Scrooling

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন বঙ্গতনয়া, ৮২তম ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অরিজন্তি বিভাগে সেরা পরিচালকের খেতাব জয় করলেন চিত্রপরিচালক অনুপর্ণা রায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর শুভেচ্ছা। # রজতজয়ন্তী বর্ষে সংবাদ প্রভাতী পত্রিকা। সকল পাঠক-পাঠিকা বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি শুভেচ্ছা # বর্ধমানে জাতীয় সড়কে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ১১ পুণ্যার্থীর মৃত্যু। মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর # UGC NET 2025-এ অল ইন্ডিয়া র‍্যাঙ্ক-১ করেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের পিএইচডি স্কলার নিলুফা ইয়াসমিন # উচ্চ মাধ্যমিকের পর নিটেও রাজ্যে প্রথম বর্ধমানের রূপায়ণ পাল। # ষষ্ঠ সিন্ধু জিব্রাল্টার জয় করে ইতিহাসের পাতায় সায়নী # 'দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী

জীবনের তাল

জীবনের তাল

✳ কিশোর মাকড়

 ➡ করোনা সংকটে মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে অনেক কিছুই। তারই টুকরো এক প্রতিচ্ছবি এই প্রতিবেদনে। বীরভূম থেকে বর্ধমানের দুরত্ব ৭০ কিমি। অথচ লকডাউনে এক লাফে দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই।  যার জেরেই খুশির ঈদ ম্লান হয়ে গেল আসরাফুল হকের। বীরভূমের আসরাফুল প্রায় বাইশ বছর আগে জীবন-জীবিকার তাগিদে বর্ধমানে আসা। গতবার ঈদে বীরভূমে ছেলে বৌমাদের নতুন জামাকাপড় নিয়ে জমিয়ে উৎসবে মেতেছিলেন। বিনিময় হয়েছিল পরিচিত মানুষদের সঙ্গে কুশলাদি। এবার লকডাউন প্রাচীর তুলে দিয়েছে তিল তিল করে গড়ে তোলা সংসার এবং মা মাটির সঙ্গে।  সব যেন তাল কেটে গেছে টোটো চালক আশরাফুল হকের জীবনে। 
     অবশ্য করোনা সংকটের অনেক আগেই তাল কেটেছে আসরাফুলের জীবনে। আজ থেকে ২২ বছর আগেকার কথা। স্ত্রী বিয়োগের পর  দুই ছেলেকে নিয়ে অকুল পাথারে হক। সারাদিন ফেরি করে দুই
‌ সন্তানকে বড়ো করে। টানাটানির সংসারে পেট ভরাতে চলে আসে বর্ধমানে। দিন গুজরানের জন্য একটি রিকশাই হয় একমাত্র ভরসা। তখন টোটোর চল না থাকায় ভালো রোজকার নিয়ে হপ্তা অন্তে বাড়ি যাওয়া। দুই ছেলের বিয়ে দিয়ে এখন ঝাড়া হাত পা। এখন স্থায়ি ঠিকানা বর্ধমানের  নার্স কোয়ার্টার মোড়ে চার ফুট বাই তিন ফুট একটি কাঠের গুমটি।‌ রিকশার দিন শেষ হওয়ায় টোটো নিয়েছে। লকডাউন ঘোষণার পর করোনার ভয়ে যখন সবাই বাড়িতে। পেটের টানে  ভোরের আলো না ফুটতে টোটো নিয়ে এমোড় থেকে ঐমোড়।  কোনো দিন  ত্রিশ টাকা তো কোনো দিনের রোজগার শূন্য। লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় একটা লাভ হয়েছে মাথা গোঁজার ঠিকানা।  গুমটি বন্ধ থাকার কারণে থাকতে দিয়েছেন। দিনের শেষে গুমটির ভিতর রান্না, খাওয়া, শোয়া। জীবন আগে না জীবিকা আগে তাঁর কাছে কিছু যায় আসে না। না আছে থাকার ঠিকানা, না আছে খাওয়ার ভরসা। ছেলে, বৌমা ঈদে কীভাবে কাটাচ্ছে, কেমন আছে তাও যোগাযোগ হয় নি দুমাস ধরে। দুমাস রসদে টান পড়ায় মোবাইল বিক্রি  করে দিয়েছে। আশায় আছে উঠবে লকডাউন, ঘুরবে বাজার।  সামনের বক্রীদে নতুন জামাকাপড় নিয়ে আবার ফিরবে সংসারে। পা দেবে দেশের মাটিতে। ইলামবাজারে  চায়ের দোকানে গেনাই, নজরুল, পরেশ আসবে। জমিয়ে চলবে আড্ডা। ভুলে যাবো আজকের চোখের জলে বিদায় দেওয়া খুশির ঈদ।