত মহিলারা স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে এগিয়ে এসেছেন শ্রীমতি সেনগুপ্ত তাদের বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানান।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, করোনা সংকটে রক্তের অভাব রয়েছে হাসপাতালে। তাই রক্তদান শিবির সময়োপযোগী উদ্যোগ। কিন্তু জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিক মে ভাবে গোষ্ঠীর মেয়েদের 'রক্তদান জীবন দান' এই মন্ত্রে উজ্জীবিত করতে পেরেছেন সত্যি তাদের তুলনা হয় না। আর গোষ্ঠীর মেয়েদের রক্তদানে এগিয়ে আসা আরও বহু মেয়েদের অনুপ্রাণিত করবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-ও এমনটাই চাইছেন।
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিক সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত রক্তদান শিবির প্রসঙ্গে বলেন, তাদের আহ্বানে গোষ্ঠীর মহিলারা আশাতীত ভাবে সাড়া দিয়েছেন। তারা দু'জনেই গোষ্ঠীর দলনেত্রী দের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপ-প্রধান সহ পঞ্চায়েত সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তাঁরা বলেন, করোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে লকডাউন চলছে। তার জেরে তীব্র রক্ত সংকট তৈরি হয়েছে। সেই সংকটের কিছুটাও যদি নিরসন করা যায় তার জন্য ৭ দিন ব্যাপি স্বেচ্ছায় রক্ত দান শিবিরের আয়োজন। এদিনের মতো প্রতিদিনই ৫০ জন রক্ত দেবেন। সাত দিনে ৩৫০ বোতল রক্ত পাওয়া যাবে। রক্ত সংগ্রহ করছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। মেহেমুদ খান বলেন, জামালপুরে গোষ্ঠীর মহিলাদের অনন্ত ২০০০ জন স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে প্রস্তত। আমরা তাদের কুর্ণিশ জানাই।